Operation SINDOOR: সামরিক অভিযান নয়, অপারেশন সিঁদুর আসলে কী, কেন গুরুত্বপূর্ণ? জানালেন প্রাক্তন মার্কিন সেনাকর্তা
'আত্মনির্ভর ভারতের' মূল লক্ষ্য ছিল ভারতের প্রতিরক্ষা সেক্টরকে আরও শক্তিশালী করতে বিদেশের উপর নির্ভরতা কমানো। দেশীয় প্রযুক্তিতে উন্নত আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করা।

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই শুরু হয়েছিল ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র যাত্রা। ভারতের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করাই ছিল তার প্রধান লক্ষ্য। আর সেই পদক্ষেপই আমূল বদলে দিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে। বিদেশী অস্ত্রশস্ত্রের আমদানী কমিয়ে, দেশীয় অস্ত্রের উৎপাদন বৃদ্ধিতে নজর দেওয়া হয় বিদেশ ভাবে। কী ভাবে তা বদলে দিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষার মানচিত্রকে? কী ভাবে তা তুরুপের তাস হয়ে ধরা দিল ভারত-পাক সংঘাতের সময়? অত্যাধুনিক চিনা অস্ত্রকেই কী ভাবে ধূলিসাৎ করল ভারত?
ইন্ডিয়া’স অপারেশন সিঁদুর: এ ব্যাটেলফিল্ড ভারডিক্ট অন চাইনিজ ওয়েপনস- অ্যান্ড ইন্ডিয়া’স ভিক্টরি নামক বইতে তা বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন প্রাক্তন মার্কিন সেনাকর্তা এবং আধুনিক যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ জন স্পেনসার। তাঁর মতে তারই সঙ্গে ২০২০ সালে কোভিডের মতোই মহামারির মধ্যেই চিনের সঙ্গে শুরু হয় গালওয়ান উপত্যকায় সংঘাত। যার পরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের চাহিদা আরও বেশি করে প্রকট হয়ে ওঠে। যার জেরে মোদী লঞ্চ করেন ‘আত্মনির্ভর ভারত’।
‘আত্মনির্ভর ভারতের’ মূল লক্ষ্য ছিল ভারতের প্রতিরক্ষা সেক্টরকে আরও শক্তিশালী করতে বিদেশের উপর নির্ভরতা কমানো। দেশীয় প্রযুক্তিতে উন্নত আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করা। যার জেরে ভারত প্রতিরক্ষা ক্রয়ের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ সামগ্রী ৩০% থেকে ৬৫% এ বেড়েছে। যা এই দশকের শেষে ৯০% পৌঁছতে পারে।
এই সব কিছুর সুফল মিলেছে সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের সময়। একের পর দেশে তৈরি অস্ত্রশস্ত্রে বার বার সফল হয়েছে ভারত। উলটো দিকে চিনা অস্ত্র ব্যবহার করতে গিয়ে ফ্যাসাদে পড়েছে পাজি পাকিস্তান।
— John Spencer (@SpencerGuard) May 29, 2025
কোন কোন অস্ত্র খেলা দেখাল সংঘর্ষের সময়?
ব্রাহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল – রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ ভাবে নির্মাণ করা হয়েই ক্ষেপণাস্ত্র। যদিও তৈরি হয়েছে ভারতেই। গোটা বিশ্বে অন্যতম দ্রুততম ক্রুজ মিসাইল এটি। ২৯০-৫০০ কিলোমিটার পাল্লার সঙ্গে ম্যাক ২.৮-৩.০ গতিতে এগিয়ে যাওয়া এই মিসাইল রাডার স্টেশন থেকে বাঙ্কার ধ্বংস করতে পারে অনায়াসে। এর গতি এবং নিম্ন রাডার ক্রস-সেকশনের কারণে ব্রাহ্মোসে প্রতিহত করা প্রায় অসম্ভব।
আকাশতীর ডিফেন্স সিস্টেম – ডিআরডিও এবং ভারত ডায়নামিক্স তৈরি এই ডিফেন্স সিস্টেম যে কোনও পরিস্থিতিতে প্রায় সব রকমের শত্রু মিসাইলকে প্রতিহত কররা ক্ষমতা রাখে। এর রেঞ্জ প্রায় ২৫-৩০ কিলোমিটার।
শুধু এগুলিই নয়, আছে রুদ্রম অ্যান্টি রেডিয়েশন মিসাইল, ব্যাটলফিল্ড আইএসআর: নেত্রা এয়ারবর্ন আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল (AEW&C), লোয়ারিং গোলাবারুদ, D4S কাউন্টার-আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকেল (UAV) সিস্টেমের মতো একাধিক অস্ত্রশস্ত্র।
উল্টোদিকে পাকিস্তানের ভাণ্ডারে ছিল চিনা জেএফ-১৭ থান্ডার, আমেরিকার এফ-১৭ ফাইটিং ফ্যালকনস, রাশিয়ার এস-৩০০ এবং বাক সিস্টেম সমৃদ্ধ এইচকিউ-১৬ স্যাম সিস্টেমস সহ একাধিক বিদেশী অস্ত্র। যার ফল সংঘাতের আবহে পাক সেনার ভরাডুবি।
অপারেশন সিঁদুর কেবল একটি সামরিক অভিযান ছিল না। ছিল প্রযুক্তির প্রদর্শন। ভারতের ক্ষমতার ট্রেলার। ভারত বিশ্বকে দেখিয়েছে আধুনিক যুদ্ধে স্বনির্ভরতা কেমন হয়! প্রমাণ করেছে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ সমালোচনার মুখেও কাজ করে।





