শোনা যাচ্ছে তালিবানের বুটের শব্দ, সীমানায় পাল্টা জবাব দিতে কতটা প্রস্তুত মাসুদের সেনা?

পঞ্জশীরের তালিবান বিরোধী বাহিনীও প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে। পঞ্জশীরের সীমানা জুড়ে একাধিক পোস্ট তৈরি করা হয়েছে নজরদারি করার জন্য।

শোনা যাচ্ছে তালিবানের বুটের শব্দ, সীমানায় পাল্টা জবাব দিতে কতটা প্রস্তুত মাসুদের সেনা?
বন্দুক হাতে তালিবান। PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 25, 2021 | 4:48 PM

পঞ্জশীর: প্রায় গোটা আফগানিস্তান(Afghanistan)ই নিজের দখলে নিতে পারলেও একমাত্র পঞ্জশীর উপত্যকা (Panjshir Valley)-তেই আঁচড়টুকুও কাটতে পারেনি তালিবান (Taliban)। উল্টে সেখানেই গড়ে উঠেছে তালিবান প্রতিরোধ শক্তি। আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে বিরোধী শক্তিকে আটকাতে তালিবান তৎপার হওয়ায়, নজরদারি বাড়াল প্রতিরোধ শক্তিও।

গত সপ্তাহের রবিবার কাবুল দখল নেওয়ার পরই আফগানিস্তানে নিজেদের রাজত্ব ঘোষণা করেছে তালিবানরা। কিন্তু দখল করতে পারেনি কাবুলের উত্তরে অবস্থিত পাহাড়ে ঘেরা পঞ্জশীর উপত্যকা। গত সপ্তাহেই তালিবান বিরোধী শক্তি পোল-ই-হেসার, দেহ সালাহ ও বানু জেলা দখল নেয়। তালিবানের পতাকা নামিয়ে ফের আফগানিস্তানের পতাকা উত্তেলন করা হয়। লোকমুখে পঞ্জশীর প্রতিরোধ শক্তির প্রশংসা শুরু হতেই নড়েচড়ে বসে তালিবান। হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় হামলার।

পঞ্জশীরের প্রতিরোধ শক্তির প্রধান আহমেদ মাসুদকে চারঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হলেও মাসুদ সাফ জানিয়ে দেন, তিনি যুদ্ধ না চাইলেও তালিবান হামলা করলে পাল্টা জবাব দেবে তাঁর বাহিনীও। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরুল্লাহ সালেহ এই পঞ্জশীরে আশ্রয় নিয়েছেন। সেনাবাহিনীর কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও দলে দলে তালিবান বিরোধী বাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন। প্রায় ৯ হাজার সৈন্যের বাহিনী তৈরি করা হয়েছে।

দুই পক্ষের তরফেই আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলেও কেউই বৈঠকের দিনক্ষণ স্থির করছিলেন না। এদিকে, তালিবানের তরফে শতাধিক সেনা পাঠানো হয়েছে পঞ্জশীরে। তালিবানের অন্যতম মুখপাত্র জাবিদুল্লাহ মুজাহিদ টু্‌ইটারে জানিয়েছেন, সোমবারের মধ্যে পঞ্জশীরের তিন দিকে থাকা বাদাখসান, তাহর ও আন্দারব প্রদেশের দখল নিয়ে নিয়েছে তালিবান। টুইটে বলা হয়, “ইসলামিক এমিরেটসয়ের শতাধিক মুজাহিদ্দিন পঞ্জশীরের দিকে রওনা দিয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হলেও স্থানীয় আধিকারিকরা সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন। তাই এই পদক্ষেপ করতে হয়েছে।”

তালিবানের তরফে জানানো হয়েছে, আফগানবাসীর জন্য নতুন সরকার গঠনের কাজ চলছে। তবে প্রয়োেজনে লড়াই করবে তালিবান। যদি পঞ্জশীরে তালিবান প্রতিরোধ বজায় থাকে, তবে শান্তির পথ আর অনুসরণ করা হবে না। আফগানিস্তানকে রক্ষা করতে তারা প্রস্তুত এবং এই সংঘর্ষে রক্তবন্যা বইতে পারে,সেই বিষয়েও সতর্ক করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, পঞ্জশীরের তালিবান বিরোধী বাহিনীও প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে। পঞ্জশীরের সীমানা জুড়ে একাধিক পোস্ট তৈরি করা হয়েছে নজরদারি করার জন্য। মেশিন গান নিয়ে গোটা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রতিরোধ বাহিনীর গাড়ি। সুড়ঙ্গ বানিয়ে এবং বালির দুর্গে মর্টার, মেশিন গান নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে বাহিনী।

পঞ্জশীর প্রতিরোধ বাহিনীর অনেক সদস্যদের হাতে অ্যাসল্ট রাইফেল, গ্রেনেড ও ওয়াকি-টকিও দেখা গিয়েছে। বাহিনীতে যারা নতুন যোগ দিয়েছেন, তাদেরও অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তালিবান প্রতিরোধ বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন আফগান সেনাবাহিনীর সদস্যরাও। তারাই স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানকে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছে তালিবান’