রুখতেই হবে করোনা সংক্রমণের আগামী ঢেউ, ‘মোক্ষম দাওয়াই’ দিলেন ২১ বিশেষজ্ঞ

আগামিদিনে করোনার ভয়াবহ প্রকোপ থেকে বাঁচতে গেলে দ্রুত কড়া পদক্ষেপের প্রয়োজন বলেই জানান বিশেষজ্ঞরা।

রুখতেই হবে করোনা সংক্রমণের আগামী ঢেউ, 'মোক্ষম দাওয়াই' দিলেন ২১ বিশেষজ্ঞ
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Jun 18, 2021 | 4:09 PM

নয়া দিল্লি: দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এলেও আগামিদিনে ফের সংক্রমমের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। একাধিক রাজ্যে আনলক প্রক্রিয়া শুরু হতেই সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতি থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায়, তা নিয়ে সম্প্রতিই ল্যানসেট জার্নালের তরফে ২১ জন বিশেষজ্ঞকে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তারা আটটি নীতি দ্রুত অনুসরণের কথা বলেন।

দেশে ফের করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ার বিষয়ে বিখ্যাত চিকিৎসক দেবী শেঠী থেকে শুরু করে বায়োকনের কিরণ মজুমদার সাউয়ের মতো বিশেষজ্ঞদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তাঁরা জানান, আগামিদিনে করোনার ভয়াবহ প্রকোপ থেকে বাঁচতে গেলে দ্রুত কড়া পদক্ষেপের প্রয়োজন।

২১ জন বিশেষজ্ঞ যে আটটি বিষয়ের উপর জোর দিয়েছেন, সেগুলি হল-

১. জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলিকে দ্রুত কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে হবে। জেলা ভিত্তিক যেহেতু করোনা সংক্রমণের সংখ্যাও ভিন্ন হয়, সেই কারণে সকলের জন্য এক নিয়ম মেনে চলা কঠিন। এর বদলে যদি পরিস্থিতি অনুযায়ী করোনা নিয়ন্ত্রণের জন্য পদক্ষেপ করা যায়, তবে দ্রুত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

২. যাবতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্থাৎ অ্যাম্বুলেন্স, অক্সিজেন, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধ ও হাসপাতালে চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট খরচ বেঁধে দেওয়া উচিত। বিভিন্ন রাজ্যে সাধারণ মানুষদের জন্য যে স্বাস্থ্য বিমার ব্যবস্থা করা হয়েছে. তারমধ্যেই যাতে খরচ সীমাবদ্ধ থাকে, সেই বিষয়টিতেও নজর দিতে বলা হয়।

৩. সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সুস্পষ্ট ও তথ্যভিত্তিক নির্দেশিকা প্রকাশ করা উচিত। বাড়িতে রোগীর চিকিৎসা ও দেখভাল, জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা ইত্যাদি সম্পর্কে আঞ্চলিক ভাষায় স্পষ্ট নির্দেশিকা থাকলে সাধারণ মানুষের বুঝতে এবং সেই মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে সুবিধা হবে।

৪. করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত ব্যক্তিদের কাজে লাগানো প্রয়োজন। পর্যাপ্ত সুরক্ষা অর্থাৎ মাস্ক, পিপিই কিট, ফেস শিল্ডের উপলব্ধ থাকা এবং করোনা চিকিৎসা সংক্রান্ত নির্দেশিকা অনুসরণ করারল প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে।

৫. রাজ্য সরকারগুলির উচিত উপলব্ধ ভ্যাকসিনের উপর নির্ভর করে কোন বয়সসীমার মানুষদের আগে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া। ভ্যাকসিনের সরবরাহ বাড়লে সেই অনুযায়ী টিকাকরণের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।

৬. করোনা মোকাবিলায় সাধারণ মানুষের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুম্বইয়ের করোনা মোকাবিলার উদাহরণ দিয়ে তারা জানান, কীভাবে রাজ্য তথা দেশবাসী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে দ্রুত করোনা মোকাবিলা সম্ভব।

৭. করোনা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহে সরকারের নথিতে স্বচ্ছতা থাকা প্রয়োজন। বয়স, লিঙ্গ ভিত্তিতে করোনা সংক্রমণ, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা, মৃত্যু হার, অঞ্চল ভিত্তিক টিকাকরণ ইত্যাদি সম্পর্কে পর্যাপ্ত পরিমাণ তথ্য মজুত রাখা প্রয়োজন।

৮. করোনা সংক্রমণের কারণে যাদের জীবনযাপন ও পেশায় প্রভাব পড়েছে, তাদের দ্রুত স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা। যারা অতিমারিতে কাজ হারিয়েছেন, তাদের আর্থিক সাহায্য বা কাজে পুনর্বহাল এবং ক্ষতির মুখে পড়া সংস্থাগুলিকে কেন্দ্রের তরফে অর্থনীতির হাল ফেরার পর আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া উচিত।

আরও পড়ুন: গাজিয়াবাদ কাণ্ডে আরও চাপে টুইটার, ৭ দিনের মধ্যে হাজিরার নির্দেশ সংস্থার প্রধানকে