মার্কিন সেনার ২৫০ বছর, ট্রাম্পের ৭৯! জোড়া সেলিব্রেশনে রাজপথে সেনা প্যারেড
Donald Trump: ভারতীয় সময় ভোররাতে আমেরিকাতে নজিরবিহীন সেনা প্যারেড। ৭০০০ সেনা, ১৫০-রও বেশি সামরিক গাড়ি, ৫০টি যুদ্ধবিমান এদিনের প্যারেডে অংশ নেয়। সরাসরি দেখানো হবে বিভিন্ন মার্কিন টিভি চ্যানেলে। অন্যদিকে, আমেরিকার একের পর এক শহরে ছড়িয়ে পড়ছে ট্রাম্প-বিরোধী আন্দোলন। মোতায়েন বাড়তি নিরাপত্তা।

ওয়াশিংটন ডিসির রাজপথে প্যারেড করছে সার সার মার্কিন সেনা, সাঁজোয়া গাড়ি, ক্ষেপণাস্ত্র। শনিবার স্বাধীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনার ২৫০ বছর পূর্তি। একইদিনে আবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৭৯-তম জন্মদিন। দুইয়ের মেলবন্ধনকে অবিস্মরণীয় করে রাখতে এমন এক সেনা প্যারেডের আশ্বাস দিয়েছেন ট্রাম্প, যা আগে নাকি দুনিয়া দেখেনি। ট্রাম্পের ভাষায়, ‘লাইক নো আদার’। সেইমতো শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ অনুষ্ঠান শুরু হয়, ভারতে তখন প্রায় ভোররাত। ট্রাম্প যখন নিজের জন্মদিনে জাঁকজমক করে সেনাকে প্যারেড করাচ্ছেন, তখন আরেকদিকে একটার পর একটা মার্কিন শহরে ট্রাম্প বিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র আকার নিচ্ছে। পোশাকি নাম ‘নো কিংস প্রোটেস্ট’।
কতজন সেনা হাঁটবেন প্যারেডে? প্রায় ৭০০০ ইউনিফর্ম পরিহিত মার্কিন সেনা। সঙ্গে আকাশে আতসবাজির ঝলকানি, মিসাইল, সাঁজোয়া গাড়ি দাপাবে রাজপথ। ওয়াশিংটনে মনুমেন্ট গ্রাউন্ডের কাছে ন্যাশনাল মলের কাছে অনুষ্ঠিত এই শোয়ের জন্য কোনও টিকিট না লাগলেও সেনা ওয়েবসাইটে নাম নথিভূক্তকরণ বাধ্যতামূলক। সেনার এই ‘ইভেন্ট’-এর খরচ? প্রায় ৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার মধ্যে বেশিরভাগ টাকাই খরচ হয়েছে ওয়াশিংটনের রাস্তা মেরামতির জন্য। কারণ, শহরের রাস্তাকে ভারী ভারী সেনার ব্যাটেল-ট্যাঙ্ক বহনের উপযোগী করতে হয়েছে। শেষবার আমেরিকাতে এরকম বর্ণাঢ্য সেনা প্যারেড করেছিল ১৯৯১-তে, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের আমলে, উপসাগরীয় যুদ্ধের শেষে। ট্রাম্প আয়োজিত এদিনের প্যারেডে অংশ নিতে সামরিক ট্যাঙ্ক, হাউৎজারকে কোথাও পণ্যবাহী ট্রেনে চাপিয়ে, কোথাও আবার হেলিকপ্টারে উড়িয়ে ১৫০০ মাইল পাড়ি দিয়ে আনা হয়েছে টেক্সাস থেকে। ১৫০-রও বেশি সামরিক গাড়ি, ৫০টি যুদ্ধবিমান এদিনের প্যারেডে অংশ নেয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড় সেলিব্রেশন আমেরিকা জুড়ে হয়নি বলে দাবি ট্রাম্প প্রশাসনের। আনুমানিক ২ লাখেরও বেশি ভিড় হবে ধরে নিয়ে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা। তার একটা বড় কারণ, আমেরিকার অন্তত ১৫০০টি শহরে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে ‘নো কিংস মুভমেন্ট’। প্রতিবাদীরা ট্রাম্প সরকারের দমনপীড়ন ও অনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে বেছে নিয়েছেন ১৪ জুনকেই। প্রতিবাদীদের দাবি, ট্রাম্প তাঁর জন্মদিনে ওয়াশিংটনের রাস্তায় ট্যাঙ্ক নামাচ্ছেন, কিন্তু উনি ভুলে যাচ্ছেন, সব ক্ষমতা এখন আর ওয়াশিংটনের হাতে কেন্দ্রীভূত নেই। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে সরব প্রতিবাদীরা। সেই সঙ্গে সরকারি চাকরি থেকে ছাঁটাই, সরকারে দুর্নীতির অভিযোগ তো রয়েছেই।
প্রতিবাদকে ধামাচাপা দিতে ক্যালিফর্নিয়ার গভর্নরের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হেঁটে ন্যাশনাল গার্ড ও মার্কিন নৌসেনাও নামিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রতিবাদীদের স্লোগান, ‘৫০ স্টেটস, ৫০ প্রোটেস্ট, ওয়ান মুভমেন্ট।’ তাই একে বলা হচ্ছে ‘৫০৫০১ মুভমেন্ট’। শিকাগো, নিউ ইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া, আটলান্টা, হুস্টন, ফিনিক্সের মতো শহরে পতাকা হাতে বিশাল মিছিল করার কর্মসূচি নিয়েছেন প্রতিবাদীরা। আলাস্কা থেকে শুরু করে ফ্লোরিডার মধ্যে ৫০টি প্রদেশেই মিছিল বেরোবে। ট্রাম্পের খাসতালুক বলে পরিচিত টেক্সাস ও ফ্লোরিডা। দুই শহরেই হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদে শামিল। শুধু আমেরিকা নয়, প্রতিবাদীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেক ইউরোপিয়ান দেশের নাগরিকরাও।





