Sleep Apnea: কাজ হারাচ্ছে ঘুমপাড়ানি মাসি-পিসিরা? ঘুমের রাজ্যের দখল নিচ্ছে ‘ও’ কে?
ডেডলাইন বা ব্যক্তিগত জীবনের ওঠাপড়া, কিছু হলেই উধাও ঘুম। কারও কারও আবার কোনও সমস্যা না থাকলেও ঘুম আসতে চায় না। একদিন-দু'দিন নয়, দিনের পর দিন একই ঘটনা। কারণ?

ঘাসের উপর রুমালটা ছিল, ঘাম মোছবার জন্য যেই সেটা তুলতে গিয়েছি অমনি রুমালটা বলল “ম্যাও!” কী আপদ! রুমালটা ম্যাও করে কেন? সুকুমার রায় সেই কবে বলেছিলেন রুমাল হয়ে গেল বিড়াল। এখন তো আবার ফাগুন হাওয়াও বইছে। সেই হাওয়ায় ভেসে হজবরলর মত যা খুশি স্বপ্ন আপনি দেখতেই পারেন। কিন্তু স্বপ্ন দেখতে গেলে ঘুমের প্রয়োজন সেই ঘুম আসছে কই?
অনেকক্ষেত্রেই ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছে, সংখ্যাটা বাড়ছে। ধরুন আপনি ঘুমোচ্ছেন স্বপ্ন দেখতে গিয়ে আপনার হাত পাও অসাড় হয়ে যেতে পারে। নিঃশ্বাস আটকে যেতে পারে। প্রয়োজনীয় অক্সিজেন নাও পৌছতে পারে। তাহলেই বুঝুন, ঘুম কতটা প্রয়োজন! ডেডলাইন বা ব্যক্তিগত জীবনের ওঠাপড়া, কিছু হলেই উধাও ঘুম। কারও কারও আবার কোনও সমস্যা না থাকলেও ঘুম আসতে চায় না। একদিন-দু’দিন নয়, দিনের পর দিন একই ঘটনা। কারণ? স্লিপ অ্যাপনিয়া! চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্তদের স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেশি। বেশ খানিকটা আশঙ্কার কথা বলছেন চিকিৎসক উত্তম আগরওয়াল। তাঁর কথায়, “বেশিরভাগ মানুষের যাঁদের হার্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁরা বুঝতেও পারেন না, তাঁদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার প্রবণতা রয়েছে।” চিকিৎসক অরূপ হালদার যেমন বলছেন “অনেকে মনে করেন, আজ কম ঘুমোলাম, সমস্যা নেই। পরের দিন তো তাড়াতাড়ি উঠব। এটা করা একেবারেই উচিত নয়। আমাদের প্রত্যেক দিন একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুমোনো উচিত। বড়দের ক্ষেত্রে ৭ ঘণ্টার বেশি ঘুম প্রয়োজন। আমরা যদি ভাবি একদিন কম ঘুমিয়ে পরের দিন মেক আপ করে দেব, তা কিন্তু কখনই হয় না।”

চিকিৎসক উত্তম আগরওয়াল স্লিপ অ্যাপনিয়া নিয়ে জানিয়েছেন।
দেশের মধ্যে কত মানুষ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত?
আবার যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য তুলে ধরছেন চিকিৎসক সৌরভ দাস। তাঁর কথায়, “ভারতবর্ষের তথ্য তুলে ধরলে বিশেষ করে শহরগুলিতে প্রায় ২০-৩০% মানুষের অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগ হয়। বিশেষ করে এই রোগ পুরুষদের বেশি হয় মহিলাদের থেকে। ৪৫-৫০ বছর অবধি।” কিন্তু কীভাবে বুঝবেন আপনি স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন? চিকিৎসক রাজা ধর বলছেন, “এই যেমন ধরুন কিছু করতে ইচ্ছে করছে না, কোনও জোর পাওয়া যাচ্ছে না, সারাক্ষণ শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে। এমনটা হলে বুঝতে হবে স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা তৈরি হচ্ছে। ধরুন স্মৃতিশক্তি নষ্ট হচ্ছে, কোনও কাজে মনোযোগী হতে পারছেন না, বিভিন্ন জায়গায় ঘুম পাচ্ছে। তা হলে সাবধান হতে হবে।”

চিকিৎসক সৌরভ দাস স্লিপ অ্যাপনিয়া নিয়ে জানিয়েছেন।
কীভাবে বুঝবেন আপনিও এই রোগের শিকার?
অর্থাৎ বিপদ যে আছে, তা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্লিপ অ্যাপনিয়ার উপসর্গ বুঝতে পারলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। রাতে খাওয়ার ঠিক পরেই শুয়ে না পড়ে একটু হাঁটাহাঁটি করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রয়োজনীয় যোগব্যায়াম করতে হবে। হজমের সমস্যা কমলে নাক ডাকার সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্ত হওয়া যায়। শোয়ার ভঙ্গি পরিবর্তন করুন। চিত হয়ে না শুয়ে এক পাশ ফিরে শুলে শ্বাসযন্ত্রের উপর চাপ কম পড়ে।





