Iran-Saudi Arabia: সাত বছরের বিচ্ছেদ ভুলে ফের হাতে-হাত ইরান ও সৌদি আরবের, কী ফন্দি আঁটছে চিন?

Iran-Saudi Arabia Resume Ties: মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে বড় অগ্রগতি। দীর্ঘ সাত বছরের কূটনৈতিক বিচ্ছেদ ভুলে ফের কাছাকাছি দুই চির-প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ইরান এবং সৌদি আরব।

Iran-Saudi Arabia: সাত বছরের বিচ্ছেদ ভুলে ফের হাতে-হাত ইরান ও সৌদি আরবের, কী ফন্দি আঁটছে চিন?
হাতে-হাত ইরান এবং সৌদির, মধ্য়মণি চিন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 10, 2023 | 11:08 PM

বেজিং: মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে বড় অগ্রগতি। দীর্ঘ সাত বছর ধরে দুই চির-প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ইরান এবং সৌদি আরবের মধ্যে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। শুক্রবার (১০ মার্চ), সেই সম্পর্ক ফের চালু করতে এবং ফের দূতাবাস স্থাপন করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে রিয়াধ এবং তেহরান। এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিনের রাজধানী বেজিংয়ে এক আলোচনায় মিলিত হন দুই দেশের শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা কর্তারা। তারপরই এই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন ইরানের শীর্ষস্থানীয় নিরাপত্তা কর্তা আলি শামখানি এবং সৌদি আরবের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মুসায়েদ বিন মহাম্মদ আল-আইবান। রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দুই দেশই এই চুক্তি স্বাক্ষরের ক্ষেত্রে চিনের সদর্থক ভূমিকার প্রশংসা করেছে। এর আগে ২০২১ এবং ২০২২ সালে যথাক্রমে ইরাক এবং ওমানে ইরান এবং সৌদির কর্তারা আলোচনায় বসেছিলেন। ইরাক এবং ওমানেকেও এর জন্য আলাদা করে ধন্যবাদ জানিয়েছে এই দুই দেশ।

এর আগে ২০০১ সালে মধ্য প্রাচ্যের এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তারও আগে বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং বিনিয়োগের বিষয়ে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল ইরাক ও সৌদি। এদিন সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, এই দুই চুক্তিই কার্যকর করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে তারা। এক বিবৃতিতে সৌদি প্রেস এজেন্সি বলেছে, “চিনের সমর্থনে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের মাননীয় রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং-এর মহৎ উদ্যোগে সৌদি আরব এবং ইসলামি প্রজাতান্ত্রিক ইরানের মধ্যে প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য, বেজিংয়ে ৬ থেকে ১০ মার্চের মধ্যে দুই দেশের প্রতিনিধিদল আলোচনায় বসেছিল।”

অন্যদিকে, ইরানের এক উচ্চপদস্থ নিরাপত্তা কর্তা জানিয়েছেন, শুক্রবারের চুক্তিকে সেই দেশের সর্বময় নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনেই সমর্থন করেছেন। ওই কর্তা বলেছেন, “সেই কারণেই সর্বময় নেতার প্রতিনিধি হিসাবে চিন সফর করেছেন শামখানি। তাঁকে চিনে পাঠিয়ে ইরান সরকার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, এই সিদ্ধান্তে ইরানের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের সমর্থন আছে।”

উল্লেখ্য, শিয়াপন্থী ইরান এবং সুন্নিপন্থী সৌদি আরবের মধ্যে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিরোধ রয়েছে। সরাসরি দুই দেশ যুদ্ধে না জড়িয়ে পড়লেও, ইয়েমেন থেকে সিরিয়া – মধ্যপ্রাচ্যের যেখানে যেখানে যুদ্ধ চলছে, সর্বত্রই দুই দেশের ছায়া যুদ্ধ চলছে। সর্বত্রই দুই দেশ বিপরীত পক্ষকে সমর্থন করে চলেছে। ২০১৬ সালে রিয়াধের এক শিয়াপন্থী ধর্মগুরুর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ চরমে উঠেছিল। তেহরানে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসে হামলাও হয়েছিল। তারপর সৌদি আরব এবং ইরানের সবরকম কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সেই দিক থেকে ২০২৩ সালের ১০ মার্চ এক নতুন যুগের সূচনা করল বলা চলে।

এই সম্পর্ক কতটা টেকসই হয়, সেই বিষয়ে অবশ্য এখনও সন্দিহান কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। সেই সঙ্গে কপালের ভাঁজ বাড়িয়েছে চিনের মধ্যস্থতা। সাম্প্রতিক অতীতে বারবারই দেখা গিয়েছে যে, চিনের যে কোনও পদক্ষেপের পিছনেই নিজস্ব স্বার্থ জড়িয়ে থাকে। শ্রীলঙ্কা থেকে পাকিস্তান, যখন যে দেশের পাশে দাঁড়িয়েছে চিন, আখেরে লাভ হয়েছে বেজিং-এরই। ইরান সৌদি আরবের সম্পর্কের উন্নয়নের পিছনে মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার বিরোধী ব্লক তৈরির চৈনিক প্রচেষ্টা বলেও মনে করছেন অনেকে। আবার, চিনের সম্প্রসারণবাদী নীতিরও অংশ হতে পারে।