
ঢাকা: এক বছরেই বদলে গিয়েছে ছবি। যে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনূস(Muhammad Yunus)-কে অনেক আশা-প্রত্যাশা নিয়ে নতুন বাংলাদেশ (Bangladesh) গড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, এখন তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ চরমে। রাগে ফুঁসছেন পড়ুয়া থেকে দেশের সাধারণ মানুষ। এবার কী করলেন ইউনূস?
শোনা যাচ্ছে, বাংলাদেশে প্রাথমিক স্কুলে সঙ্গীত ও শারীরশিক্ষা (physical education) শিক্ষক নিয়োগ করার পরিকল্পনা বাতিল করে দিয়েছে ইউনূস সরকার। কিছুদিন আগেই হেফাজত-ই-ইসলাম, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ সহ কিছু ইসলামিক গোষ্ঠী বলেছিল সঙ্গীত ও শারীরশিক্ষা পদ “অ-ইসলামিক”। এর বদলে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছিলেন। সেই দাবি পূরণ না হলে, প্রতিবাদে পথে নামার হুমকিও দিয়েছিলেন।
ঠিক এর পরেই ইউনূস সরকারের এই সিদ্ধান্ত। সমালোচকরা ইউনূস সরকারের তুলোধনা করে বলেছেন যে বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক ফ্যাসিজম চলছে। বাতিল করে দেওয়া এই পদগুলি আবার ফিরে আনার দাবিতে সুর চড়েছে বাংলাদেশে।
জানা গিয়েছে, যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করা হয়েছিল তাতে উল্লেখ ছিল জেনারেল, ধর্ম, সঙ্গীত ও ফিজিক্য়াল এডুকেশনের জন্য অ্য়াসিস্টেন্ট টিচার পদে নিয়োগ করা হবে। তবে প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রক সেই সিদ্ধান্ত বদল করে বিজ্ঞপ্তি থেকে সঙ্গীত ও শারীরশিক্ষা বাদ দিয়ে দেয়। ঢাকা ট্রিবিউন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূস সরকারের মুখপাত্র মাসুদ আখতার খান এই নিয়োগ বাতিলের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন যে অল্প সংখ্যক পোস্ট কোনও কার্যকরী ফল দেবে না। তাই সেগুলি বাদ দেওয়া হয়েছে।
তবে সমালোচকদের দাবি, ইসলামিক গোষ্ঠীগুলির চাপে পড়েই এই নিয়োগ বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বিক্ষোভও দেখান। সরকারের এই সিদ্ধান্ত শিশুদের বিকাশে বাধা দেবে। ছোটদের জীবন থেকে কলা, সাহিত্য, সংস্কৃতি মুছে ফেলা হচ্ছে। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ অবরুদ্ধ হবে। জগন্নাথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র ফ্রন্টের জেনারেল সেক্রেটারি শামসুল আলম মারুফ এই সিদ্ধান্তকে ফ্যাসিবাদ বলেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে হাসিনা সরকারের পতনের পর মহম্মদ ইউনূসের তত্ত্বাবধানে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সেই সময় সংস্কারের কথা বললেও, ইউনূস প্রশাসন ক্রমাগত ইসলামপন্থীদের দিকেই ঝুঁকেছে বলে অভিযোগ। সরকারের সিদ্ধান্তও প্রভাবিত ও পরিচালিত হচ্ছে এই ইসলামিক গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমেই।