নয়া বিপদের আশঙ্কা! সুস্থ হওয়ার পরও ফের বাসা বাঁধছে ব্ল্যাঙ্ক ফাঙ্গাস, রোগীর ঢল হাসপাতালে
স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর ওষুধের কোর্স পূরণ না করা কিংবা অস্ত্রোপচারের পর নিয়মিত চেক আপে না করানোর ফলেও দেহে ফের ছত্রাক সংক্রমণ দেখা দিতে পারে।
নয়া দিল্লি: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শেষভাগেই উর্ধ্বমুখী সংক্রমণ নিয়ে যখন চিন্তায় গোটা দেশ, সেই সময়ই আরও উদ্বেগের খবর মিলল দিল্লির হাসপাতালগুলি থেকে। সেখানে ফের একবার বাড়তে শুরু করেছে মিউকরমাইকোসিস (Mucormycosis) বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (Black Fungus) রোগীর সংখ্যা। এদের মধ্যে অধিকাংশই আবার আগেই ছত্রাক সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সুস্থ হয়ে ওঠার কয়েক মাস পর নতুন করে সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন চিকিৎসকরা।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন তুঙ্গে ছিল, সেই সময়ই বিশেষ মাথাব্যাথ্যার কারণ হয়ে দাড়িয়েছিল মিউকরমাইকোসিস। দীর্ঘ সময় ধরে ভেন্টিলেশনে থাকা রোগী বা অক্সিজেন চলছিল যে সমস্ত রোগীদের, তাদের দেহে এই ছত্রাক সংক্রমণ দেখা যায়। এদের মধ্যে অধিকাংশ রোগীই আবার মধুমেহের রোগী। ব্ল্য়াক ফাঙ্গাসে মৃত্য়ুর ঘটনাও ঘটেছিল দেশজুড়ে। মূলত করোনা চিকিৎসায় স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহারের কারণেই সংক্রমণ হচ্ছিল বলে জানান চিকিৎসক-গবেষকরা।
দেশের সংক্রমণের হার কমার সঙ্গে সঙ্গেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও কমতে শুরু করেছিল। কিন্তু ফের একবার দিল্লিতে এই ছত্রাক সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীর সংখ্য়া বাড়তে শুরু করেছে। নির্দিষ্ট কোনও বয়সের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকলেও যে সমস্ত রোগীদের মধুমেহ বা ডায়েবিটিস রয়েছে, তারাই সুস্থ হয়ে ওঠার পরও পুনরায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে।
স্যার গঙ্গারাম হাসপাতাল, লোকনায়ক জয় প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতাল, যেগুলিতে সর্বাধিক ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করা হয়েছিল, সেখানে ফের রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে বলে জানানো হয়েছে। এলএনজিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর ডঃ সুরেশ কুমার জানান, আগেও মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত রোগীরা ফের একবার একই সংক্রমণ নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসছেন। এর মূলত দুটি কারণ হতে পারে, হয় ভাইরাসটি শরীরে ফের প্রবেশ করছে অথবা পূর্ববর্তী সংক্রমণের কারণে দেহে ভাইরাসের যে রেশ ছিল, তা পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠছে। রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধিও অন্যতম কারণ হতে পারে।
অন্যদিকে, স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালের ইএনটি বিশেষজ্ঞও জানিয়েছেন, মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর ওষুধের কোর্স পূরণ না করা কিংবা অস্ত্রোপচারের পর নিয়মিত চেক আপে না করানোর ফলেও দেহে ফের ছত্রাক সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। নতুনভাবে মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত রোগীর খোঁজ না মিললেও সুস্থ হওয়া রোগীদের মধ্য়ে ফের সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় চিন্তা বাড়ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, যে জায়গা অস্ত্রোপচার করে বাদ দেওয়া হয়েছে, তার আশেপাশেই বা দেহের অন্য কোনও অংশে নতুন করে সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। অস্ত্রোপচারের পর নিয়মিত ওই ক্ষতস্থান ভালভাবে পরিস্কার না করার কারণেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। নাক বা সাইনাস থেকে ছত্রাক আপনাআপনিই চোখ বা দেহের অন্য কোনও অংশে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
উল্লেখ্য, মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় অ্যাম্ফিটেরিন-বি, পোসাকোনাজ়োল ওষুধ ব্য়বহার করা হয়। সংক্রমণ বেশি ছড়িয়ে পড়লে অস্ত্রোপচার করে ওই অংশ বাদ দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকে না। আরও পড়ুন: ২৫০ টাকাতেই মিলতে পারে দুটি ডোজ়! শিশুদের উপরও ট্রায়ালের অনুমতি পেল বায়োলজিক্যাল-ই