Municipal Elections 2022: নদীই ঠিকানা, বছর ঘোরে জলে-চরে! তবু আজও কীসের আশায় ভোট দেন ওঁরা?
Municipal Elections 2022: সম্পূর্ন বেআইনিভাবে বেদখল হয়ে যাচ্ছে নদী। অনেকেই আবার সেই চর মোটা টাকায় কিনেও নিয়েছেন। নদী বিক্রি হচ্ছে কীভাবে তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
মালদা: নদীতেই বাস ওঁদের! কি শুনে আশ্চর্য হচ্ছেন? লক্ষাধিক মানুষের বাস এক আশ্চর্য দ্বীপে। গ্রীষ্মকালে নদীর জল শুকোলে থাকতে হয় চরে। আর জল বাড়লে বাকি ছয় মাস বাঁধ বা রাস্তার ধারের তাঁবুতে। এইভাবেই চলছে বছরের পর বছর। তবুও পুরভোটে ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে ওঁদের। ইংরেজবাজার পুরসভার চার থেকে পাঁচটি ওয়ার্ডে শুধুমাত্র ভোটারের সংখ্যা বাড়াতেই বছর বছর মালদা জেলার বিভিন্ন ব্লক, প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এসেছে বা আনা হয়েছে অসংখ্য পরিবার। দিনের পর দিন যাঁদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সম্পূর্ন বেআইনিভাবে বেদখল হয়ে যাচ্ছে নদী। অনেকেই আবার সেই চর মোটা টাকায় কিনেও নিয়েছেন। নদী বিক্রি হচ্ছে কীভাবে তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
TV9 বাংলার ক্যামেরাতেই ধরা পড়েছে নদীতে বসবাস করা সেই সব পরিবারের বর্তমান অবস্থা। নদীর চরে জায়গা কিনে তাঁদের বসবাসের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন কাউন্সিলররাই। নদীতে বসবাসকারী সেইসব মানুষ থেকে শুরু করে বিদায়ী কাউন্সিলর সকলেই স্বীকার করেছেন সেই কথা। কাউন্সিলররাই ভোটার লিস্টে নাম তোলার ব্যবস্থাও করিয়েছেন। গ্রামের ভোটারকে তুলে এনে রাখা হচ্ছে নদীতে। পরে পুরএলাকার ভোটার তালিকায় নাম তোলা হচ্ছে। ভোটের সময় এই মানুষগুলোর কদর খুব বেশি।
যদিও নদীর বুকে জল যখন কম সেই ছয়মাস তাঁরা সেখানেই থাকেন। বর্ষা এলেই নদী নিজের চেহারায় ফেরে, প্রতিবছর ডুবে যায় ঘর। সেই সময় বাঁধে বা উঁচু রাস্তার পাশে মাস ছয় তাঁবুতেই বসবাস। নদীর বুকে হলেও কাউন্সিলরদের ‘বদান্যতায়’ কারও কারও ঘরে বিদ্যুৎও চলে এসেছে। অধিকাংশের ঘরেই যদিও নেই। নেই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ। নোংরা কাদা জলে নিয়মিত ছড়ায় অসুখ। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থাও। সব থেকে বড় কথা তাঁদের আশ্রয় হয়ত আছে, কিন্তু ঠিকানা নেই।
মহানন্দা নদী কখনওই ঠিকানা হতে পারে না। তবুও ওঁরা ভোটার হয়ে যায় পুরসভার। বারে বারে জিতে আসা কাউন্সিলররা পুরভোট এলেই প্রতিশ্রুতির বস্তা নিয়ে ওঁদের কাছে নদীর ধারে হাজির হয়ে যান। এই বছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কারণ ইংরেজবাজার পুরসভার ৮ ৯,১২ ওয়ার্ডের প্রায় ৬০ শতাংশ ভোটই আসে নদীতে বসবাস কারীদের কাছ থেকে। যা স্বীকার করে নিয়েছেন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাত বার জিতে আসা কাউন্সিলর কাকলি চৌধুরী। তবে পুরভোটের ভোটার বাড়লেও সেচ দফতর এই নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ ওই সব ভোটারদের ঠিকানা যে নদী।
কাকলি বলেছেন, “ওঁদের জন্য কিছু করার কথা ভাবা হচ্ছে। ওঁদের কথা মাথায় রয়েছে।” তবে ক্যামেরার সামনে সেভাবে কিছু বলতে চাননি ওই মানুষগুলো। তাঁদের এক জনের কথায়, “মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকো আছে, এটাই বলতে পারি। না হলে খোলা আকাশের নীচে দাঁড়াতে হবে। প্রশাসন দেখি কবে কী করে!”
আরও পড়ুন: ‘শুভেন্দুর মেজাজ হারানো স্বাভাবিক, ওতে আমি কিছু মনে করি না’