বিচার চাইতে গিয়ে এত বড় ভুল করলেন শুভশ্রী-শ্রাবন্তী! ধিক্কার সকলের
RG Kar: প্রথম দিন থেকেই তিলোত্তমার বিচার চাইছেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় ও শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। পথে নেমে প্রতিবাদ করছেন। দিয়েছেন স্লোগানও। সেই তাঁরাই এবার যে ভুল করলেন তা দেখে ছিঃ ছিঃ করছেন সাধারণ। আঙুল তুলে তাঁরা বলছেন, 'এটুকু দায়বদ্ধতা নেই আপনাদের?"

প্রথম দিন থেকেই তিলোত্তমার বিচার চাইছেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় ও শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। পথে নেমে প্রতিবাদ করছেন। দিয়েছেন স্লোগানও। সেই তাঁরাই এবার যে ভুল করলেন তা দেখে ছিঃ ছিঃ করছেন সাধারণ। আঙুল তুলে তাঁরা বলছেন, ‘এটুকু দায়বদ্ধতা নেই আপনাদের? আপনারা তো সমাজের মুখ! সাধারণ যে ভুল করছেন সেই ভুলের পথে পা বাড়ালেন আপনারাও! লজ্জা করে না?’
অথচ উদ্দেশ্য তাঁদের খারাপ ছিল না। বরং এত দিন কেটে যাওয়া সত্ত্বেও তিলোত্তমা বিচার পেল না কেন সেই প্রশ্নই তুলেছিলেন ওঁরা। তবে ভুলটা ঠিক হল কোথায়? নিজ নিজ ইনস্টা স্টোরি এক বার্তা শেয়ার করেছিলেন টলিপাড়ার প্রথম সারির অভিনেত্রীদ্বয়। যার মূল বক্তব্য ছিল, “সময় এগোচ্ছে। বিচার চাওয়ার যে উন্মাদনা ছিল তা কমছে। যদি সত্যিই বদল আনতে হয় তবে এই জনরোষ কমিয়ে দেবেন না। কারণ বিচার এখনও পাওয়া যায়নি।” এর পরে তিনটি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করেছিলেন ওঁরা। যার মধ্যে একটিতে জ্বলজ্বল করছিল নির্যাতিতার নাম। ধর্ষণ বা যৌন হেনস্থার মতো ঘটনায় নির্যাতিতা বা তাঁর পরিবারকে সমাজে অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ্যে এসে গেলে প্রভাব পড়তে পারে বিচার ও তদন্তের ক্ষেত্রে। তাই নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনা যায় না। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে। পাশাপাশি, ভারতীয় আইনেও বাধ্যবাধকতা আছে। নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ– তাই আবেগের বশে অজান্তেই ‘ভুল’ করে ফেলেছেন ওঁরা।
রইল ওঁদের ইনস্টা স্টোরির স্ক্রিনশট (তিলোত্তমার নামের অংশটি আইন মেনে ব্লার করে দেওয়া হয়েছে)

সপ্তাহ দুয়েক আগে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সন্দীপ ঘোষ চার বার নাম উল্লেখ করেন মৃত চিকিৎসকের। সেই নিয়ে হয়েছিল বিতর্কও। প্রশ্ন হল, নির্যাতিতার নাম প্রকাশ হলে ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি’ অনুযায়ী কী শাস্তির বিধান আছে? ভারতীয় দণ্ডবিধি বা ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (IPC)-এর ২২৮এ ধারায় আছে এই সম্পর্কিত বিধান। সেই ধারা অনুযায়ী, ধর্ষিতা বা যৌন হেনস্থার শিকার নির্যাতিতার নাম, পরিচয় প্রকাশ্য়ে আনলে ২ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। ধার্য করা হতে পারে জরিমানাও। অন্যদিকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতাতেও (ভারতীয় দণ্ডবিধি) বলা আছে, কেউ যদি নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনেন, তাহলে জেল হতে পারে। জেলের মেয়াদ হতে পারে ২ বছর পর্যন্ত। এছাড়া ধার্য করা হতে পারে জরিমানা। এরই পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে, কোনও ব্যক্তি সংবাদ মাধ্যমে (ইলেকট্রনিক বা প্রিন্ট মিডিয়া) বা সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্যাতিতার নাম প্রকাশ করতে পারবেন না। পরোক্ষভাবেও না। যা কিছু প্রকাশ হলে নির্যাতিতাকে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে, তা প্রকাশ করা যাবে না। যদি নির্যাতিতার মৃত্যু হয়, বা অচৈতন্য অবস্থায় থাকেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর কোনও আত্মীয় অনুমতি দিলেও নাম প্রকাশ করা যাবে না। পরিস্থিতি অনুযায়ী, নাম প্রকাশ করতে হলে সেই সিদ্ধান্ত নেবে সেশন জাজ।
