Jayprakash Majumdar: ‘ডিএ আন্দোলনকারীরা গণশত্রু!’, সিপিএম-এর ইন্ধন দেখছেন জয়প্রকাশ

ডিএ আন্দোলনকারীর পাশাপাশি আইএসএফ নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন রাজ্য তৃণমূলের সহ সভাপতি।

Jayprakash Majumdar: 'ডিএ আন্দোলনকারীরা গণশত্রু!', সিপিএম-এর ইন্ধন দেখছেন জয়প্রকাশ
টিএমসি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 16, 2023 | 3:27 PM

বসিরহাট: বকেয়া ডিএ (DA)-র দাবিতে সরকারি কর্মীদের আন্দোলনে গত কয়েকদিন ধরেই রাজ্য-রাজনীতি তোলপাড়। এবার এই আন্দোলনকারীদের সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তথা মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদার (Jay Prakash Majumdar)। বৃহস্পতিবার বসিরহাটে দলীয় কর্মীসভা থেকে ডিএ আন্দোলনকারীদের ‘গণশত্রু’ তকমা দিলেন তিনি। একইসঙ্গে আইএসএফ (ISF) সম্পর্কেও বিতর্কিত মন্তব্য করলেন জয়প্রকাশ।

জানা গিয়েছে, এদিন বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের উদ্যোগে বসিরহাটে রবীন্দ্রভবনে এক কর্মিসভা ছিল। সেই সভা থেকেই ডিএ আন্দোলনকারী সম্পর্কে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “মূল্যবৃদ্ধি হলে অর্থ চাইতে পারে। মূল্যবৃদ্ধির জেরে কেবলমাত্র সরকারি কর্মীরা নয়, শ্রমজীবী খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষও ভুক্তভোগী হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা চাকরিতে ঢোকার সময় শপথ করেন মানুষের পরিষেবা দেবেন। আর সেই পরিষেবা বন্ধ করে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের সব পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করে অতিরিক্ত অর্থের লোভে রাস্তায় নেমেছে।” তবে সিপিএমের প্ররোচনাতেই এঁরা রাস্তায় নেমেছেন বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে সরাসরি নাম করে আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকেও একহাত নিয়েছেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, “সিপিএমের প্ররোচনায় বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ডিএ মামলা করিয়েছেন। সেই মামলা কোর্টের বিচারাধীন। তাদেরকে আবার রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছেন অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার জন্য। এরা যে অমানবিক কাজ করছে তা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে। আন্দোলনকারীরা মানুষের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করে তারা অবরোধ ও বিক্ষোভ এমনকি বনধের পথে হেটেছে। পাবলিক সার্ভেন্ট বলে পরিচিত তাঁরা বনধের দিন হয়ে যাচ্ছেন পাবলিক-এনিমি, গণশত্রু। যে মানুষের কাজ আমরা করব না। মূল্যবৃদ্ধি হয়ে থাকলে যে সরকারি কর্মচারী নয়, তিনিও তো ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।” তবে এই আন্দোলন করে কিছু হবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি।

ডিএ আন্দোলনকারীর পাশাপাশি আইএসএফ নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন রাজ্য তৃণমূলের সহ সভাপতি। ধর্মের নাম নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে এবং আইএসএফ-কে পুষছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “কেউটে হচ্ছে আইএসএফ। আর দুধ-কলা দিয়ে কেউটে সাপ পুষছে বিজেপি। এখন বিজেপির টাকায় চলছে আইএসএফ। কিছু চক্রান্তকারীরা ধর্মের নামে বিভাজন তৈরি করে রাজ্যে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা চালাচ্ছে।” তবে সংখ্যালঘুরা প্রকৃত ঘটনা জানে এবং তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছত্রচ্ছায়ায় রয়েছে বলেও দাবি জয়প্রকাশ মজুমদারের। এপ্রসঙ্গে বিজেপি শাসিত রাজ্যের উদাহরণও তুলে ধরেন জয়প্রকাশ। কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের বাইরে উত্তর প্রদেশে যান বুঝতে পারবেন। বুলডোজার চলছে সেখানে বিচার পাচ্ছেন না মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে সংখ্যালঘুদের খাদ্য বাসস্থান নিরাপত্তা সুরক্ষিত করছে, জনতার পাশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আছেন।”

এদিন বসিরহাটে তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের কর্মীসভায় জয়প্রকাশ মজুমদার ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্য তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান শেখ হাজি নুরুল ইসলাম, বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহান, বসিরহাট তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিনের এই কর্মীসভার মধ্যে দিয়ে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোট যাতে বিভক্ত না হয় সেই বার্তাও মঞ্চ থেকে দেন নেতা-নেত্রীরা।