Attack On Kashmir Economy: শুধু পর্যটকের মৃত্যু নয়, জঙ্গি হামলায় আহত কাশ্মীরের অর্থনীতিও!
Kashmir Economy: কাশ্মীরের অর্থনীতির মেরুদণ্ড আসলে পর্যটন শিল্প। সারা বছরে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা শুধু এই সেক্টর থেকেই আসে সে রাজ্যের অর্থনীতিতে।

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি আক্রমণ। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের বেশি পর্যটকের। আর এই ঘটনার পরই জোর ধাক্কা খেয়েছে কাশ্মীরের অর্থনীতি। গ্রীষ্মে কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পে জোয়ার আসে। দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটকরা বেড়াতে আসেন ভূস্বর্গে। আর গ্রীষ্মের ঠিক আগেই এই ধরণেই জঙ্গি হামলার ঘটনায় প্রশ্নের মুখে সে রাজ্যের নিরাপত্তার বিষয়টা।
কাশ্মীরের অর্থনীতির মেরুদণ্ড আসলে পর্যটন শিল্প। সারা বছরে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা শুধু এই সেক্টর থেকেই আসে সে রাজ্যের অর্থনীতিতে। জম্মু-কাশ্মীরের জিডিপির ৭-৮ শতাংশই আসে পর্যটন থেকে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই আয় ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে বলেই আশা করা হয়েছিল। পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভর করে সে রাজ্যে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ।
পর্যটনে অচলাবস্থা:
এই খবরটিও পড়ুন
পহেলগাঁওয়ে হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দেশজুড়ে কাশ্মীর ট্রিপের বুকিং ক্যানসেল করার ঢল দেখেছে। শ্রীনগর, গুলমার্গ, সোনমার্গ ও পহেলগাঁওয়ের বিভিন্ন হোটেলে বাতিল হয়েছে বুকিং। কাশ্মীরের বিভিন্ন হাউসবোট মালিক, ট্যাক্সিচালক, ঘোড়া চালক, হস্তশিল্প বিক্রেতা অর্থনৈতিক ঘাত নেমে এসেছে সকলের উপর। ‘এই রাজ্যের অর্থনীতির উপর এটা সরাসরি হামলা’, বলছেন এক স্থানীয় ব্যবসায়ী।
পহেলগাঁওয়ের আরু ভ্যালির বাসিন্দা, নিউ আইরবার্গ নামের একটি রিসর্টের মালিক খুরসিদ আহমদ ওয়ানিন বলছেন, “কাশ্মীরের পেটে লাথি মেরেছে, ওদের ক্ষমা নেই। এখানে যাঁরা ঘুরতে আসতেন, তাঁরা রীতিমতো পরিবার হয়ে উঠেছিলেন। জঙ্গিরা আমাদের পরিবারের গায়ে আঘাত দিয়েছে। এটা সহ্য করা হবে না।”
পেশায় ওষুধ বিক্রেতা মহম্মদ সফি খান শ্রীনগরের বাসিন্দা। তিনি বলছেন, “এই অন্যায়ের কোনও ক্ষমা নেই। ওদের পরিচয় শুধুই জঙ্গি। কাশ্মীরি মানুষররা মহেমানদের ধর্ম নিয়ে কখনও ভাবে না। যারা এটা করেছে, তারা আসলে কাশ্মীরকে ভিতর থেকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। না হলে, যে পর্যটকদের হাত ধরে কাশ্মীরের অর্থনীতি চলছে, সেখানে আঘাত হানল! ঘেন্না হচ্ছে ওদের উপর।”
পর্যটনের বাইরে অর্থনৈতিক ধাক্কা:
পহেলগাঁওয়ে হামলার প্রভাব শুধুমাত্র পর্যটন খাতে সীমাবদ্ধ, এমনটা নয়। এই হামলার কারণে বন্ধ রয়েছে শ্রীনগর সহ একাধিক শহরের বাজার, দোকান। জঙ্গি হামলার এই ঘটনায় কাশ্মীরে বিদেশি বিনিয়োগ আসাতেও প্রভাব পড়তে পারে। এ ছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পগুলোও দেরি হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ল এই কারণে।
পর্যটন ছাড়া কাশ্মীরের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রয়েছে রফতানির। কাশ্মীর থেকে আপেল, নাশপাতি, চেরি, আলুবোখরা, জাফরান ও আখরোটের মতো ফল রফতানি করে। এ ছাড়াও কার্পেট ও শালের মতো হস্তশিল্প এবং তাঁতজাত পণ্যও রফতানি করে তারা। এই সবের বাইরে কাশ্মীর দারুণ মধু ও জাফরান রফতানি করে। কাশ্মীরি জাফরান মনমাতানো স্বাদ ও গন্ধের জন্য গোটা পৃথিবীর মানুষের কাছে বিখ্যাত। আর পহেলগাঁওয়ের এই ঘটনার প্রভাব পড়তে পারে এই রফতানির ক্ষেত্রেও।
তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে রেকর্ড সংখ্যাক পর্যটক এসেছিল কাশ্মীরে। এবারের গ্রীষ্মে সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারত। এই জঙ্গি হামলা এই সম্ভাবনায় একেবারে জল ঢেলে দিল।
সরকারি প্রতিক্রিয়া:
ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের সঙ্গে ‘সিন্ধু জল বন্টন’ চুক্তি বাতিল করেছে মোদী সরকার। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানিদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বর্তমানে নিরাপত্তা বলয়ে একেবারে মুড়ে ফেলা হয়েছে কাশ্মীরকে। যদিও থমথমে হয়ে রয়েছে উপত্যকার পরিবেশ। স্থানীয় অনেক মানুষই এই ঘটনার কড়া জবাব দিতে চাইছে পাকিস্তানকে। ফলে, এই হামলা শুধুমাত্র নিরীহ পর্যটকদের উপর হামলা, এমন নয়। এই হামলা আসলে কাশ্মীরের অর্থনৈতিক স্বপ্নের উপর একটা বড় আঘাত, মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
This content contains news and analysis related to a recent terror attack in Kashmir. The content may include sensitive visuals and discussions that could be distressing to some readers. Readers discretion is advised.
We strongly condemn all forms of violence and terrorism. The purpose of this content is solely to inform and create awareness based on verified reports.





