Veto Power in UN: ‘ভেটো’র জোরেই ইউক্রেনে সেনা প্রত্যাহার এড়াল রাশিয়া, রাষ্ট্রসংঘের সিদ্ধান্তে কেন গুরুত্বপূর্ণ এই ভোট?

Veto Power in UN: এই রাষ্ট্রসংঘ গঠনে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, চিন, ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সেই কারণেই রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ কিছু সুযোগ-সুবিধাও ভোগ করে। এই দেশগুলি রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ায় তাদের বিশেষ ভোট দেওয়ার ক্ষমতাও দেওয়া হয়, যাকে "ভেটোর অধিকার" বলা হয়।

Veto Power in UN: 'ভেটো'র জোরেই ইউক্রেনে সেনা প্রত্যাহার এড়াল রাশিয়া, রাষ্ট্রসংঘের সিদ্ধান্তে কেন গুরুত্বপূর্ণ এই ভোট?
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 26, 2022 | 1:09 PM

নয়া দিল্লি: রাশিয়া ইউক্রেনে(Ukraine)-র উপর হামলা চালানোর পরই মুহূর্তে মুহূর্তে পাল্টে যাচ্ছে বিশ্ব রাজনীতি। ইউক্রেনের উপর রাশিয়া যাতে আক্রমণ বন্ধ করে এবং সমস্ত সেনা প্রত্য়াহার করে, সেই দাবিতে শুক্রবারই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে (United Nations Security Council) সদস্য দেশগুলির মতামত জানতে চাওয়া হয়। কিন্ত রাশিয়া নিজের ভেটো শক্তি ব্যবহার করে সেই প্রস্তাবনা খারিজ করে দেয়। রাশিয়া (Russia) যে এই শক্তি ব্যবহার করবে, তা আগে থেকেই জানত আমেরিকর মতো শক্তিধর দেশগুলি। তবুও তারা এই প্রস্তাবনার উপরে জোর দিয়েছিলেন যাতে আগ্রাসী রূপের জন্য বিশ্বমঞ্চে রাশিয়া যে একঘরে হয়ে গিয়েছে, তা তুলে ধরা। শুক্রবারের ভোটে ১১টি সদস্য দেশ রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহারের সপক্ষে সমর্থন করলেও, ভারত, চিন ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি কোনও পক্ষেই ভোট দিতে নারাজ হয়। অন্যদিকে, রাশিয়া সেনা প্রত্যাহারের বিপক্ষেই মত দিয়েছে।

বিশ্বে শান্তি, সম্প্রীতি ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই রাষ্ট্রসংঘের প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এই সংগঠনের মোট ১৫টি সদস্য রয়েছে এবং প্রত্যেকটি দেশেরই ভোট দেওয়ার অধিকারও রয়েছে। নিরাপত্তা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত সমস্ত সদস্য দেশকেই মেনে চলতে হয়। যখনই বিশ্বের কোথাও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তখনই রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল সদস্য দেশগুলির সঙ্গে বৈঠক করে স্থির করে যে সেই পরিস্থিতি কী করে সামাল দেওয়া হবে। অনেক সময় রাষ্ট্রসংঘ শান্তি বজায় রাখতে শক্তি প্রয়োগ বা অনুদান স্থগিতও করে দেওয়া হয়।

ভেটো কী?

এই রাষ্ট্রসংঘ গঠনে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, চিন, ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। সেই কারণেই রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ কিছু সুযোগ-সুবিধাও ভোগ করে। এই দেশগুলি রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ায় তাদের বিশেষ ভোট দেওয়ার ক্ষমতাও দেওয়া হয়, যাকে “ভেটোর অধিকার” বলা হয়। স্থায়ী সদস্যদের মধ্যে যদি কোনও একটি দেশও ভেটো প্রয়োগ করে কোনও প্রস্তাবনায় না করেন, তবে সেই প্রস্তাবনা খারিজ হয়ে যায়। পাঁচটি দেশেরই ভেটোর অধিকার রয়েছে। যদি কোনও স্থায়ী সদস্য কোনও প্রস্তাবনায় রাজি না হয় এবং ভোটও না দিতে রাজি হয়, তবে তারা কোনও মত নাও প্রকাশ করতে পারেন। সেই অধিকারও দেওয়া হয়েছে তাদের। তবে বাকি সদস্য দেশগুলির মধ্যে যদি প্রয়োজনীয় ৯টি ভোট পড়ে, তবে সেই প্রস্তাবনা কার্যকর করা যেতে পারে।

ভেটোর গুরুত্ব:

রাষ্ট্রসংঘের স্থায়ী ও অস্থায়ী সদস্যদের মধ্যে অন্যতম ফারাক হল এই ভেটো প্রয়োগের ক্ষমতাই। রাষ্ট্রসংঘের ২৭(৩) ধারা অনুযায়ীই নিরাপত্তা পরিষদ স্থায়ী সদস্যদের ভোটের উপর ভিত্তি করেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি নেয়। এই ভেটোর ক্ষমতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কও রয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের কর্মপদ্ধতি নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রেও প্রতিবারই এই ভেটো প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়।

রাষ্ট্রসংঘের শুরুর দিকে, রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) ঘনঘন নিজের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতো। মজা করে তাদের প্রতিনিধিদের নাম ‘মিস্টার ভেটো’ দেওয়া হয়েছিল। বিগত বছরগুলিতে রাশিয়া ১৪৬বার ভেটো প্রয়োগ করেছে, যা মোট ভেটো প্রয়োগের প্রায় অর্ধেক। ১৯৪৬ সালে লেবানন ও সিরিয়ায় সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে ভেটো প্রয়োগ শুরু করেছিল রাশিয়া, তারপর থেকে মোট ২৯৪ বার ভেটো প্রয়োগ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রস্তাবে।

বিগত কয়েক বছরে রাশিয়া যতবারই ভেটো প্রয়োগ করেছে, তা ভারতের সপক্ষেই গিয়েছে। এখনও অবঘধি মোট ৪বার রাশিয়া ভারতের সমর্থনে ভেটো প্রয়োগ করেছে।

আরও পড়ুন: Russia-Ukraine Conflict: হঠাৎ নিঃস্তব্ধতা কিয়েভে, সাতসকালেই কৃষ্ণসাগর থেকে হামলা চালাল রুশ রণতরী