Chiranjeet Chakraborty: অসীমের হিজিবিজি কার্টুন দু’মিনিটে আঁকলেন চিরঞ্জিত; মুগ্ধ সোহম, কাঞ্চন
MLA's of West Bengal: TV9 বাংলাকে চিরঞ্জিত বলেছেন, "ভিডিয়োটা কী মজার না...? রাজ তুলেছে। অনেকে জানতেন না আমি এত জলদি কার্টুন আঁকতে পারি..."

মাঠে ময়দানে ভয়ানক প্রতিপক্ষ তাঁরা। পথে-ঘাটে ঝাঁঝালো শব্দে একে-অপরকে কটাক্ষ করতে ছাড়েন না। আর বিধানসভার অন্দরে? কীভাবে কাজ করেন তৃণমূল-বিজেপি দলের বিধায়করা? সেখানেও কি চুলোচুলি হয়। নাকি হয় অন্যকিছু… সেই ভিডিয়োই এবার ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়ায়।
২০২১ সালের পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তারকা বিধায়কদের ভিড় বেড়েছে। সংযোজিত হয়েছেন রাজ চক্রবর্তী, কাঞ্চন মল্লিক, জুন মালিয়া, অদিতি মুন্সিরা… সুতরাং, গ্ল্যামারখচিত বিধানসভা বলা যেতেই পারে। অ্য়াসেম্বলি আলো করে থাকেন চিরঞ্জিত, সোহম চক্রবর্তীরা। তাঁরা কোন পরিবেশে কাজ করেন, কতখানি মিলেমিশে থাকেন, সেই ছবিই এবার সকলের চোখের সামনে।
পরিচালক-বিধায়ক এবং কমিটির চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তীর তৈরি একটি ভিডিয়ো এখন ভাইরাল। সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার A4 সাইজ়ের একটি কাগজে ইংরেজি সংখ্যা ‘8’ (আট) লিখেছেন এবং সেই সংখ্যার উপর পেন দিয়ে পলকে একটি কার্টুন এঁকেছেন বারাসাতের তৃণমূল বিধায়ক অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। বিধানসভার তথ্য-সংস্কৃতি বিভাগে ঘটেছে ঘটনাটি। এবং কেবল আজ নয়। এমনটা নাকি হামেশাই ঘটে থাকে। কাজের ফাঁকে ‘ব্রেক’ নিয়ে চলে সিনেমার গল্প, গান…
বিজেপি-তৃণমূলের দলীয় কোন্দলের বাইরে বিধানসভার অন্দরে সহকর্মী হিসেবে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ভিন্ন দলের বিধায়কদের ‘ওয়ার্ক কালচার’ নিয়ে যেমন বাহবা এসেছে, তেমনই কটূক্তিও জুটেছে। ভাইরাল ভিডিয়োর নীচে কেউ-কেউ লিখেছেন, “এসব না করে কাজ করুন তো”। সেই কারণে ভিডিয়ো চলাকালীন বিধায়ক অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক উল্লেখ করে দিয়েছেন ‘কাজের ফাঁকে’ এমনটা করেছেন তাঁরা। কাঞ্চনই বলেছেন, আইএনসিএর স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিংয়ের ফাঁকে রয়েছেন তাঁরা। এবং তখনই অসীমবাবুর ‘8’ সংখ্যাকে এক দারুণ আর্টুনে রূপান্তরিত করেছেন চিরঞ্জিত।
কাঞ্চন এও বলেছেন, “আমাদের বিভাগটা তো তথ্য-সংস্কৃতির বিভাগ। সংস্কৃতি চর্চাই হচ্ছে।” রাজ চক্রবর্তী বলেছেন, “অসীমদা ‘8’ লিখে দিয়েছিলেন, সেখান থেকেই দীপকদা (পড়ুন চিরঞ্জিত) একটা কার্টুন এঁকে দিলেন।”
কার্টুন এঁকে তাতে নিজের সই করে দিয়েছিলেন চিরঞ্জিত। গোটা বিষয়টি দারুণ উপভোগ করছিলেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত অভিনেতা-বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। চিরঞ্জিতকে আঙ্কল সম্বোধন করে তিনি বলেন, “আঙ্কলকে দেখে বড় হয়েছিল। যেটা ভাল লাগল, অনেক বছর পর আঙ্কলের অটোগ্রাফটা দেখলাম আবার।” সোহম যখন শিশুশিল্পী, তখনই তাঁর সঙ্গে ছবিতে অভিনয় করেছেন চিরঞ্জিত। সেই থেকে চিরঞ্জিতকে আঙ্কল বলে ডাকেন সোহম। সোহম সম্পর্কে চিরঞ্জিত বলেন, “এইটুকু ছিল, আদো-আদো কথা বলত তখন। গানের পারসেপশন ওর ছোট থেকেই খুব ভাল।”
ভিডিয়ো শেষ হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে রাজ বলেন, “আমরা যখন অ্যাসেম্বলিতে আসি, কাজের সঙ্গে-সঙ্গে আড্ডাটাও মারি। গানবাজনা করি।” আর ঠিক তখনই খালি গলায় গেয়ে ওঠেন চিরঞ্জিত, “এ সবই আমার মনের কোণের বাইরে…”
‘8’ কিংবা ‘ত্রিকোণ’ থেকে আস্ত কার্টুন এঁকে ফেলতে পারেন চিরঞ্জিত। অনেকেই জানেন তিনি কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে। ছোটদের সন্দেশ পত্রিকায় সত্যজিৎ রায় ছাড়া যে ব্যক্তি প্রচ্ছদ এঁকেছিলেন তিনি চিরঞ্জিত। বিধানসভার ঘরে চলজলদি তাঁর কার্টুন আঁকা দেখে সকলেই অবাক হয়ে গিয়েছেন। তাঁর এই গুণের কথা জানতেন না অনেকেই। খুশি মনে TV9 বাংলাকে চিরঞ্জিত বলেছেন, “ভিডিয়োটা কী মজার না…? ভিডিয়োটা রাজ তুলেছে। অনেকে জানতেন না আমি এত জলদি কার্টুন আঁকতে পারি। বিজেপির অসীমবাবু বলছিলেন, সেটা নাকি তিনি বাঁধাবেন। আমি বললাম, এত ছোট ছবি কেন বাঁধাবেন। বড় কাগজে বলেছি এঁকে দেব। সেটা বাঁধাতে বলেছি… আমরা কিন্তু এভাবেই হাসিমজায় কাজ করি। এতটাই আনন্দ করি সকলে মিলে।”





