Tollywood Inside: এই বছরেই বিয়ে হত তাঁরও, সৌরভের বিয়েতে এসে যা বললেন সব্যসাচী…
Tollywood Inside: সৌরভের ভীষণ কাছের বন্ধু সব্যসাচী চৌধুরী বিয়েবাড়িতে এলেন রাত ১০টার কিছু পর। পোশাক এক্কেবারে ছিমছাম। চরিত্রের প্রয়োজনে গালের দাড়ি বেড়েছে আরও খানিক। কালচে নীল পাঞ্জাবি আর সেই পরিচিত হালকা হাসি, যে হাসিমুখ দেখে ভেসে যেত সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা।
“ডিসেম্বর এর শহরে/চেনা শুভেচ্ছা চেনা সেলফোন,/ডিসেম্বর এর শহরে/সবই নিয়নের বিজ্ঞাপনডিসেম্বর এর শহরে/চেনা বন্ধু চেনা নিকোটিন,/ডিসেম্বরের শহরে/ভালোবাসা যেন পোর্সেলিন”… ‘উইথ লাভ, ক্যালকাটা’ নাটকের গানের শুরুর দিকে ছিল এই কয়েকটা লাইন। ১৫ ডিসেম্বর, শুক্রবার সন্ধ্যা শেষ হয়ে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস সংলগ্ন বিবাহ বাসরে তখন সেলিব্রিটি কাপল (সৌরভ দাস-দর্শনা বণিক)-এর ‘চেনা বন্ধু’-বান্ধবীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। সৌরভ-দর্শনার সিঁদুরদান, মালাবদল-সহ প্রায় যাবতীয় আচার যখন সম্পন্ন, তখন অগুণতি ‘চেনা শুভেচ্ছা’র ভিড়কে একপ্রকার স্তিমিত ভাবে পাশ কাটিয়ে এলেন তিনি। ইন্ডাস্ট্রির একের পর এক রথি-মহারথির গ্ল্যামারাস উপস্থিতির মধ্যেও ভিড় ভেদ করে ভেসে এল ফিসফিসে প্রশ্ন, ‘এসেছেন তবে?’ হ্যাঁ—‘ইয়ার কি শাদি’ বলে কথা।
সৌরভের ভীষণ কাছের বন্ধু সব্যসাচী চৌধুরী বিয়েবাড়িতে এলেন রাত ১০টার কিছু পর। পোশাক এক্কেবারে ছিমছাম। চরিত্রের প্রয়োজনে গালের দাড়ি বেড়েছে আরও খানিক। কালচে নীল পাঞ্জাবি আর সেই পরিচিত হালকা হাসি, যে হাসিমুখ দেখে ভেসে যেত সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা। গত বছর, ২০২২-এ প্রেমিকা ঐন্দ্রিলা শর্মার মৃত্যুর পর যাঁকে কেন্দ্র করে আবেগঘন হয়ে পড়েছিলেন নেটিজ়েনদের বিরাট অংশ। সব্যসাচীর দীর্ঘদিনের পরিচিত অভিনেত্রী তৃণা সাহা। প্রিয় ‘সব্য’কে দেখে এগিয়ে গেলেন তিনি। ধরলেও জড়িয়েও, সব্যও সাড়া দিলেন… মাঝখানে বজায় রইল পরিশীলিত দূরত্ব।
View this post on Instagram
নবদম্পতি (সৌরভ-দর্শনা) কাছের বন্ধুকে দেখতে পেয়েই জায়গা ছেড়ে উঠে এসে হাসিমুখে পোজ় দিলেন। ছবি তুললেন। তা শেষ হতেই আমন্ত্রিতদের সঙ্গে সাময়িক বাক্যালাপের পর হঠাৎ করেই ভিড় থেকে উধাও হয়ে গেলেন সৌম্যদর্শন। ফের দেখা মিলল খাওয়ার জায়গায়। TV9 বাংলার প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা হতেই আবারও সেই হাসি। কখন এলেন, জিজ্ঞাসা করতেই উত্তর, “এই তো একটু আগেই। আসলে শুটিং থেকে এলাম তো…।” এরপর নিজেই বললেন, “আমি আর যাই কোথায়?” এই ‘কোথায়’ শব্দের মধ্যে কি নিহিত একরাশ বেদনা? মাত্র ২৫ দিন আগেই যে ছিল ঐন্দ্রিলার মৃত্যুবার্ষিকী (২০ নভেম্বর, যে দিন এক্সক্লুসিভলি TV9 বাংলার সঙ্গে কথাও বলেছিলেন সব্যসাচী) যেন নিজেই উত্তর দিয়ে দিলেন সব্যসাচী, “সৌরভ এত কাছের। ওরটাতে তো আসতেই হতো।”
ঐন্দ্রিলা শর্মা যখন হাসপাতালে লড়ছিলেন, হাসপাতালের বাইরে বিনিন্দ্র রাত কাটাতেন সব্যসাচী, এ তথ্য নতুন নয়। সেই কঠিন সময়ে ইন্ডাস্ট্রির যে মানুষটা তাঁকে আগলে রেখেছিলেন তিনিই সৌরভ দাস। সব্যসাচীর সঙ্গে রাত জাগা, পাশে থাকা… মিডিয়ার চাপ সামলানো থেকে শুরু করে সবকিছু করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকেই। আর সেই কারণেই কোথাও গিয়ে দর্শনা বণিকও মনে-মনে ভালবেসে ফেলেছিলেন সৌরভের ওই মনটাকে। যে মন বন্ধুর পাশে থাকে, আগলে রাখে, ভালবাসে। এই বছরেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল সব্যসাচীর। মার্চ মাসের দ্বিতীয় রবিবার এক হতেন তাঁরা। তা হয়নি… তবে বিপদের বন্ধুকে ভোলেননি তিনি… সে প্রমাণই ফিলল ১৫ ডিসেম্বরের রাতে। দায়িত্ব পালন, নাকি নতুন করে জীবন সাজানো আবারও? আলোর রোশনাই, জমকালো পোশাক, সেলফি তোলার অনুরোধ, বন্ধুদের আড্ডার মাঝেও তিনি স্বতন্ত্র, ধীর, স্থিতধী, সাধনায় মগ্ন সত্যিকারের কোনও পৌরাণিক চরিত্র।
যে ‘উইথ লাভ, ক্যালকাটা’-এর গান দিয়ে শুরু হয়েছিল এই প্রতিবেদন, সেই লিরিক্স দিয়ে শেষটাও হোক: “ডিসেম্বরের শহর থেকে যায় অপেক্ষায়/প্রাক্তন ভালবাসা নিয়ে, প্রাক্তন কলকাতায়।” আসলে এ শহরে ডিসেম্বরের শীত পড়লে ভালবাসারা, বন্ধুত্বরা শুকিয়ে যায় না, বরং আরও উষ্ণ হয়ে ওঠে। কোনও সম্পর্কই তো কখনও ‘প্রাক্তন’ হয় না আসলে…