AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Short Selling: শর্ট সেলিং কী? আদানির শেয়ার পতনে কীভাবে মুনাফা করতে পারে হিন্ডেনবার্গ?

Hindenburg Research: শর্ট সেলিং হল জটিল ট্রেডিং কৌশল। এটিকে এক ধরনের জুয়া বললেও অত্যুক্তি হয় না। সাধারণ লগ্নির থেকে এটি অনেকটাই আলাদা।

Short Selling: শর্ট সেলিং কী? আদানির শেয়ার পতনে কীভাবে মুনাফা করতে পারে হিন্ডেনবার্গ?
| Edited By: | Updated on: Feb 03, 2023 | 4:24 PM
Share

নয়াদিল্লি: আদানি গোষ্ঠী নিয়ে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই হইচই শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে। এই রিপোর্ট সামনে আসার পর থেকেই বড় ধাক্কা খেয়েছে আদানি গোষ্ঠী। হুড়মুড়িয়ে কমেছে আদানিদের শেয়ার দর। এই বিতর্ক আবহে শেয়ার কেনাবেচা সংক্রান্ত একটি শব্দবন্ধ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তা হল ‘শর্ট সেলিং’। শেয়ারে লগ্নির ব্যাপারে খুব অপরিচিত নয় এই শর্ট সেলিং। যদিও তা নিয়ে আমজনতা খুব একটা অবহিত নয়। তবে যাঁরা শেয়ার মার্কেটে কেনাবেচা করেন, তাঁদের কাছে এই শর্ট সেলিং মোটেই নতুন বিষয় নয়। শর্ট সেলিং এক ধরনের ট্রেডিং কৌশল। যদিও সাধারণভাবে লগ্নিকারীরা যে ভাবে কেনা বেচা করেন, তার থেকে এটি অনেকটাই আলাদা। পাশাপাশি এই ধরনের ট্রেডিং যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা।

শর্ট সেলিং কী?

শর্ট সেলিং হল জটিল ট্রেডিং কৌশল। এটিকে এক ধরনের জুয়া বললেও অত্যুক্তি হয় না। সাধারণ লগ্নির থেকে এটি অনেকটাই আলাদা। দ্য সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) জানাচ্ছে, শর্ট সেলিং হল নিজের মালিকানাধীনে না থাকা শেয়ার বিক্রি করা। এবং পরে দাম কমলে তা কিনে নেওয়া। বেশি দামে বিক্রি করে কম দামে কিনে লাভের চেষ্টা চলে এই ট্রেডিং কৌশলের মাধ্যমে। আসুন সহজে বোঝানো যাক শর্ট সেলিংয়ের বিষয়টি।

সাধারণ ভাবে, শেয়ার বাজারে লগ্নি করা কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা প্রথমে কোনও সংস্থার শেয়ার কেনেন এবং শেয়ার দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করেন। সেই শেয়ারের দাম বাড়লে তা বিক্রি করে দেন। এ ভাবে শেয়ার বিক্রি করে লাভ হয়। এটাই চিরাচরিত শেয়ার কেনা বেচা। এ ধরনের শেয়ার বিক্রির ক্ষেত্রে তা আগে কিনতে হয়। এবং শেয়ারের মালিকানা পেতে হয়।

কিন্তু শর্ট সেলিংয়ে বিষয়টি উল্টো। এই কৌশলে শেয়ারের মালিকানা না থাকলেও তা বিক্রি করে দেওয়া হয়। ধরে নেওয়া যাক, ‘এবি’ নামের একটি সংস্থার শেয়ার রয়েছে বাজারে। আপনার কাছে এই সংস্থার কোনও শেয়ার নেই। কিন্তু দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা বা অভ্যন্তরীণ খবরে আপনি জানতে পারলেন ওই সংস্থার শেয়ারের দাম কমতে পারে। তখন আপনি ওই সংস্থার কিছু শেয়ার বিক্রি করে দিলেন। শেয়ার মার্কেটেই এ ভাবে ট্রেডিংয়ের সুযোগ রয়েছে। ওই শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ার পর, তার দাম কমে গেলে আপনি কিনে নিলেন সেই শেয়ার। এর জেরে লাভ করলেন আপনি। এই পদ্ধতিই হচ্ছে শর্ট ট্রেডিং। কিন্তু আশা মতো দাম না কমলে ক্ষতির সম্ভাবনাও থেকে যায় এই ধরনের ট্রেডিং কৌশলে।

