করোনা চিকিৎসা করাতে গিয়ে পুরুষ নার্সের লালসার শিকার মহিলা, বিকেলেই মৃত্যু
ওই মহিলা ১৯৮৪ সালের ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় রক্ষা পেয়েছিলেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতেই ওয়ার্ডের পুরুষ নার্সের লালসার শিকার হন তিনি।
ভোপাল: করোনার চিকিৎসা করাতে গিয়ে ধর্ষিত হতে হল এক মহিলাকে। ধর্ষণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মৃত্যু হয় নির্যাতিতার। মারা যাওয়ার আগে নিজের পরিচয় ও গোটা ঘটনাটি গোপনে রাখতে চাইলেও বৃহস্পতিবার পুলিশের তরফে ধর্ষণের ঘটনাকে মান্যতা দেওয়া হয়। জানানো হয়, ইতিমধ্যেই সন্তোষ আহিরওয়ার (৪০) নামক ওই নার্সকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এপ্রিল মাসে ৪৩ বছর বয়সী ওই মহিলা করোনা আক্রান্ত হয়ে মধ্য প্রদেশের ভোপাল মেমরিয়াল হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে ভর্তি হন। গত ৬ এপ্রিল তিনি ধর্ষণের বিষয়টি চিকিৎসককে জানিয়ে সম্পূর্ণ বয়ান দেন।
সূত্র অনুযায়ী, সেইদিনই তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে, তাঁকে ভেন্টিলেটরে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই বিকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
চিকিৎসকের তৎপরতায় নিশাতপুরা পুলিশ স্টেশনে ধর্ষণের অভিযোগ জানান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই সন্তোষ আহিরওয়ার নামক ওই অভিযুক্ত নার্সকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর শুনানির জন্য এতদিন তাঁকে ভোপাল সেন্ট্রাল জেলে রাখা হয়েছিল।
সূত্র অনুযায়ী, ওই অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে হাসপাতালেরই এক ২৪ বছর বয়সী নার্সকে যৌন হেনস্থা ও কর্মরত থাকা অবস্থায় মদ্যপানের অভিযোগও উঠেছে।
এ দিকে, ওই মহিলা ১৯৮৪ সালের ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় যারা রক্ষা পেয়েছিল, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হওয়ায় ভোপাল দুর্ঘটনার শিকার সমস্ত ব্যক্তিদের তরফে গঠিত অ্যাসোসিয়েশনের তরফেও অভিয়োগ জানানো হয়েছে। ওই অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে বলা হয়, “ভোপাল মেমরিয়াল হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের ম্যানেজমেন্ট এই ঘৃণ্য অপরাধকে ধামাচাপা দিতে যথা সাধ্য চেষ্টা করেছে এবং সেই কারণেই নির্যাতিতার পরিবারকে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।”
গোটা ঘটনার দ্রুত তদন্তের পাশাপাশি কোভিড ওয়ার্ডে ক্যামেরা লাগানো ও রোগীদের সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয় যে, ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় যারা প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন, তাঁদের করোনায় মৃত্যু হার বাকিদের তুলনায় সাতগুণ বেশি। সুতরাং তাঁদের অতিরিক্ত খেয়াল রাখার প্রয়োজন।