স্লিপ অ্যাপনিয়া কেড়েছিল বাপি লাহিড়ির প্রাণ, ঘুমের সময় কেউ সেই ভুল করলে পরিণতি হতে পারে চরম!
২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছিল বাপি লাহিড়ির। তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে আরও কিছুটা সজাগ হয়েছেন মানুষ।

পাশে শুয়ে থাকা মানুষটি এ ভাবে নাক ডাকছেন? এত তীব্র আওয়াজ, যে আপনি ঘুমোতেই পারছেন না! রাত যত বাড়ছে আওয়াজ ততই বাড়ছে! অনেক সময় তো গৃহযুদ্ধ লাগার জোগাড়। কিন্তু চিকিত্সকেরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি হলে বিরক্ত হবেন না, বরং সতর্ক হোন। কারণ এই নাক ডাকাই ডেকে আনতে পারে ঘোর বিপদ। আগে অতিরিক্ত নাক ডাকাকে পাত্তাও দিতেন না অনেকে। এখন অবশ্য ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার প্রবণতা কিছুটা হলেও বেড়েছে। আর এই রোগের কারণেই ঘুমের মধ্যে বাড়ছে হার্ট অ্যাটাক! বিষয়টা শুনতে সহজ লাগলেও, আদতে তা নয়। ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, স্লিপ অ্যাপনিয়ায় (Sleep Apnea) আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছিল বাপি লাহিড়ির। তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে আরও কিছুটা সজাগ হয়েছেন মানুষ।
হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন নিয়ে এখনকার দিনে সচেতনতার প্রচার অনেক বেশি। সেই সঙ্গে রয়েছে ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা। বড় বড় রোগগুলি নিয়ে চর্চা করতে গিয়ে স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা অনেক পিছনে চলে যায়। অথচ ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণই হল এই স্লিপ অ্যাপনিয়া। ঘুমের মধ্যে দমবন্ধ হয়ে আসে। শ্বাসের গতি অনিয়মিত হয়ে যায়। শ্বাস নিতে ও ছাড়তে সমস্যা হয়। কখনও আচমকা দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হতে পারে রোগীর। আর ঘুমিয়ে পড়ার পর এমনিতেই ঘাড় ও গলার পেশি শিথিল থাকে, সুতরাং হঠাৎ যদি শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রক্রিয়া বাধা পেয়ে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়, তা হলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। আর এখানেই ডাক্তাররা বলছেন স্লিপ অ্যাপনিয়ার ভয়ের কথা।
জীবনযুদ্ধ যত কঠিন হচ্ছে, ততই তার চিহ্ন ফুটে উঠছে আমাদের শরীরে। তার একটা দিক হল, ক্রমশ ঘুম কমছে। থাবা বসাচ্ছে স্লিপ অ্যাপনিয়া। প্রথমেই জেনে নেওয়া দরকার স্লিপ অ্যাপনিয়া ঠিক কী? শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি স্লিপ অ্যাপনিয়ার অন্যতম কারণ। ঘুমের মধ্যে হঠাত্ শ্বাসনালী বন্ধ হয়ে আসে। স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্তদের স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেশি। বাসে-ট্রেনে অনেককেই দেখা যায় হাঁ করে ঘুমোচ্ছেন। এটা কি স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ? হ্যাঁ, হতেই পারে। কারণ, নাক দিয়ে শ্বাস না নেওয়া গেলেই মুখ দিয়ে নিতে হয়! মাউথ ব্রিদিং এই রোগের উপসর্গ হতেই পারে। তাই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
সাধারণত কোন বয়সে স্লিপ অ্যাপনিয়া হয়?
পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩২ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে স্লিপ অ্যাপনিয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রি-মেনোপজের সময় থেকে এই সমস্যা শুরু হতে থাকে। তবে, ৫০ পেরোলে পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সমান হয়ে যায়। অতিরিক্ত ওজন বা ওবিসিটি থাকলে ৩০ বছরের আগেও এই সমস্যা আসতে পারে। ফলে স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হতে হবে।





