নয়া দিল্লি: মোদী পদবি নিয়ে মামলায় রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) দোষী সাব্যস্ত করে ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সুরাট আদালত। যদিও বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত রয়েছেন। তবে তাঁর সাংসদ পদ থাকবে কি না তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। BJP- তরফে রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের দাবিও তোলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কী করবেন ওয়ানাড়ের সাংসদ? আপাতত তাঁকে সংসদে না যাওয়ারই পরামর্শ দিল দলের লিগ্যাল সেল(CongressLegal Cell) তবে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে বৈঠকে বসছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে সুরাট আদালত রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত ঘোষণা করার পরই তাঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবি তুলেছে বিজেপি। যদিও এখনও পর্যন্ত স্পিকারের কাছে এ বিষয়ে কোনও লিখিত আবেদন জমা পড়েনি। ফলে স্পিকারের তরফে জানানো হয়েছে, যদি কেউ রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের ব্যাপারে অভিযোগপত্র স্পিকারের টেবিলে জমা দেন, তারপর আইনত বিশেষজ্ঞরা সেটি খতিয়ে দেখবেন এবং তাঁরাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
এদিকে, আইনি নিয়ম অনুযায়ী কোনও সাংসদ দোষী সাব্যস্ত হলে মূলত দুটি কারণে তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হতে পারে। প্রথমত,যদি ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এর মধ্যে কয়েকটি নির্দিষ্ট অপরাধ রয়েছে, যেমন দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা প্রচার করা, ঘুষ দেওয়া এবং নির্বাচনে প্রভাব খাটানো। তবে মানহানির বিষয়টি এই তালিকার মধ্যে পড়ে না। দ্বিতীয়ত, সাংসদ যদি অন্য কোনও অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন এবং তাঁর দু-বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য সাজাপ্রাপ্ত হন। RPA-এর ধারা ৮(৩) ধারা অনুযায়ী, একজন সাংসদ দোষী সাব্যস্ত হলে এবং কারাদণ্ডের মেয়াদ দু-বছরের কম না হলে তাঁকে সাংসদ হিসাবে ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করা যেতে পারে।
রাহুল গান্ধীকে মানহানির মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে তাঁর সাংসদ পদ বাতিলের প্রশ্ন উঠছে না। কিন্তু, দু-বছর সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে তাঁর মাথায় এখনও খাঁড়া ঝুলছে। তবে হাইকোর্ট যদি নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়, সেক্ষেত্রে রাহুলের সাংসদ বাতিল হবে না। তবে হাইকোর্টে আবেদন করা থেকে স্থগিতাদেশ দেওয়া পর্যন্ত তিনমাস সময় রয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দিলে তবেই এযাত্রায় রাহুলের সাংসদ পদ রক্ষিত হবে।
তবে আপাতত ওয়ানাড়ের সাংসদ কী করবেন, সংসদে যাবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এব্যাপারে নিরাপদ দূরত্বে এগোনোরই বার্তা দিচ্ছে কংগ্রেসের লিগ্যাল সেল। তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে এদিন সন্ধ্যাতেই বৈঠকে বসছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই বৈঠকেই রাহুল গান্ধীর সংসদে যাওয়া থেকে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর।