Abhishek Chatterjee: প্রয়াত অভিনেতা অভিষেকের দেওয়া নোয়া হাতে রেখেই সিঁদুরখেলায় মেতে উঠবেন সংযুক্তা

Sanjukta Chatterjee: বাল্য়-বিবাহ, বিধবা-বিবাহ, নারী শিক্ষা... সমাজের বদলাতে থাকা গঠন ধীরে-ধীরে প্রাণের সঞ্চার করেছে নারীর। কিছুদিন পর থেকে শুরু হচ্ছে দেবীপক্ষ। চিরকাল পুরুষরাই পাল্টে এসেছে সমাজে নারীর অবস্থানের ঠিকানা। একবিংশ শতাব্দীতে পাল্টেছে সেই চিত্র। নারীরাই পারে বদলাতে, বদল আনতে।

Abhishek Chatterjee: প্রয়াত অভিনেতা অভিষেকের দেওয়া নোয়া হাতে রেখেই সিঁদুরখেলায় মেতে উঠবেন সংযুক্তা
অভিষেক এবং সংযুক্তা।
Follow Us:
| Updated on: Oct 11, 2023 | 11:05 AM

স্নেহা সেনগুপ্ত

২০২১ সালের ২৪ মার্চ হঠাৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন বাঙালি অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয় গোটা টলিউড। ভেঙে পড়েন তাঁর স্ত্রী সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায় এবং কন্যা ডল। কিন্তু তাঁরা কোনও দিনও অভিষেককে চিরবিদায় দেননি এবং দেবেনও না। তাঁর কারণ অভিষেক নিজেই। সংযুক্তা বিশ্বাস করেন, অভিষেক কেবলই দেহত্যাগ করেছেন। তিনি আজও উপস্থিত স্ত্রী-সন্তানের কাছেই। নানা বিষয়ে বারবারই অভিষেকের উপস্থিতি টের পান সংযুক্তা। তিনি মনে করেন, অভিষেক তাঁদের দেখতে পাচ্ছেন, তাঁদের কথা শুনতেও পাচ্ছেন নিয়ত।

গত বছর তাঁদের বাড়িতে দুর্গাপুজো করেননি সংযুক্তা। মেয়ে ডলকে সঙ্গে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন কেরল ঘুরতে। এবার নিজ দায়িত্বে সংযুক্তা করবেন মায়ের পুজো। তাঁদের প্রিন্স আনওয়ার শাহ রোডের অ্যাপার্টমেন্টে ষষ্ঠী থেকে দশমী, সব নিয়মই পালন করবেন অভিষেক-জায়া। প্রতিবার যে গুরুদায়িত্ব থাকত একা অভিষেকের কাঁধেই…

দুর্গাপুজো যখন হবে সিঁদুর খেলাও হবে ধুমধাম করে। অভিষেক নেই। তবে সমাজের বেঁধে দেওয়া নিয়ম বলছে, পতির প্রয়াণ ঘটলে ‘বিধবা’দের সিঁদুর খেলতে নেই। হয়তো অনেকেই এই প্রথা মেনে চলেন। কিন্তু সংযুক্তা আজকের যুগের মুক্তমনা ব্যক্তিত্ব। তাঁর ব্যাখ্যা অনুপ্রেরণা জোগাতে পারে। তৈরি করতে পারে প্রেমের নয়া সংজ্ঞাও।

(বাঁ দিক থেকে) সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায়; অভিষেকের দেওয়া নোয়া কোনওদিনও খুলবেন না সংযুক্তা

শরীর নশ্বর। কিন্তু আত্মা অবিনশ্বর। সংযুক্তার কাছে প্রেমও তাই। শুরু থেকেই তাই-ই বলে চলেছেন সংযুক্তা। TV9 বাংলাকে তাঁর এবারের সিঁদুর খেলা সম্পর্কে সংযুক্তা বলেছেন, “আমি এবার সিঁদুর খেলব। মায়ের পায়ের সিঁদুর। আমি এখনও অভিষেকের স্ত্রী। অভিষেক সশরীরে নেই। কিন্তু আমি এখনও তাঁরই স্ত্রী। সেটাই আমার একমাত্র পরিচয়। বিয়ের সময়ে অভিষেক আমার কপালে সিঁদুর পরিয়েছিলেন। আমরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলাম। তাই ওটা আমি ওর জন্য পরতেই পারি।” সেই সঙ্গে সংযুক্তার সংযোজন, “এখন যদি আমি অভিষেককে ভুলে অন্য কাউকে বিয়ে করতাম, তবেই আমার সঙ্গে আক্ষরিক অর্থে বিচ্ছেদ হত অভিষেকের। নচেৎ নয়। আর সেই সম্ভাবনা নেইও। আমি ওঁর স্ত্রী হয়েই থাকব আজীবন। এই পরিচয়টা আমি ভালবাসি অন্তর থেকে। সমাজের কোনও রীতি এর বিরুদ্ধে নিয়ে যেতে পারবে না আমাকে। আমি এখনও ওর দেওয়া নোয়া আমার হাতে পরি।” ছবি পাঠিয়েছেন সংযুক্তা। সঙ্গে এটাও বলেছেন, “এটা সম্পূর্ণ আমার নিজের অভিমত। কারও সঙ্গে না-ও মিলতে পারে। না মিললেও কোনও ব্যাপার না।”

অভিষেকের মৃত্যুর পর মানসিক যন্ত্রণা পেয়েছিলেন সংযুক্তা। তখন তাঁকে সেই যন্ত্রণা থেকে বের করেছিলেন খোরশেদ ভাবনাগ্রির ‘দ্যা লজ় অফ দ্যা স্পিরিট ওয়ার্ল্ড’ বইটি। মৃত্যুর পর জীবনের অস্তিত্ব কোথায়, খোঁজার চেষ্টা করেছেন সংযুক্তা। তাতেই তাঁর মনে হয়েছে অভিষেক ছেড়ে যাননি তাঁকে। দাবি করেছেন, সেই নানা ঘটনায় সেই প্রমাণও তিনি পেয়েছেন। বলা ভাল, মৃত্যুই আরও অনেকটা কাছাকাছি এনে দিয়েছে তাঁদের। এই কাছে আসা যেন চিরন্তন। এর কোনও ব্যাখ্যা নেই সংযুক্তার কাছেও।