AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Bizarre: ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত মেয়ে, আইটি কর্মী মা-বাবা খাবার, জল না দিয়েই মেরে ফেলল! যুক্তি দিল…

Bizarre: খেলে বেড়ানোর বয়সেই মারণ রোগের শিকার হয় ভিয়ানা জৈন। ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে তাঁর। সেই ছোট্ট শিশুর চিকিৎসা করানোর বদলে তাঁকে না খেতে দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল খোদ ভিয়ানার নিজের বাবা-মা।

Bizarre: ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত মেয়ে, আইটি কর্মী মা-বাবা খাবার, জল না দিয়েই মেরে ফেলল! যুক্তি দিল...
Image Credit: PTI
| Edited By: | Updated on: May 04, 2025 | 11:51 AM
Share

অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার যে কতটা ভয়ানক হতে পারে তার আরও একটা জলজ্যান্ত প্রমাণ পাওয়া গেল মধ্যপ্রদেশে। মাত্র ৩ বছর বয়স ছিল মেয়েটির। খেলে বেড়ানোর বয়সেই মারণ রোগের শিকার হয় ভিয়ানা জৈন। ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে তাঁর। সেই ছোট্ট শিশুর চিকিৎসা করানোর বদলে তাঁকে না খেতে দিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিল খোদ ভিয়ানার নিজের বাবা-মা।

ভিয়ানার বাবা-মা তাঁকে বাধ্য করে সান্থারা, যা সাল্লেখানা নামেও পরিচিত এক জৈন রীতি তা মানতে। এই রীতি অনুসারে কোনও ব্যক্তি স্বেচ্ছায় মৃত্যু বরণ করেন, আমৃত্যু উপোস করেন। এই রীতি অনুসারে, একজন ব্যক্তি আধ্যাত্মিক শুদ্ধি এবং জগৎ থেকে বিচ্ছিন্নতা অর্জনের উপায় হিসেবে মৃত্যু পর্যন্ত ধীরে ধীরে তাঁর খাদ্য ও জল গ্রহণ কমিয়ে দেন। অসুস্থ ভিয়ানাকেও সেই কঠোর রীতি মানতে বাধ্য করেছিল ভিয়ানার বাবা-মা।

মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে বাড়ি ভিয়ানার। বাবা-মা দুজনেই উচ্চ শিক্ষিত, আইটি কর্মী। তাঁরা জানান, এক জৈন মুনির কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েই নিজের মেয়েকে সান্থারা পালন করানোর সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। সংবাদমাধ্যমকেও গর্বের সঙ্গে জানান, গোল্ডেন বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড জানিয়েছে “ভিয়ানা হল বিশ্বের সর্ব কনিষ্ঠ ব্যক্তি যে সান্থারা ব্রত পালন করল।” ২১ মার্চ নিজের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে ভিয়ানা।

ভিয়ানার বাবা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে শনিবার একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, “এই বছরের জানুয়ারি মাসে আমার মেয়ের ব্রেন টিউমার ধরা পড়ে। তারপরে তার একটি অস্ত্রোপচার হয়, ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলও ভিয়ানা। কিন্তু মার্চ মাসে হঠাৎ করেই আবার অবস্থার অবনতি শুরু করে। খাবার খেতে বা কিছু পান করতেও অসুবিধা হচ্ছিল তার।”

২১ মার্চ রাতে অসুস্থ কন্যা সহ গোটা পরিবারকে নিয়ে জৈন সাধু রাজেশ মুনি মহারাজের দর্শন করতে যান তাঁরা। বাবা বলেন, “আমার মেয়েক দেখেই মহারাজজি বলেন ওঁর হাতে আর বেশি সময় নেই, এবার ভিয়ানার সান্থারা ব্রত করা উচিত। জৈনদের মধ্যে এই ব্রত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ভাবনা চিন্তা করেই আমরা এই ব্রত পালনের সিদ্ধান্ত নিই।”

কন্যার বাবা জানান, মহারাজজি সান্থারা ব্রতর আচার শেষ করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর কন্যার। গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে মেয়ের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে। একটি সার্টিফিকেট জারি করা হয়েছে। যেখানে ভিয়ানার নাম “জৈন রীতিতে সান্থারা ব্রত গ্রহণকারী বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী ব্যক্তি” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভিয়ানার মা বর্ষা জৈন বলেন, “আমার মেয়েকে সান্থারা ব্রত গ্রহণ করানোর সিদ্ধান্ত কতটা কঠিন ছিল তা আমি বর্ণনা করতে পারব না। ব্রেন টিউমারের কারণে অত্যন্ত কষ্ট পাচ্ছিল। ওঁকে এই অবস্থায় দেখে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল। আমি চাই আমার মেয়ে পরবর্তী জন্মে সর্বদা সুখী থাকুক।”

জৈন ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, সান্থারাকে ‘সাল্লেখানা’ এবং ‘সমাধি মারাণ’ও বলা হয়। এই প্রাচীন প্রথার অনুসারে, কোনও ব্যক্তি যখন মনে করেন, তাঁর শেষ আসন্ন তখন তিনি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার জন্য খাদ্য, জল এবং পার্থিব জিনিসপত্র ত্যাগ করেন।

২০১৫ সালে রাজস্থান হাইকোর্ট ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ (আত্মহত্যায় প্ররোচনা) এবং ৩০৯ (আত্মহত্যার চেষ্টা) ধারার অধীনে এই প্রথাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ ঘোষণা করে। ওই রায়ের পরে আইনী ও ধর্মীয় মহলে সান্থারা নিয়ে বিতর্ক তীব্র হয়।

যদিও জৈন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন ধর্মীয় সংস্থার দায়ের করা আবেদনের শুনানিকালে শীর্ষ আদালত রাজস্থান হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়।