Batagur Baska : বিরল প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণ, স্যাটালাইট ট্যাগিংয়ের জন্য জিপিএস চিপ লাগিয়ে ছাড়া হল নদীতে
Threatened Turtle : সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ বেশ কয়েক বছর ধরে প্রজনন ঘটিয়ে বিলুপ্তপ্রায় এক কচ্ছপ প্রজাতির সংরক্ষণ করছে। এই প্রজাতির নাম বাটাগুর বাসকা।
সুন্দরবন : সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ বেশ কয়েক বছর ধরে প্রজনন ঘটিয়ে বিলুপ্তপ্রায় এক কচ্ছপ প্রজাতির সংরক্ষণ করছে। কচ্ছপের এই প্রজাতি হল খুব বিরল। এই প্রজাতির নাম বাটাগুর বাসকা। গতকাল তাদের বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন নদীতে ছাড়া হল। নদীতে ছাড়ার আগে তাদের পিঠে বাধা হল জিপিএস চিপ। শিডিউল ওয়ান নামে চিহ্নিত দুর্লভ বাটাগুর বাসকাকে স্যাটালাইট ট্যাগিং করতে ছাড়া হল। এর মাধ্য়মে এই প্রজাতির কচ্ছপের লক্ষ্য, গতিবিধি এবং পরিবেশ নজরে রাখা হবে। এর ফলে পাওয়া যাবে তাদের চরিত্র সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ এর ফিল্ড ডিরেক্টর তাপস দাস জানান, বর্তমানে সুন্দরবনে বাটাগুর বাস্কে সংরক্ষণ প্রকল্পে মোট ৩৭৯ টি কচ্ছপ রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ১০ টি কচ্ছপকে ছাড়া হল চামটা ক্যাম্প থেকে। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এসটিআর (Sundarban Tiger Reserve) এর ফিল্ড ডিরেক্টর তাপস দাস, এসবিআর (Sundarban Biosphere Reserve) এর জয়েন্ট ডিরেক্টর অজয় কুমার দাস, এবং টিএসএ টিমের অধিকর্তা ডঃ শৈলেন্দ্র সিং।
বন দফতর সূত্রে খবর, এক সময় সুন্দরবন থেকে শুরু করে মায়ানমার, থাইল্যান্ড, হয়ে মালয়েশিয়া উপকূলে এই দুর্লভ প্রজাতির কচ্ছপ মিলত। কিন্তু বর্তমানে এরা অস্তিত্ব সংকটে। হারিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর কোল থেকে। তাই সজনেখালিতে একটি পুকুর কেটে সেখানে কয়েক বছর ধরে এই প্রজাতির কচ্ছপের সংরক্ষণ এবং প্রজননের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে তাদের গতিপ্রকৃতি জানার জন্য বাটাগুর বাসকা প্রজাতির ১০ টি কচ্ছপকে নদী-খাঁড়িতে ছাড়া হল। ১০ টি কচ্ছপের মধ্যে ৭ টি মহিলা ও ৩ টি পুরুষ কচ্ছপ। সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের সহযোগী সংস্থা টিএসএ গোটা প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান করছে।
বাটাগুর বাসকা কী?
নর্দার্ন রিভার টেরাপিন (বাটাগুর বাসকা) বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন স্বাদু জলের কচ্ছপ হিসেবে বিবেচিত। দক্ষিণ-পূর্ব ভারত এবং দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশে বিস্তৃত সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ জলাভূমি এবং জোয়ার-ভাঁটা নদীতে হয়ত হাতে গোনা কয়েকটা প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে। ভারতে, বি. বাসকা একসময় (বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে) উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ জলাভূমি, নদী এবং ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মোহনায় পাওয়া যেত। যদিও ওড়িশার উপকূলে এই প্রজাতির কচ্ছপ আর নেই বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। ২০০৮ সালে, একটি টার্টল সারভাইভাল অ্যালায়েন্স ইন্ডিয়া প্রোগ্রাম/সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ (এসটিআর) দলের যৌথ অনুসন্ধানে সজনেখালি ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার থেকে একটি পুকুরে বসবাসকারী আটটি পুরুষ, তিনজন মহিলা এবং একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক বি বাসকার খোঁজ পাওয়া যায়। খুব কম বন্য প্রাণী বেঁচে থাকার কারণে, এর বন্য বিলুপ্তি রোধ করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন ছিল। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝতে পেরে পশ্চিমবঙ্গ বন বিভাগের STR এবং TSA ইন্ডিয়া তৎপর হয়। তাদের উদ্যোগেই এই সংরক্ষণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। সজনেখালির ১২ টি প্রাপ্তবয়স্ক কচ্ছপকে দিয়ে প্রজনন শুরু হয়। আজ এই সফল প্রজনন কর্মসূচিতে ১২ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং প্রায় ৩৭০ টি অপ্রাপ্তবয়স্ক বি বাসকা রয়েছে।
আরও পড়ুন : Elephant: সাত সকালে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে পিল পিল করে হাজির হাতির পাল! ‘অতিথি’ দেখেই কপালে হাত এলাকাবাসীর