এই শর্ট সেলিং অনন্ত সময়ের জন্য করা যায় না। ভারতীয় শেয়ার বাজারে ট্রেডিংয়ের বিভিন্ন ধরন আছে। ইক্যুইটি, ফিউচার সহ অন্যান্য। প্রত্যেক ট্রেডিংয়ের কিছু নির্দিষ্ট নিয়মনীতি তৈরি করেছে সেবি। এই সব ট্রেডিং প্ল্যাটফর্মে শর্ট সেলিং করতে গেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করতে হয়। যেমন ইক্যুইটিতে শর্ট সেলিং করতে হলে দিনের দিন তা সেরে ফেলতে হবে। কিন্তু ইক্যুইটিতে সাধারণ শেয়ার কেনা বেচায় কোনও সময়ের সীমাবদ্ধতা থাকে না। অন্য দিকে ফিউচারে তা প্রতিমাসের শেষ বৃহস্পতিবারের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। অর্থাৎ শর্ট সেলিংয়ের জন্য ইচ্ছামতো সময় পান না বিনিয়োগকারীরা। যা এই ধরনের ট্রেডিংয়ের প্রতিবন্ধকতা।

‘শর্ট সেলিং’-এ মুনাফা হিন্ডেনবার্গের

আমেরিকান সংস্থা হিন্ডেনবার্গও শর্ট সেলিং করে থাকে। শর্ট সেলিংয়ে সিদ্ধহস্ত এই সংস্থা। আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের শর্ট সেলিংয়ের কথাও জানিয়েছে তারা। তবে শেয়ারের কত শতাংশ শর্ট সেলিং করেছে তা জানা যায়নি। এর আগে ইলেকট্রিক ট্রাক প্রস্তুতকারক আমেরিকান সংস্থা নিকোলা কর্পোরেশনের শেয়ারের শর্ট সেলিং করেছিল তারা। ওই সংস্থার বড় অঙ্কের শেয়ার শর্ট সেলিং করেছিল হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ।

‘শর্ট সেলিং’-এর ঝুঁকি

শর্ট সেলিং ট্রেডিং পদ্ধতি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের। সাধারণত যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে শেয়ার কেনা বেচার সঙ্গে যুক্ত এবং শেয়ার মার্কেটের ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ তাঁরাই এই ধরনের ট্রেডিং করে থাকেন। এ ব্যাপারে আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত বলেছেন, “শেয়ার মার্কেটে শর্ট সেলিংয়ের প্রচলন রয়েছে। সাধারণত যাঁরা শেয়ার কেনা-বেচার ব্যাপারে খুব সিদ্ধহস্ত, তাঁরাই পদ্ধতির আশ্রয় নেন। তবে শর্ট সেলিংয়ের ঝুঁকি অনেক বেশি। সাধারণ লগ্নিকারীদের এই ধরনের ট্রেডিংয়ে অংশ না নেওয়াই ভাল। না বুঝে এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে সাধারণ লগ্নিকারীদের টাকা লুঠও হয়ে যেতে পারে।”

শর্ট সেলিংয়ে ঝুঁকির বেশ কিছু সঙ্গত কারণ রয়েছে। প্রথমত, কোনও সংস্থার শেয়ারের দর কমতে পারে, এই অঙ্কের ভিত্তিতে শেয়ার ট্রেডিং করা হয়। কিন্তু শেয়ারের দাম কমার বদলে বেড়ে গেলে বিপুল ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হয়। দ্বিতীয়ত, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই ট্রেডিং করতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাম না কমলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। তৃতীয়ত, ব্রোকাররা অনুমতি দিলে তবেই শর্ট সেলিং করা যায়। চাইলেই কোনও বিনিয়োগকারী শর্ট সেলিং করতে পারেন না। সব মিলিয়ে শর্ট সেলিং খুব জটিল একটি ট্রেডিং পদ্ধতি। শেয়ারের ব্যাপারে দক্ষতা না থাকল এ পথে না হাঁটাই বুদ্ধিমানের কাজ।