ভাঙড়: হবে হবে করেও হয়নি বাম-আইএসএফের জোট। জেলে আরাবুল, শওকত নিয়েও চাপানউতোর তৃণমূলের তৃণমূল স্তরে। এই পরিস্থিতিতে যাদবপুর লোকসভা নির্বাচনে বাম-আইএসএফ জোট হলে ভাঙড় জোট প্রার্থীকে অনেকটাই এগিয়ে দিতে পারতো বলে মনে করেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জোট হল না। এদিকে জোট না হওয়া নিয়ে একে অপরকে বিভিন্ন সময়ে দোষ দিয়েছে আইএসএফ এবং সিপিএম। সেই দোষারোপের রেশ পৌঁছেছে একেবারে তৃণমূল স্তরের কর্মীদের মধ্যেও। তারই প্রতিফলন বুধবার দেখা গেল সৃজন ভট্টাচার্যের প্রচার এর সময় ওই বৃদ্ধের কথায়। কেবল ওই বৃদ্ধ নন, আইএসএফের কর্মীদের একটা বড় অংশই মনে করছেন বামেদের জন্যই জোট হয়নি। তারা স্বীকার করছেন জোট হলে লড়াইটা অনেক সহজ হত। কিন্তু তারপরও একলা চলো পদ্ধতিতে তারা বিশ্বাস করছেন।
অন্যদিকে বামেরাও মনে করছেন জোট হলে লড়াইটা অনেক ভালো হতো। সেক্ষেত্রে ভাঙড়ের বুক থেকে বড় মার্জিনে লিড পেতে পারতেন সৃজন ভট্টাচার্য, এমনটাই বাম নেতৃত্বের একটা অংশের দাবি। কিন্তু, জোট না হওয়ার ফলে লিড পাওয়া তো দূরের থাক তৃণমূল অল্প হলেও লিড পাবে পাবে মনে করছেন অনেকে। কিন্তু, তৃণমূল জয়ের ব্যপারে তৃণমূল কতটা আশাবাদী?
কেউ কেউ বলছেন, সামগ্রিক জয় নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যেও সংশয় রয়েছে। তার পিছনে রয়েছে ভাঙড়ের বুকে তৃণমূলের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় বিপরীতমুখী হওয়ায়। যদিও শওকত মোল্লার দাবি ভাঙড়ের তৃণমূল এককাট্টা আছে, বড় লিড তাঁরাই দেবেন। কিন্তু, জেলবন্দি আরাবুল। কেউ কেউ বলছেন তাঁর অনুগামীরা একপ্রকার ‘বাধ্য’ হয়েই এখন শকওতের শরণাপন্ন। তাই চাপ আছে তৃণমূলের অন্দরেও। এদিকে ভারতীয় জনতা পার্টিরও একটা পকেট ভোট আছে ভাঙড়ের বুকে। গত বিধানসভায় আইএসএফ প্রার্থী থাকায় বিরোধী ভোটের অমুসলিম ভোটের একটা অংশ বিজেপির ভোটের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। এখন বামেদের আশা এই নির্বাচনে বিজেপি ভোটের একটা অংশ তাঁরা পাবেন। কারণ মানুষ বুঝতে পারছেন বিজেপিকে এই কেন্দ্রে ভোট দেওয়া ভোট নষ্ট করার সমান।
এই সবকিছুর পরেও একটা বিষয় তৃণমূলও কোথাও স্বীকার করছে মিমি চক্রবর্তীকে যেভাবে ভাঙড়ের বুক থেকে এগিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল ২০১৯ সালে, সেটা আর এইবারে সম্ভব নয়। অন্যদিকে বাম-আইএসএফ ও ভাঙড়ে থেকে যতটা মার্জিন পাবে বলে আশা করেছিল জোট না হওয়ায় সেই আশা কোথাও একটা নিরাশার দিকেই এগোচ্ছে। এখন দেখার ভোটের ফল কী বলে।