Jhilam Gupta: অসহায় পশু-পাখিদের স্বার্থে প্রথম বইয়ের প্রথম মুদ্রণের রয়্যালটির পুরো টাকা দান করবেন ডিজিটাল ক্রিয়েটার ঝিলাম
Jhilam Gupta: রবিবার অভিযান বুক ক্যাফেই উন্মোচন হয়ে গেল ঝিলামের এই ভূতের বই: 'আঁধার, আটটি ভয়ের গল্প'। কিন্তু হঠাৎ ভূতের গপ্পো কেন ফাঁদলেন শ্রীরামপুরের এই চুল কোঁচকানো মেয়েটি?
মৌমিতা দাস
গোটা কলকাতা ভিজে চুপসে একাকার। কলেজ স্ট্রিটের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের চত্বরটা প্রায় শুনশান। ভেজা পিচ রাস্তার অল্প-অল্প জমে থাকা জল চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে মাঝে মাঝে চলে যাচ্ছে এক-আধটা বাস, ট্যাক্সি। বৃষ্টি বাড়ছে, কমছে—কিন্তু পুরোপুরি থামছে না। রবিবার, সেপ্টেম্বরের ১১-য় শহর জুড়েই বৃষ্টি হল। আর ‘আঁধার’ ঘনিয়ে এল কলেজ স্ট্রিটের অভিযান বুক ক্যাফেতে। ঠিক সন্ধে নামার আগেই…
ভিডিয়ো কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে পরিচিত মুখ ঝিলাম গুপ্ত এবার একেবারে অন্য ভূমিকায়। ঝিলাম এবার গল্পকারের ভূমিকায়। ঝিলামের বই বেরনোর খবরটা হাওয়ায় ভাসছিল বেশ কয়েকদিন ধরেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝিলাম সাধারণত যে ধরনের কনটেন্ট আপলোড করেন, তার সঙ্গে হয়তো তাঁর সাম্প্রতিকতম লেখক অবতারের তেমন যোগসূত্র নেই। ফলে আপাতদৃষ্টির ওই ‘উড়ো’ খবর শুনে এনেকেরই মনে হয়েছিল স্রেফ মজার কয়েকটা গল্পই সুন্দর করে সাজানো থাকবে রঙিন মলাটের ভিতর। কিন্তু এ তো পুরো উল্টো কেস! একটা না, দু’টো না, খান আষ্টেক ভয়ের গল্প নিয়ে হাজির ঝিলাম। রবিবার অভিযান বুক ক্যাফেই উন্মোচন হয়ে গেল ঝিলামের এই ভূতের বই: ‘আঁধার, আটটি ভয়ের গল্প’। কিন্তু হঠাৎ ভূতের গপ্পো কেন ফাঁদলেন শ্রীরামপুরের এই চুল কোঁচকানো মেয়েটি? “আমার বাড়িতে অনেক ভূত আছে। মানে, বাড়ির যে দিকেই তাকাবেন, সে দিকেই নজরে আসবে একটা না একটা ভূতের বই। বাবা-মা দু’জনেই বড্ড ভালবাসে ভূতের গল্প পড়তে। তাই-ই ভাবলাম, একটা ভূতের গল্পই লিখে ফেলি। অন্তত, একটা বই তো কিনতে হবে না, ফ্রি-তেই পাওয়া যাবে,” স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় হাসতে-হাসতে উত্তর ঝিলামের। ভূতের গল্পের বই প্রকাশ্যে আনার জন্য ঝিলামকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছে আবহাওয়া। ঝমাঝম বৃষ্টি, শুনশান রাস্তা, হালকা শীত-শীতভাব, কলেজ স্ট্রিটের ছোট্ট বই ক্যাফেতে ভূতের বই প্রকাশের আবহ জমে গিয়েছিল রবিবার। বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য, অঙ্কনশিল্পী কুশল ভট্টাচার্য ও ঝিলামের বেশ কিছু কাছের মানুষ। ঝিলামের বইটি প্রকাশ করেছে বইটই, ভূত-টূতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রচ্ছদটি এঁকেছেন শ্রীময় দাস। ভূমিকা লিখে দিয়েছেন গায়ক-লিরিসিস্ট-চলচ্চিত্র পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
তবে শুধুই বইপ্রকাশই নয়, সঙ্গে ছিল ঝিলামের একটি ঘোষণাও। ‘আঁধার’-এর প্রথম মুদ্রণের রয়্যালটির পুরো অংশটাই ঝিলাম তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেসবুক পেজ ‘স্কুবি দ্য প্রাউড ইন্ডি’ পেজের জয়িতাকে। কী করে এই পেজটি? রাস্তার অসহায় পশু-পাখিদের জন্য নিবেদিত প্রাণ এই পেজের জয়িতা। বেশিরভাগ সময় নিজের গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে, কখনও আবার ফান্ড তুলে পশু-পাখির সেবা, খাওয়া-দাওয়া বা চিকিৎসায় লাগায়। ঝিলাম নিজেও পশুপ্রেমী। তা-ই নিজের প্রথম বইকে তিনি জড়িয়ে রাখলেন তাঁর আরেক ভাললাগার সঙ্গে।