Exclusive Jean-Luc Godard: ‘প্রেক্ষাগৃহে চলছে আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য ‘আদিউ গদার’, তার মধ্যেই তিনি চলে গেলেন’, শোকস্তব্ধ পরিচালক অমর্ত্য ভট্টাচার্য

Amartya Bhattacharya: TV9 বাংলার কাছে শোক জ্ঞাপন করেছেন পরিচালক অমর্ত্য ভট্টাচার্য। কাকতালীয় ভাবে গদারের প্রতি উৎসর্গ তাঁর এই চলচ্চিত্র 'আদিউ গদার' এই মুহূর্তে দেখানো হচ্ছেন ওড়িশায়। ১৬ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাবে কলকাতা ও মুম্বইতেও।

Exclusive Jean-Luc Godard: 'প্রেক্ষাগৃহে চলছে আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য 'আদিউ গদার', তার মধ্যেই তিনি চলে গেলেন', শোকস্তব্ধ পরিচালক অমর্ত্য ভট্টাচার্য
অমর্ত্যর শ্রদ্ধার্ঘ্য...
Follow Us:
| Updated on: Sep 13, 2022 | 4:15 PM

স্নেহা সেনগুপ্ত

বাঙালি পরিচালক অমর্ত্য ভট্টাচার্যর গদারের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য একটি সিনেমা। তিনি তৈরি করেছেন এমন এক ছবি, যে ছবির নামের মধ্যেই জ্বলজ্বল করছেন স্বয়ং জঁ লুক গদার। ছবির নাম ‘আদিউ গদার’। ওড়িয়া ভাষায় তৈরি এই ছবি ইতিমধ্যেই ২০২২ সালের কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা ছবি হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে। তা ছাড়া কেরল, মস্কোর মতো দেশ-বিদেশের নানা জায়গায় বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে জায়গা পেয়েছে। পেয়েছে একাধিক পুরস্কার ও সম্মান। আজ বিশ্ব সিনেমার জন্য একটা কালো দিন। কেননা, আজ ১৩ সেপ্টেম্বর, ৯১ বছর বয়সে সকলকে চিরবিদায় জানিয়েছে চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন জঁ লুক গদার। অমর্ত্যর মতো বহু গদারপ্রেমীর কাছে আজকের দিনটা তাই ‘আনলাকি ১৩’…

TV9 বাংলার কাছে শোক জ্ঞাপন করেছেন পরিচালক অমর্ত্য ভট্টাচার্য। কাকতালীয় ভাবে গদারের প্রতি উৎসর্গ তাঁর এই চলচ্চিত্র ‘আদিউ গদার’ এই মুহূর্তে দেখানো হচ্ছেন ওড়িশায়। ১৬ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাবে কলকাতা ও মুম্বইতেও।

কাকতালীয় যোগ:

অমর্ত্য: আমি এখনই খবর পেলাম জঁ লুক গদার মারা গিয়েছেন। ঠিক ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না কেমন অনুভূতি হচ্ছে। ধাক্কা বলব কি না জানি না। কারণ, এটা প্রকৃতির নিয়ম। ‘জন্মিলে মরিতে হইবেই’। সুতরাং, সত্য নেমে নেওয়া ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই। তবে কাকতালীয় বিষয় এটাই, যে সময় আমার ছবি ‘আদিউ গদার’ মুক্তি পেল, ঠিক তখনই গদার চলে গেছেন। সকাল থেকেই ‘আদিউ গদার’কে নিয়ে পোস্ট করছি এবং প্রচার করছি। জানতে পারলাম গদার আর নেই। অদ্ভুত ধাক্কা লাগল বিশ্বাস করুন। এই ধাক্কায় এখনও ধাতস্থ হতে পারিনি। ভাষা হারিয়ে ফেলছি…

কেন এই শ্রদ্ধার্ঘ্য?

