Osama’s letter: লাদেনকেই সমর্থন নতুন প্রজন্মের! গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষিতে ভাইরাল ২১ বছরের পুরোনো চিঠি
Osama's letter to Americans: পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধের প্রেক্ষিতে, মার্কিন জনগণের উদ্দেশে ওসামার লেখা একটি চিঠি ভাইরাল হল সোশ্যাল মিডিয়ায়। একুশ বছর আগে চিঠিটি লিখেছিলেন লাদেন। ৯/১১ হামলার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। চিঠিটি প্রকাশ করেছিল গার্ডিয়ান পত্রিকা। ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষিতে, নতুন করে সেই চিঠির সন্ধান পেয়েছে নেটিজেনরা। সবথেকে বিস্ময়কর এবং উদ্বেগজনক, অনেকেই নিহত আল কায়েদা নেতার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন!
তেল আবিব: ২০১১ সালের মে মাসে, পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের একটি বাড়িতে, রাতের অন্ধকারে অভিযান চালিয়ে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করেছিল মার্কিন সেনাবাহিনী। তারপর, ১২ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু, কুখ্যাত এই জঙ্গি নেতার মৃত্যু হয়নি। বা বলা ভাল, ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ ফের কবর খুঁড়ে তুলে আনল বিশ্বের সবথেকে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী নেতা, ওসামা বিন লাদেনকে। পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধের প্রেক্ষিতে, মার্কিন জনগণের উদ্দেশে ওসামার লেখা একটি চিঠি ভাইরাল হল সোশ্যাল মিডিয়ায়। একুশ বছর আগে চিঠিটি লিখেছিলেন লাদেন। ৯/১১ হামলার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। চিঠিটি প্রকাশ করেছিল গার্ডিয়ান পত্রিকা। ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষিতে, নতুন করে সেই চিঠির সন্ধান পেয়েছে নেটিজেনরা। সবথেকে বিস্ময়কর এবং উদ্বেগজনক, অনেকেই নিহত আল কায়েদা নেতার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন!
লাদেনের লেখা এই চিঠিটি সম্প্রতি টিকটকে শেয়ার করেন হাজার হাজার ব্যবহারকারী। এখন, সেই চিঠি সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হয়েছে। ২০০১ সালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার পর ওই চিঠিতে সেই হামলা এবং হত্যাযজ্ঞকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন লাদেন। অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি, হামলার কারণ হিসেবে লাদেন জানিয়েছিলেন, ‘প্যালেস্তাইন দখলকারী ইসরায়েলিদের প্রতি আমেরিকার সমর্থন’।
চিঠিতে লাদেন লিখেছিলেন, “ওরা আমাদের বিরুদ্ধে লক্ষাধিক সৈন্য নামিয়েছে। আমাদের উপর অত্যাচার করেছেষ। আমাদের জমি কেড়ে নেওয়ার জন্য ইজরায়েলিদের সঙ্গে একটি জোট গঠন করেছে। এটাই ১১ তারিখ আমাদের প্রতিক্রিয়ার মূল কারণ। কয়েক দশক ধরে ইজরায়েলের দখলে রয়েছে প্যালেস্তাইন। ১১ সেপ্টেম্বরের আগে পর্যন্ত আপনাদের কোনও প্রেসিডেন্ট এই বিষয়ে কেউই এ বিষয়ে কথা বলেননি।” তিনি আরও লিখেছিলেন, “প্যালেস্তাইনকে আর বন্দি রাখা যাবে না। আমরা এই শিকল ভাঙবই। খ্রিস্টানদের রক্ত দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার ঔদ্ধত্যের মূল্য চোকাতে হবে।” চিঠিতে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইনের উল্লেখই ওসামার চিঠিটি ফের ভাইরাল হওয়ার মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার হওয়া শুরু পর থেকে কোটি কোটি মানুষ সেটি পড়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘জেন জেডে’র অনেকেই বলেছেন, এই চিঠি পড়ার পর, তারা ‘অস্তিত্ব সংকট’ বোধ করছে। কেউ কেউ এমনও বলেছে, যে এই চিঠি তাদের “চোখ খুলে দিয়েছে”। একজন বলেছেন, “আমাদের সারা জীবন মিথ্যা বলা হয়েছে। আমার মনে আছে, ওসামাকে খুঁজে বের করে হত্যা করার পর, মানুষ উল্লাস করেছিল। কিন্তু, এখন মনে হচ্ছে সবটাই মিথ্যা ছিল।” ‘জেন জেড’-এর এই খোলাখুলি লাদেনের সন্ত্রাসবাদী ইস্তাহারের প্রশংসা করা, দেখে বিস্মিত আগের প্রজন্মের অনেকেই। তারা বলছেন, চিঠিতে অসামরিক নাগরিদের হত্যাকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বিন লাদেন। এই চিঠিকে কেউ কীভাবে সমর্থন করতে পারে? জেন জেড তাদের পাল্টা মনে করিয়ে দিচ্ছে, গাজাতেও সন্ত্রাসবাদীদের খতম করার নামে, হাজার হাজার নিরপরাধ অসামরিক প্যালেস্তিনীয় নাগরিককে হত্যা করছে ইজরায়েল। একইভাবে, মিথ্যা বলে ইরাকে হামলা চালিয়েছিল আমেরিকা। ওসামার কাজ সন্ত্রাসবাদ হলে, এই হামলাগুলিকে কী বলা হবে?
৭ অক্টোবর ইজরায়েলে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল হামাস গোষ্ঠী। একদিনে ১,৪০০ ইজরায়েলি নাগরিককে হত্যা করেছিল এবং অন্তত ২০০ জনকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে এসেছিল তারা। তারপরই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইজরায়েল। গত ৪২ দিন ধরে গাজায় প্রথমে আকাশপথে, আর বর্তমানে স্থলপথে হামলা চালাচ্ছে তেল আবিব। হামাসকে নির্মূল করতে গিয়ে ১২,০০০-এর বেশি সাধারণ মানুষকে মেরে ফেলেছে তারা। যার মধ্যে অধিকাংশই শিশু। এই নির্লজ্জ হত্যালীলাকে সবুজ সঙ্কেত দিয়ে রেখেছে আমেরিকা। এই প্রেক্ষিতেই ওসামা বিন লাদেনের চিঠিকে প্রাসঙ্গিক এবং সমর্থনযোগ্য মনে করছে নতুন প্রজন্ম, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। টিকটক ভিডিও উঠে আসে এবং ভাইরাল হয়। চিঠিটি ভাইরাল হওয়ার পর, দ্য গার্ডিয়ান সংবাদপত্র তাদের ওয়েবসাইট থেকে বিন লাদেনের চিঠিটি সরিয়ে দিয়েছে।