TV9 Explained on Artificial Rain: দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি! কীভাবে হবে? কতই বা খরচ?
Delhi Artificial Rain: আইআইটি কানপুরের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতোই দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত সুপ্রিম কোর্টে এই প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। যদি সুপ্রিম কোর্ট সবুজ সঙ্কেত দেয়, তবে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ২০-২১ নভেম্বর কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামানো হবে দিল্লিতে।
প্রতিটা নিশ্বাসে লুকিয়ে রয়েছে বিষ, শ্বাস নিলেই বাতাসের সঙ্গে বিষ ঢুকছে শরীরে। কার্যত গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে রাজধানী দিল্লি। কোনও নির্দিষ্ট একটি বা দুটি এলাকা নয়, গোটা দিল্লিতেই এই পরিস্থিতি। দূষিত বাতাসের জেরে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলিতে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানির রোগীদের ভিড়। চোখের সমস্যাও বাড়ছে ক্রমশ। দূষণ প্রতিরোধে ইতিমদিলধ্যেই দিল্লি সরকার গাড়ি ব্যবহারে জোড়-বিজোড় নিয়ম, স্কুল ছুটি, ন্যাড়াপোড়া বন্ধ করা, নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার মতো একাধিক পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। কিন্তু তাতে যেটুকু দূষণ কমবে, তা নিমিত্তমাত্র। শেষ পন্থা এখন কৃত্রিম বৃষ্টি। যদি কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়পত্র দেয়, তবে আগামী ২০-২১ নভেম্বর দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি (Artificial Rain) ঘটানো হবে। কিন্তু কী এই কৃত্রিম বৃষ্টি? কীভাবেই বা এই কৃত্রিম বৃষ্টি ঘটানো হবে?
আইআইটি কানপুরের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতোই দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত সুপ্রিম কোর্টে এই প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। যদি সুপ্রিম কোর্ট সবুজ সঙ্কেত দেয়, তবে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ২০-২১ নভেম্বর কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামানো হবে দিল্লিতে।
কী এই কৃত্রিম বৃষ্টি?
আর্টিফিসিয়াল রেইন বা কৃত্রিম বৃষ্টিকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় বলা হয় ক্লাউড সিডিং (Cloud Seeding)। এটি হল আবহাওয়া পরিবর্তনের কৃত্রিম পদ্ধতি, যেখানে মেঘে বৃষ্টিকণা তৈরিতে সাহায্য করে। মেঘের মধ্যে মিশিয়ে দেওয়া হয় সিলভার আয়োডাইড বা পটাশিয়াম আয়োডাইড। এই আয়োডাইড মেঘে ঘনত্ব বাড়াতে কাজ করে। মেঘে ঘনত্ব বাড়লে বৃষ্টিকণা তৈরি হয়, ফলে বৃষ্টি বা বরফপাত হয়। দিল্লির ক্ষেত্রে বৃষ্টি নামানো হবে।
কী লাভ হবে কৃত্রিম বৃষ্টিতে?
কৃত্রিম বৃষ্টির উপকারিতা একাধিক। মূলত পাঁচটি লাভ হয় কৃত্রিম বৃষ্টিতে। এগুলি হল-
১. বায়ুমণ্ডল সাফ হওয়া– ক্লাউড সিডিংয়ের মাধ্যমে বৃষ্টি নামলে বায়ুমণ্ডল পরিষ্কার হয়ে যায়। যত দূষিত কণা বাতাসে মিশে থাকে, তা বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়। ফলে বায়ুমণ্ডল সাফ হয়ে যায়।
২. দূষিত কণা কমবে– বাতাসে মিশে থাকা দূষিত কণা বৃষ্টির ফোঁটায় মিশে যায় এবং তা বৃষ্টিতে নেমে আসে। ধুলো, ধোঁয়া ও কেমিক্যাল- যা কিছু বাতাসে মিশে থাকে, তা বৃষ্টিতে ধুয়ে যায়।
৩. ধোঁয়াশা কমে– ক্লাউড সিডিং বা কৃত্রিম বৃষ্টিতে ধোঁয়াশাও একধাক্কায় অনেকটা কমে যায়। এতে বাতাস বিশুদ্ধ হয়। বাতাসের গুণমান বৃদ্ধি পায়, ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় না।
৪. দাবানল কমাতে সাহায্য– বিভিন্ন দেশে দাবানল লাগলে, কৃত্রিম বৃষ্টির মাধ্য়মে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। দাবানলের জেরে যে ব্য়াপক বায়ুদূষণ হয়, তাও কমে কৃত্রিম বৃষ্টিতে।
৫. কৃষিকাজে লাভ– কৃষিজমিতে দ্রুত আর্দ্রতা বাড়াতে, অনেক দেশেই জমি সেচের পর কৃত্রিম বৃষ্টি নামানো হয়। এতে সেচের জন্য জল ব্যবহার অনেকটাই কমবে।
কৃত্রিম বৃ্ষ্টি নামাতে কত খরচ?
কৃত্রিম বৃষ্টি নামানো যথেষ্ট ব্যয়বহুল। আইআইটি কানপুরের সুপারিশ অনুযায়ী দিল্লিতে দুই ধাপে কৃত্রিম বৃষ্টি নামাতে আনুমানিক ১৩ কোটি টাকা খরচ হবে। দিল্লি সরকারের তরফেও জানানো হয়েছে, প্রতি স্কোয়ার কিলোমিটারে কৃত্রিম বৃষ্টি নামাতে ১ লক্ষ টাকা খরচ হবে। দিল্লিতে প্রথম দফায় ৩০০ স্কোয়ার কিলোমিটার এলাকায় কৃত্রিম বৃষ্টি নামানো হবে। মোট ৩ কোটি টাকা হবে।
তবে খরচের শেষ এখানেই নয়। মেঘের উপরে সিলভার আয়োডাইড বা পটাশিয়াম আয়োডাইড ছড়াতে বিমান ভাড়া করতে হবে। এর জন্য আলাদাভাবে বিমান ভাড়ার জন্যও বিপুল খরচ হবে।
এই বিপুল খরচ বহন করতে দিল্লি সরকার কেন্দ্রের কাছে সাহায্য চেয়েছে। তবে কেন্দ্রের তরফে এখনও কোনও জবাব না দেওয়ায়, দিল্লি সরকার জানিয়েছে, তারাই এই ১৩ কোটি টাকার খরচ বহন করবে।