অমর্ত্য: আমার কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পরিচালক জঁ লুক গদার। তিনি যেভাবে সিনেমার ভাষাকে ভেঙেছেন এবং গড়েছেন, তার জন্য সাহস প্রয়োজন। কেবল তাই-ই নয়। পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে সেই সাহস ও আগুন ছড়িয়ে দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস এই আগুন জ্বলবে। জঁ লুক গদার বেঁচে থাকবেন। আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও তিনি বেঁচে থাকবেন। কারণ তিনি সিনেমাকে যেটা দিয়ে গিয়েছেন, সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমি কথা খুঁজে পাচ্ছি না। মানসিকভাবে বিচলিত বোধ করছি। আমি চাইব গদারকে উদযাপনের মধ্যে স্মরণ করতে। ভালবাসা এবং ওঁর ছবির মধ্যে ওঁকে স্মরণ করতে চাই। চিরকালই জেনে এসেছি, সৃষ্টিশীল মানুষ বিরহ চান না। তাঁরা চান না উদাসীনতা। তাঁরা গড়তে চান। তাই বলছি, নতুন উদ্যোগে সিনেমা জেগে উঠুক।এটাই বোধহয় জঁ লুক গদারও চাইতেন।

কেবল ফ্রেঞ্চ-সুইস সিনেমায় বাঁধা যাবে না জঁ লুক গদারকে

অমর্ত্য: কেবল ফ্রেঞ্চ-সুইস সিনেমা নির্মাতা হিসেবে জঁ লুক গদারকে দেখা আমার পক্ষে যথেষ্ট হয়। সেটা করলে সংকীর্ণতার পরিচয় দেওয়া হবে। তিনি আমাদেরও। তিনি ভারতীয়দের। তিনি আমেরিকানদের। রাশিয়ানদের। তিনি বিশ্বের। তিনি ইউনিভার্সাল। তাঁর সিনেমা আমাদের মধ্যে আজীবন বেঁচে থাকবে। তিনি বেঁচে থাকবেন আমাদের মস্তিষ্কে। কারণ, তিনি মস্তিষ্ককে নাড়িয়ে দেওয়ার, ঝাঁকিয়ে দেওয়া সিনেমা তৈরি করেছেন। চেতনাকে আন্দোলিত করার সিনেমা তৈরি করেছেন জঁ লুক গদার। নিজের তৈরি করা ব্যাকরণও তিনি ভেঙেছেন। এমন নিদর্শন কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। আজ তিনি চলে গেলেন। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন। দিনটা ‘আনলাকি ১৩’।

‘আদিউ গদার’ কি গদার দেখেছিলেন?

অমর্ত্য: জঁ লুক গদারের অফিস পর্যন্ত পৌঁছেছিল আমাদের ছবি। কিন্তু ওঁর থেকে প্রতিক্রিয়া আমি এখনও পর্যন্ত পাইনি। কাজেই আমি এটা বলতে পারব না যে, গদার স্বচক্ষে আমার ছবিটি দেখেছেন কি না।

বাঙালি পরিচালকের ছবি ‘আদিউ গদার’ ওড়িয়া ভাষায় কেন?

অমর্ত্য: এর কারণ, ছবির যে প্রেক্ষাপট, যে গ্রাম আমি দেখাতে চেয়েছি, সেই গ্রামটি রক্ষণশীল। সেখানে গদার একেবারেই অপরিচিত একজন মানুষ। সেখানে কেউই গদারের নাম শোনেননি। তিনি কে, কেউ তা জানেন না। এটা কিন্তু একটা মজার সিনেমা। একটা কমেডি স্যাটারায়। আমি যদি বৈপরীত্য তৈরি করতে পারি, তবেই আমার সুবিধে। বাংলায় এটা করা তেমন সুবিধের নয়। কেননা, একটা সময় বাংলাতেই ছিল ইংরেজদের রাজধানী। বাংলার মানুষরা বিদেশি ছবি-সাহিত্যের অনেককিছু জানেন। গদারের নাম অন্তত শুনেছেন। কিন্তু ওড়িশার এই গ্রাম, কিংবা ছত্তিসগড়ের কোনও গ্রামের মানুষের কাছে গদার অপরিচিত। এছাড়া, ওড়িয়া ভাষাটাও আমার জানা। কর্মসূত্রে সেখানেই ১০ বছর রয়েছি, তাই ওড়িয়া ভাষাতেই ছবিটা তৈরি করলাম।