Raiganj: ফেসবুক ভর্তি তাঁর আপত্তিকর ছবি, দিয়েছেন স্বামীই, থানার সামনে সেই মহিলারই অবস্থা দেখে ঘাবড়ে গেলেন পুলিশকর্তারা
Raiganj: শুক্রবার রায়গঞ্জ সাইবার ক্রাইম থানার আধিকারিকরা ওই নির্যাতিতাকে অভিযুক্ত স্বামী ও তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে বসে সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচোনার জন্য সাইবার ক্রাইম থানায় ডাকে বলে দাবি গৃহবধূর।
রায়গঞ্জ: আপত্তিকর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন খোদ তাঁর স্বামী। তখনই রায়গঞ্জ সাইবার ক্রাইম থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন স্ত্রী। তাও মাস সাতেক আগে। কিন্তু অভিযোগ, এই সাত মাসেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপই করেনি। প্রতিবাদে থানার সামনে হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা ওই গৃহবধূর। ঘটনাটি উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই গৃহবধূর বাড়ি ডালখোলা লাগোয়া বিহারে। অভিযুক্ত স্বামীর বাড়ি করণদিঘি থানা এলাকায়। ওই গৃহবধূর অভিযোগ, বছর খানেক আগে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের ৩ মাস পর থেকেই তাঁর স্বামীর অনৈতিক কাজকর্মের প্রস্তাব দিতে থাকেন। তার প্রতিবাদ করেন স্ত্রী। অভিযোগ, এরপরেই স্বামী তাঁকে মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। একাধিক মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তাঁর স্বামী। তারপরও তিনি প্রতিবাদ করা বন্ধ না করায়, স্বামী তাঁর আপত্তিকর ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে সেই ছবি ভাইরাল করেন বলে অভিযোগ।
অভিযোগ জানিয়ে প্রথমে করণদিঘি থানার দারস্থ হন নির্যাতিতা স্ত্রী। করণদিঘি থানার পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে রায়গঞ্জ সাইবার ক্রাইম থানায় যেতে বলে নির্যাতিতাকে। এর মধ্যে স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি সামাজিক মাধ্যমে দেওয়ার প্রবণতা আরও বেড়ে যায় স্বামীর। এরপর রায়গঞ্জ সাইবার ক্রাইম থানার দারস্থ হন ওই গৃহবধূ। অভিযোগ, দীর্ঘ সাত মাস ধরে লাগাতার ঘুরিয়ে যাচ্ছে সাইবার ক্রাইম থানা বলে অভিযোগ গৃহবধূর।
এদিকে শুক্রবার রায়গঞ্জ সাইবার ক্রাইম থানার আধিকারিকরা ওই নির্যাতিতাকে অভিযুক্ত স্বামী ও তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে বসে সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচোনার জন্য সাইবার ক্রাইম থানায় ডাকে বলে দাবি গৃহবধূর। সেই মতো বিকাল ৪ টায় কর্ণজোড়ায় সাইবার ক্রাইম থানায় নিজের মাকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হন অভিযোগকারী নির্যাতিতা।
সন্ধ্যা ৬ টার পরেও কেউ আসেনি বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এরপর সাইবার ক্রাইম থানার মহিলা পুলিশ কর্মীরা নির্যাতিতাকে আরও বেশি অপমান করে থানা থেকে চলে যেতে বলেন। তারপরই থানা থেকে বেরিয়ে গৃহবধূ সাইবার ক্রাইম থানা চত্বরেই হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ৷
রক্তাক্ত গৃহবধূর এহেন অবস্থা দেখে ঘাবড়ে যান রায়গঞ্জ সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ আধিকারিকরাও ৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছন রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার ডিএসপি ট্রাফিক। খানিকবাদে যান রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তন্ময় সরকার ও করনদিঘি থানার আই,সি পলাশ মহন্ত। ওই রক্তাক্ত তরুণী গৃহবধুর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তারা। পরে ওই গৃহবধূর কাউন্সেলিংয়ের জন্য ডাকা হয় স্থানীয় এনজিও কর্মীদের।
গৃহবধূর মায়ের অভিযোগ, “সব জায়গায় পয়সা খেয়ে জামাইয়ের পক্ষে হয়ে যাচ্ছে পুলিশ। তারা সমাজে মুখ দেখাতে পারছেনা।” যদিও রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তন্ময় সরকার বলেন, “এটা একটা পারিবারিক সমস্যা৷ আমরা ওই তরুণী গৃহবধূর সঙ্গে আছি। ওঁ মানসিক অবসাদ থেকে এরকম করেছেন। ওঁ বিচার পাবেন।”