লখনউ: আদিপুরুষ চলচ্চিত্রে রাম এবং হনুমান-সহ রামায়ণের চরিত্রগুলিকে যেভাবে দেখানো হয়েছে, তা নিয়ে গোটা দেশব্যাপী অসন্তোষ জন্মেছে। শুধু সিনেমাপ্রেমী জনতারই নয়, এলাহাবাদ হাইকোর্টেরও নিন্দার মুথখে পড়েছেন নির্মাতারা। মঙ্গলবার আদালত প্রশ্ন করেছিল, কেন তাদের দিয়ে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের সহনশীলতার মাত্রা পরীক্ষা করানো হচ্ছে? বুধবার (২৮ জুন) এলাহাবাদ হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণ করেছে, এই উদ্বেগ কোনও একটি ধর্মের বিষয়ে নয়, সকল ধর্মের বিষয়েই আদালত সমান উদ্বিগ্ন। নির্মাতাদের মানসিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি রাজেশ সিং চৌহান এবং বিচারপতি শ্রী প্রকাশ সিং-এর বেঞ্চ। বিচারপতি রাজেশ সিং চৌহান বলেন, “আপনাদের কোরান, বাইবেল এবং অন্যান্য পবিত্র গ্রন্থে হাতই দেওয়া উচিত নয়। এটি কোনও একটি ধর্মের বিষয় নয়। কোনও ধর্মকেই খারাপভাবে দেখানো উচিত নয়। আদালতের কোনও ধর্ম নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে বজায় থাকে, সেটাই আমাদের একমাত্র উদ্বেগ।”
বিচারপতি চৌহান আরও বলেন, “কোরানের উপর একটি ছোট ডকুমেন্টারি তৈরি করার সময়ও যদি ভুল জিনিস দেখান, তাহলে দেখবেন কী হয়। তবে, আমি আবারও স্পষ্ট করে বলছি এটি কোনও একটি ধর্মের বিষয় নয়। দৈবক্রমে এই ক্ষেত্রে সমস্যাটি রামায়ণের সঙ্গে সম্পর্কিত। আদালতের কাছে সব ধর্ম সমান।”
আদালত আরও বলেছে, সিনেমাটিতে ‘ধর্মীয় চরিত্র’দের যেভাবে যেভাবে দেখানো হয়েছে, তাতে অবশ্যই একাংশের মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। বিচারপতি চৌহান বলেন, “যদি আজ আমরা মুখ বন্ধ রাখি তাহলে কী হবে জানেন? এই ঘটনাগুলো দিন দিন বেড়েই চলবে। একটি সিনেমায় আমি এমনও দেখেছি, ত্রিশূল হাতে নিয়ে অত্যন্ত হাস্যকরভাবে ছুটে চলেছেন ভগবান শঙ্কর। এখন, এগুলো দেখতে হবে? ছবিগুলি ব্যবসাও করছে, নির্মাতারা অর্থ উপার্জন করছেন। এটা হয়েই চলেছে। সম্প্রীতি ভাঙার জন্য কিছু না কিছু করা হচ্ছে। এটা কি রসিকতা?”
শুধু নির্মাতাদেরই নয়, এদিন আদালত কড়া সমালোচনা করেছে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশনের। আদালত বলেছে, সমস্যাটি সংবেদনশীল। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন এই ছবিটি প্রদর্শনের অনুমতি দিয়ে বড় ভুল করেছে। কেন্দ্রে পক্ষে আদালতে ছিলেন ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল এস বি পান্ডে। তিনি জানান, ‘বিচক্ষণ’ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ডই ফিল্মটিকে ছাড়পত্র দিয়েছেন। জবাবে আদালত কটাক্ষ করে, “এই ধরনের সংস্কারী লোকজন যদি এমন একটি সিনেমাকে ছাড় দেয়, তবে তাঁরা সত্যিই ধন্য।”