BJP National Executive Meeting: ‘আরও লড়াই করব’, বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার কথা মনে করিয়ে ‘ভোকাল টনিক’ নাড্ডার
JP Nadda: জে পি নাড্ডা বলেন, "আমাদের ৫৩ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। মানুষ এখনও সেখানে ভয়ে অন্য কোথাও গিয়ে লুকিয়ে রয়েছেন ।"
নয়াদিল্লি: রাজধানীতে আজ বিজেপির জাতীয় কার্যসমিতির বৈঠক চলছে। আর যেমনটা অনুমান করা হয়েছিল, ঠিক তাই হল। বৈঠকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে উঠে এল বঙ্গের রাজনৈতিক প্রসঙ্গ। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা পশ্চিমবঙ্গের উপর জোর দেন আজকের বৈঠকে। একাধিকবার তুলে ধরেন বঙ্গের রাজনৈতিক প্রসঙ্গ।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার যে অভিযোগ বার বার প্রকাশ্যে এসেছে, আজ সেই কথা আরও একবার উঠে আসে বিজেপির জাতীয় কার্যসমিতির বৈঠকে। জে পি নাড্ডা বলেন, “আমাদের ৫৩ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। মানুষ এখনও সেখানে ভয়ে অন্য কোথাও গিয়ে লুকিয়ে রয়েছেন ।” সম্প্রতি বাংলায় শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল বেছে বেছে দলের লোকেদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। আজ সেই ইস্যুতেও পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। এই ধরনের ঘটনার নিন্দা করেছেন তিনি। একইসঙ্গে বাংলার দলীয় নেতা ও কর্মীদের উজ্জীবিত করতে তাঁর বার্তা, “বাংলা ও রাজ্যের মানুষের উনয়নের জন্য আমরা আরও লড়াই করব।”
উল্লেখ্য, সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা উপনির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের চারটি আসনেই কার্যত ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। তিনটি কেন্দ্রে একেবারে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। একের পর এক নেতা, যাঁরা ভোটের আগে বিজেপিতে এসেছিলেন, তাঁরা আবার দলত্যাগী হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির নিচুতলার দলীয় কর্মীদের মনোবল আরও শক্ত করতে এবং নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়তে নাড্ডার এই ‘ভোকাল টনিক’ অনেকটাই কাজে দেবে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
উল্লেখ্য, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় ইতিমধ্যেই প্রায় চারটি চার্জশিট দাখিল করেছে সিবিআই। পরে সেই চার্জশিটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫টি। বেড়েছে মামলার সংখ্যাও। আরও ৩ টি এফআইআর রুজু করেছে সিবিআই। মামলার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৫। ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে মোট ৮৪ জন তদন্তকারী অফিসার বা আইও-র মধ্যে ইন্সপেক্টর, ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার রয়েছেন। এছাড়া ২৫ জন কর্তা রয়েছেন এই দলে। জয়েন্ট ডিরেক্টর, ডিআইজি, এসপি পদমর্যাদার এই ২৫ জন অফিসার।
রাজ্যে ১৫ টি খুন এবং ৬ টি ধর্ষণের মামলায় ২৭ অগাস্ট ১১টি এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। খুন, খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখা, অপহরণ, অনুপ্রবেশের মতো একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়। ইতিমধ্যেই হিংসা মামলার তদন্তে হাইকোর্টে মুখবন্ধ খামে স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
বিজেপির এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কারণ আগামী বছরই উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব সহ মোট ৫টি রাজ্য়ে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। এরমধ্যে পাখির চোখ করা হয়েছে উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনকে, কারণ এই নির্বাচনের ফল দিয়েই ২০২৩ সালের লোকসভা নির্বাচনের গতিপ্রকৃতিও আন্দাজ করা যাবে। প্রথমে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও, এই বৈঠকের গুরুত্ব বুঝেই দিল্লিতে উপস্থিত হয়েছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগামী বছর এই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন প্রতিটি দলের জন্যই লিটমাস টেস্ট হতে চলেছে। আর সেদিক থেকে বিজেপি অবশ্যই চাইবে, নিজেদের শক্তি পরীক্ষা করে নিতে। সেই কারণেই এদিনের বৈঠকে নির্বাচনী রণকৌশল ও প্রচার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও নির্বাচন নিয়ে একাধিক পরামর্শ দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।