উত্তম কুমার পণ নেননি, তবে গৌরী দেবীদের থেকে এই জিনিসটি চাওয়া হয়েছিল…
এরপর মহাধূমধামে বিয়ে হয় তাঁদের। উত্তম কুমারের জীবনে নানা অধ্য়ায়ে নানা অভিনেত্রী জায়গা করে নিলেও, তিনি কোনওদিন গৌরী দেবীর সম্মান নষ্ট হতে দেননি। তাঁর জায়গা বরাবরই অক্ষত রাখার চেষ্টাই করেছিলেন মহানায়ক।

মহানায়ক উত্তম কুমার। তাঁকে নিয়ে আজও মানুষের মনে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। তখন ছিল না সোশ্যাল মিডিয়া। ফলে তারকাদের ব্যক্তিজীবন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরেই থাকত। পর্দার পিছনে তাঁরা কখন কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, এই প্রশ্নের উত্তর মিলত খুবই কম। ফলে আজও তাঁকে ঘিরে নানা কাহিনি সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ফেরে। বাংলার মহানায়ক বলে কথা। আর তাঁর বিয়ে, ভাবা যায়, সেই সময় মহানায়কের পরিবারের ছবিটা ঠিক কেমন ছিল! রাজকীয় সেই আয়োজনের নানা গল্প সিনেপাড়ায় ছড়িয়ে থাকলেও, জানেন কী, গৌরী দেবীর পরিবার এই বিয়ের সম্বন্ধ করে ঠিক কতটা খুশি হয়েছিলেন?
বিয়ে মানেই তখন পণপ্রথা। যৌতুক হিসেবে পাত্রপক্ষকে সাধ্য মতো উপহার দেওয়ার চল ছিল। অধিকাংশ সময়ই তা চেয়ে নিত পাত্রপক্ষ। এক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলেছিল গৌরী দেবীর পরিবার। মহানায়কের ভাই তরুণ কুমারের কলমে, “গৌরীর বাবা জিজ্ঞেস করলেন—বিয়েতে যৌতুক হিসেবে আপনাদের কী দিতে হবে। মানে আপনাদের দাবি কী? বাবা শান্ত কন্ঠে উত্তর দিলেন— আমার বড় মেয়ে অনেকদিন হল মারা গেছে। এই প্রথম ছেলের বিয়ে। জানিনা বিয়েতে কী দিতে হয়। বা কী চাইতে হয়। আমাদের কোনও দাবি নেই। যদি কিছু দিতেই হয়— যা প্রাণে চায় দেবেন। গৌরীর মুখে শোনা। বাবা বাড়ি ফিরে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে নানা কথা শুনিয়েছিলেন। বারবার বলেছিলেন— এতদিন কেবল চারা গাছটা দেখেছি। আজ দেখলাম বটগাছ। অমন বটগাছ না হলে কি আর কত ভাল চারাগাছ জন্মাত।”
এরপর মহাধূমধামে বিয়ে হয় তাঁদের। উত্তম কুমারের জীবনে নানা অধ্য়ায়ে নানা অভিনেত্রী জায়গা করে নিলেও, তিনি কোনওদিন গৌরী দেবীর সম্মান নষ্ট হতে দেননি। তাঁর জায়গা বরাবরই অক্ষত রাখার চেষ্টাই করেছিলেন মহানায়ক।
তথ্যসূত্র: আমার দাদা উত্তমকুমার
