AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Donald Trump: আপনার হাঁড়ির খবর রাখতে চায় না ট্রাম্প? না কি আরও বড় মতলব!

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা Central Intelligence Agency, সংক্ষেপে CIA বা সিয়া, কীভাবে সারা দুনিয়ায় নজরদারি চালায়, কীভাবে তারা ছলে-বলে-কৌশলে নানা দেশের সরকারকে নিজেদের হাতের পুতুলে পরিণত করে, সেটা দেখানো হয়েছিল এই নাটকে।

Donald Trump: আপনার হাঁড়ির খবর রাখতে চায় না ট্রাম্প? না কি আরও বড় মতলব!
Image Credit: PTI
| Edited By: | Updated on: Feb 06, 2025 | 3:38 PM
Share

একটু বয়স্ক বা প্রবীণরা সকলেই জানেন। যাঁরা তুলনায় নবীন প্রজন্মের দর্শক, অরুণ মুখোপাধ্যায়কে মঞ্চে দেখার সৌভাগ্য হয়নি। রাজ্যে তখন কংগ্রেস সরকার। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় মুখ্যমন্ত্রী। চারদিকে অভিযোগ। নকশাল দমনের নামে চলছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। আর বাম রাজনীতির পালে হাওয়া তুলেছে সাংস্কৃতিক আন্দোলন। ভিয়েতনাম যুদ্ধ আমেরিকাকে সাধারণ মানুষের চোখে ভিলেন বানিয়ে দিয়েছে। বামেরা উঠতে-বসতে কোট আনকোট মার্কিন সাম্রাজ্যবাদকে শাপশাপান্ত করছেন। এরকম একটা সময়ে ১৯৭২ সালে মহাকরণের ক্যান্টিন হলে প্রথম মঞ্চস্থ হয় মারীচ সংবাদ। ২ মাস পর কলামন্দিরে ফের শো। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বাংলা মঞ্চনাটকের ইতিহাসে স্থায়ী জায়গা তৈরি করে নেয় মারীচ সংবাদ। 

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা Central Intelligence Agency, সংক্ষেপে CIA বা সিয়া, কীভাবে সারা দুনিয়ায় নজরদারি চালায়, কীভাবে তারা ছলে-বলে-কৌশলে নানা দেশের সরকারকে নিজেদের হাতের পুতুলে পরিণত করে, সেটা দেখানো হয়েছিল এই নাটকে। অরুণবাবুর কথায় আপনি গভীর রাতে আপনার স্ত্রী-র কানে কানে যেকথা বলেন, তাও সিয়া জানে। 

এই যে গোটা ব্যবস্থা, সেটা অর্থনীতিবিদ-সমাজতাত্ত্বিকদের কাছে অনেকাংশে নিও-কলোনিয়ালিজম নামে পরিচিত। ব্রিটিশরা একদিন আমাদের শাসন করত। তেমনই আফ্রিকার নানা দেশে একসময় ছিল ফরাসি শাসন। লাতিন আমেরিকায় চলত স্প্যানিশ রুল। সবার  লক্ষ্য ছিল একটাই। অন্য দেশ দখল করে কলোনি তৈরি করো। তারপর সেই কলোনির সম্পদ লুটে নিজেরা বড়লোক হও। সমৃদ্ধ দেশ হও। এটাই ছিল কলোনিয়ালিজমের মূল কথা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কলোনিগুলো সমস্ত পরপর স্বাধীন হয়ে গেল। এবার এল নিও-কলোনিয়ালিজম। অন্যের দেশে গিয়ে সেই দেশ শাসন করার হাজারো ঝামেলা। তার চেয়ে ভাল ওই দেশে নিজের পছন্দের কাউকে ক্ষমতায় বসিয়ে দাও। তারপর সেই শাসকের সঙ্গে সরকারি চুক্তি করে যত খুশি লুঠ করো। অনেকেরই অভিযোগ যে রাষ্ট্রের এরকমই একটা গভীর-গোপন ভাবনা থেকে তৈরি হয়েছিল United States Agency for International Development, USAID. এটা একটা মার্কিন সরকারের অধীনস্থ স্বশাসিত সংস্থা। বিশ্বের প্রায় ১০০ দেশে এরা উন্নয়নের কাজ করে। টাকা দেয়। আমেরিকার বাইরে থেকেও ফান্ড আসে। বার্ষিক বাজেট প্রায় ৫ হাজার কোটি ডলার। বুঝতেই পারছেন কতটা জায়গাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে এই সংস্থার কর্মকান্ড।

 ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন আগামী ৯০ দিন মার্কিন সরকারের সবরকম সাহায্য বন্ধ। এই দেড় মাসে রিভিউ হবে। যেখানে দরকার সেখানে টাকা দেবে আমেরিকা। বাজে খরচ বোঝা গেলে সাহায্য চিরতরে বন্ধ। এই সিদ্ধান্তের পরই USAID-এর ওয়েবসাইট আর খুলছে না। সংস্থার ১০ হাজার কর্মীকে ছুটিতে যেতে বলে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দেশে যেসব সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইউএসএড কাজ করত, তাদের বলে দেওয়া হয়েছে, টাকা বন্ধ। আর যার ফলে গরিব দেশগুলোয় চলা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ মুহূর্তে থমকে গেছে। ইউএসএড-এর মতো সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে নানা সময়ে অভিযোগ উঠেছে যে এরা আসলে মার্কিন সরকারের এক একটা টুলস। এদের মাধ্যমে দুনিয়াজুড়ে প্রভাব বিস্তার করে আমেরিকা। ফলে, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের ভাল-মন্দ এককথায় বলা কঠিন। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের পুনর্গঠনে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান। সবটা রূপায়ণ করেন তাঁর বিদেশসচিব জর্জ মার্শাল, যা মার্শাল প্ল্যান নামে পরিচিত। মার্শাল প্ল্যানের সাফল্য দেখে ১৯৬১ সালে জন এফ কেনেডি ঠিক করেন United States Agency for International Development নামে একটা সংস্থা তৈরি করার। তিনি ফরেন অ্যাসিস্টান্স অ্যাক্ট আনেন ও এই আইনের আওতায় তৈরি হয় USAID. তবে, USAID-এ তালা পড়া মানেই বড়দার নজরদারি যে বন্ধ হয়ে গেল, তা কিন্তু বলা যাবে না। ট্রাম্পের আর্থিক নীতির একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে সরকারি খরচ কমানো। তাই তিনি USAID-এর ওপর লাগাম দিয়েছেন। 

আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নজরদারি ঠিকই চলবে। হয়তো সেটা এবার অন্যভাবে হবে। Big Brother is still watching you. ১৯৪৯ সালে ব্রিটিশ সাহিত্যিক জর্জ অরওয়েল তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস Nineteen Eighty four লেখেন। সেখানে ছিল ওশিয়ানিয়া নামে এক কাল্পনিক দেশে বিগ ব্রাদার নামে এক কাল্পনিক ডিক্টেটরের কথা। সে দেশে সবার ঘরে লাগান থাকত গোপন যন্ত্র। থট পুলিশ সেসবের মাধ্যমে নাগরিকদের কাজকর্মের ওপর নজর রাখত। অনেকটা অরুণ মুখোপাধ্যায়ের নাটকের গানের মতোই। আর সাধারণ মানুষকে তটস্থ রাখতে রাস্তায় ঝোলানো প্ল্যাকার্ডে লেখা থাকত Big Brother is watching you. এখন অবশ্য কেউ এসব বুক বাজিয়ে বলে না। এ সব জিনিসই চলে খুব গোপনে। বড়দারা অন্য দেশের বিরুদ্ধে আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়েন। যাকে বলা হয় ডিপ স্টেট কনস্পিরেসি।