অবাধে চলছে বালি পাচার, ধসে পড়তে পারে গোটা গ্রাম, আতঙ্কিত স্থানীয়রা

ইতিমধ্যেই জলঢাকা নদী সহ একাধিক নদীর পার থেকে টন টন বালি তুলে নিয়ে যাচ্ছে পাচারকারীরা। এর জেরে জীবন মরণের সমস্যা দেখছেন স্থানীয়রা।

অবাধে চলছে বালি পাচার, ধসে পড়তে পারে গোটা গ্রাম, আতঙ্কিত স্থানীয়রা
অবাধে চলছে বালি পাচার, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Mar 16, 2021 | 2:32 PM

জলপাইগুড়ি: প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়েই রমরমিয়ে চলছে বালি পাচার (Sand Smuggling)। ডুয়ার্সের বিভিন্ন নদীর পার থেকে আর্থ রিমুভার ও জেসিবি মেশিন বসিয়ে অবাধে তুলে নেওয়া হচ্ছে বালি। সেই বালি পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়।

ইতিমধ্যেই জলঢাকা নদী সহ একাধিক নদীর পার থেকে টন টন বালি তুলে নিয়ে যাচ্ছে পাচারকারীরা। এর জেরে জীবন মরণের সমস্যা দেখছেন স্থানীয়রা। নদীর পারে যাঁদের বাস, তাঁদের ঘরবাড়ি কেন, গোটা গ্রামই এর জেরে তলিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দা অনিরুদ্ধ দাশগুপ্তের দাবি, এভাবে বালি পাচারের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে একাধিক নদী। শুধু তাই নয়, বসে যাচ্ছে একের পর এক গ্রাম।

ক্ষতির শেষ এখানেই নয়, অবৈধ বালি পাচারের (Sand Smuggling) ফলে কমছে সরকারি রাজস্ব আদায়। ফলে, পরিমাণমতো রাজস্ব পাচ্ছেন না ভূমি রাজস্ব আধিকারিকরা। এমনকী, বালি পাচারকে কেন্দ্র করে অভিযান চালাতে গিয়ে মাফিয়াদের হাতে রীতিমতো আক্রান্ত হয়েছেন রাজস্ব আধিকারিকরা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বালি পাচারের একটি বৃহৎ চক্র কাজ করছে ধূপগুড়ি, ময়নাগুড়ি ডুয়ার্স-সহ একাধিক এলাকায়। প্রশাসন সব দেখেও উদাসীন। শুধু বালি মাফিয়ারা নয়, এর পেছনে মদত রয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির। একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়া সত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, বেআইনিভাবে পাচার হওয়া ওভারলোডিং বালির গাড়ি অনিয়ন্ত্রিত গতিবেগের জেরে বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে। হচ্ছে প্রাণহানিও।

সূত্রের খবর, পুলিশ ও প্রশাসনকে ‘হাতে রাখতে’ মান্থলি দিয়ে থাকে বালি মাফিয়ারা। সেই মান্থলি পৌঁছে যায় নিচুতলার কেরানি থেকে উচ্চপদস্থ নেতার হাতে। কী এই মান্থলি? প্রতিমাসে প্রতি গাড়ি পিছু নির্ধারিত অর্থ। এই অর্থের পরিমাণ বালির বাজারদর বুঝে বাড়ে ও কমে।স্থানীয়দের অভিযোগ এই ‘মান্থলির’ জেরেই উদাসীন প্রশাসন।

বালিচুরি কে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে শাসক ও বিরোধী শিবিরগুলির মধ্যেও। স্থানীয় বিজেপি (BJP) নেতৃত্বের দাবি, শুধু ডুয়ার্স নয়, পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে কয়লা মাফিয়া বালি মাফিয়াদের রাজ চলছে। এর পেছনে যে পুলিশ-প্রশাসন-সহ যে বিরাট চক্রটি কাজ করছে তার দৌড় নবান্ন পর্যন্ত গিয়েছে।

যদিও স্থানীয় তৃণমূল (TMC) নেতৃত্বের দাবি, এইভাবে বাালি চুরি আইনত অপরাধ। যারাই এই অবৈধ কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।

আরও পড়ুন: রাজনীতির উর্ধ্বে মেলা, মতুয়াদের মিলন চায় ঠাকুরবাড়ি