বলিউডের এক নম্বর নায়িকা থেকে রাতারাতি যৌনকর্মী! ঠেলায় করে শ্মশানে গেল অভিনেত্রীর দেহ
প্রদীপের তলাতেই থাকে অন্ধকার। একথা যে কতটা সত্য়ি, তা গ্ল্যামার জগতকে একটু কাছ থেকে দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যায়। মানুষ ঠিক যা যা স্বপ্ন দেখেন, নাম, যশ, প্রতিপত্তি, তা বলিউডে পা দিলে হাতের মুঠোয় তো চলে আসে। রাতারাতি এক ডজন ক্যামেরার ঝলকানিতে গোটা বিশ্বের নজরে। কিন্তু এই ঝলকানির নেপথ্যের অন্ধকারটা কজন দেখেন?

প্রদীপের তলাতেই থাকে অন্ধকার। একথা যে কতটা সত্যি, তা গ্ল্যামার জগতকে একটু কাছ থেকে দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যায়। মানুষ ঠিক যা যা স্বপ্ন দেখেন, নাম, যশ, প্রতিপত্তির, তা বলিউডে পা দিলে হাতের মুঠোয় চলে আসে। রাতারাতি এক ডজন ক্যামেরার ঝলকানিতে গোটা বিশ্বের নজরে। কিন্তু এই ঝলকানির নেপথ্যের অন্ধকারটা কজন দেখেন? কতজনই বা খবর রাখেন?
হ্য়াঁ, যেমন একসময়ের বলিউডের একনম্বর নায়িকা ভিমির খবর রাখেননি কেউ। সুনীল দত্ত, রাজকুমার, শাম্মি কাপুর, শশী কাপুরের সঙ্গে জুটি বেঁধে একের পর এক হিট দিয়েছিলেন ভিমি। রাজ কুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘নীলে গগন কে তলে’ এখনও বলিউডের এক অমর প্রেমের গান। সেই ভিমির জীবনই স্পটলাইট থেকে এতটা অন্ধকার পথে হেঁটেছিল যে, একদিন ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল তাঁর দেহ। সেই মরদেহকে সৎকার করতে চাননি কেউ। তারপরে সাদা কাপড়ে আপদমস্তক মুড়ে নিয়ে এক ঠেলায় করে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কেন এমনটা হয় বলিউডের প্রথম ‘এক্সপেনশিভ’ নায়িকার সঙ্গে?
ছোট থেকেই দেখতে ভারী মিষ্টি ছিলেন ভিমি। নাচে, গানে পারদর্শী। একটু বড় হতেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ফিল্মি গানে নাচতেন। তবে কখনও যে অভিনয়ে আসবেন, তা ভাবেননি। সুন্দরী হওয়ার কারণে, পড়াশুনো শেষ হতেই মুম্বইয়ের ব্যবসায়ী শিব প্যাটেলের সঙ্গে ভিমার বিয়ে দিলেন তাঁর মা-বাবা। বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই দুই সন্তানের জন্ম দেন ভিমি।
সেই সময় এক গসিপ ম্য়াগাজিনে প্রকাশিত হয়, স্বামী শিব প্যাটেলের সঙ্গে এক ফিল্মি পার্টিতে গিয়েছিলেন ভিমি। সেখানেই পরিচালক বি আর চোপড়ার নজর গিয়ে পড়ে ভিমির দিকে। প্রথম দেখাতেই পছন্দ হয় সুন্দরী ভিমিকে। সেই পার্টিতেই ছবির অফার পান ভিমি। প্রথম ছবি সুনীল দত্তর সঙ্গে ‘হামরাজ’। ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবি বক্স অফিসে হইচই ফেলে দিয়েছিল। প্রথম ছবি থেকেই রাতারাতি সুপারস্টার হয়ে যান ভিমি। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ভিমির ঝুলিতে একের পর এক ছবি। সেই সময় ভিমি ছিলেন হিন্দি ছবির সবচেয়ে দামী নায়িকা। প্রতি ছবিতে তাঁর পারিশ্রমিক ছিল তিন লাখ টাকা।
তবে নিয়তি তো অন্যকিছুই লিখেছিলেন ভিমির ভাগ্যে। ফিল্ম বিশেষজ্ঞরা বলেন, দ্রুত সাফল্য পেতে গিয়েই নাকি ভিমি একের পর এক ভুল ছবি সই করতে শুরু করেন। যা কিনা হয় পর পর ফ্লপ। রাতারাতি প্রযোজকদের চোখের মণি ভিমি, হয়ে ওঠেন বলিউডের শত্রু। জানা যায়, অনিয়ন্ত্রিত লাইফস্টাইলের কারণে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে ফেলেছিলেন ভিমি। ফলে অর্থের ঘাটতি হতে শুরু করে। ঠিক সেই সময় দাম্পত্য কলহের কারণে ব্যবসায়ী স্বামীকেও ছেড়ে দেন তিনি। বিয়ে করেন বলিউডের এক প্রযোজক জলিকে। সেই সময় খবরে এসেছিল, যেহেতু ভিমির হাতে কোনও ছবি ছিল না। সেহেতু প্রযোজক স্বামী দেহব্য়বসার দিকে ঠেলে দেন ভিমিকে। ধীরে ধীরে ভিমি অন্ধকার জীবনে পা রাখেন। অবসাদ তাঁকে গ্রাস করে। আর প্রযোজক স্বামীও ছেড়ে চলে যান। অর্থকষ্ট, একাকীত্ব ভিমিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। তারপর ১৯৭৭ সালের আগস্ট মাসের এক বৃষ্টিভেজা রাতে মুম্বইয়ের দুকামরার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় ভিমির দেহ। সেই সময় গসিপ ম্য়াগাজিনের এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছিল, ভিমি দেহব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে, আশপাশের কেউই নিন্দার ভয়ে তাঁর মরদেহ কাঁধে তুলতে চাননি। সাদা কাপড়ে মুড়ে এক ঠেলায় করেই শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সুন্দরী ভিমির নিথর দেহ। আজও যখন বলিউড ডিভাদের প্রসঙ্গ ওঠে, তখন ভিমির এই অন্ধকার জীবনের কথা উঠবেই। ভিমিই যেন দেখিয়ে দিয়েছিলেন প্রদীপের নিচের সেই অন্ধকারকে।





