TMC MLA: চট পেতে বসা ছোট বিক্রেতার কাছেও টাকা তোলা হয়! বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি তৃণমূল বিধায়কের
Bhatar MLA: "আপনারা জানেন না কাকে লাগানো আছে পিছনে। সমস্তটাই দেখা হচ্ছে। নজরদারি রয়েছে। আমি নিজেও জানি না কে আমাকে ফলো করছে। তাই ভেবেচিন্তে পা ফেলুন। স্বচ্ছ ভাবে পার্টি করুন।''
পূর্ব বর্ধমান: তোলাবাজদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি তথা ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) মানগোবিন্দ অধিকারী। যদিও হুঁশিয়ারি দিয়েও ‘কাটমানি’ নিয়ে আরেক বেফাঁস মন্তব্য করে বসলেন তিনি। জানালেন, টাকা তুললে তা যেন সৎ কাজে ব্য়য় হয়!
শনিবার বর্ধমানে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠান থেকে ভাতারের বিধায়ক তথা আইএনটিটিইউসি-র সভাপতির হুঁশিয়ারি, বাজারে চট পেতে বসা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা তোলা হচ্ছে। যার যতবড়ো চট, তার কাছে তত টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এটা আর চলবে না। তাঁর কথায়, “আমরা সকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ মেনে চলি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল করতে হলে একদম স্বচ্ছ ভাবে করতে হবে। কোনও রকম টাকা তোলা যাবে না।” সভাপতি এও বলেন বর্ধমানের উপর কড়া নজরদারি চালাচ্ছে দল।
তাঁর কথায়, “দরকার হলে আমরা হায়ার অফিসারের কাছে যাব। তার সঙ্গে বসে আলোচনা করব। টাকার গোলাম একদম হবেন না। মমতা ব্যানার্জির আদর্শ জানেন তো? টাকা তোলা একদম বন্ধ। যারা চট পেতে ওখানে ব্যবসা করছে, তাদের কাছেও শুনছি নাকি টাকা নিচ্ছে। বসল এতটা জায়গা জুড়ে, তাদের থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা তোলার অভিযোগ বারবার উঠেছে পূর্ব বর্ধমানে। কয়েকজন শাসকদল ঘনিষ্ঠ নেতাকর্মী হম্বিতম্বি করে কাটমানি নেন বলে অভিযোগ করে বিরোধীরাও। যদিও ব্যবসায়ীদের তরফে প্রকাশ্যে কেউ কোনও অভিযোগ করতে সংকোচ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ীরা বলেন, ঝামেলা বাড়িয়ে কী লাভ হবে! তবে এদিন স্বয়ং বিধায়কের মন্তব্য যেন সেই সব না করা অভিযোগই মান্যতা পেল।
এদিকে বিধায়ক যোগ করেন, “আমাকে আর একটু সময় দিন আমাকে। আমি কিছুই জানতাম না। তবে আমি চেষ্টা করব যাতে স্বচ্ছভাবে ট্রেড ইউনিয়নটা করা যায়। যা করবেন স্বচ্ছভাবে করবেনষ বর্ধমানে পার্টির উপর পরিষ্কার নজর আছে। সমস্ত ট্রেড ইউনিয়নে নজর আছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় যেমন দেখা যায় কে কী করছে, তেমনি সেখানেও (দলের উপর মহলে) সিসিটিভি আছে। সব চলে যাচ্ছে সেখানে। তাঁদের কাছে সব রিপোর্ট চলে যাচ্ছে।”
আবার নাম না করে কয়েকজন ব্লক প্রেসিডেন্টকেও নিশানা করেন তৃণমূল বিধায়ক। জানান, তিনি বিধায়ক বলে সরাসরি তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। তবে কয়েকজনের বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্ত চলছে তাঁরই অভিযোগের প্রেক্ষিতে। তাঁর হুঁশিয়ারি, “আপনারা জানেন না কাকে লাগানো আছে পিছনে। সমস্তটাই দেখা হচ্ছে। নজরদারি রয়েছে। আমি নিজেও জানি না কে আমাকে ফলো করছে। তাই ভেবেচিন্তে পা ফেলুন। স্বচ্ছ ভাবে পার্টি করুন।”
তাঁর আরও সংযুক্তি, তিনি নিজে টাকা তোলায় বিশ্বাসী নন। কয়েক বছর পূর্ত দফতরের কর্মাধক্ষ্য ছিলেন, ১৯৯৮ সাল থেকে পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন, কেউ তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেননি।
যদিও এর পরে তাঁর মন্তব্য, “আপনারা টাকা নিন, তবে সৎ কাজে ব্যয় করুন। গরিব পরিবারের মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা করুন।” অন্য আরেক শ্রমিক নেতা সুরিন্দর শর্মাও বলেন, দলের নির্দেশ আছে বেআইনি ভাবে কোনও টাকা তোলা যাবে না। বর্ধমান স্টেশনে হাজার হাজার মানুষ যাওয়া আসা করেন। স্টেশনে বেআইনি টাকা তোলার বিরুদ্ধে তারা দলের কাছে অভিযোগ করেছেন। তার তদন্ত চলছে। গরিব মানুষদের কাছ থেকে টাকা তোলা যাবে না।
আরও পড়ুন: WB By Election 2021: আক্রান্ত কাজল সিনহার ছেলে, কমিশনে যাচ্ছেন শোভনদেব