হাথরস: ভোলেবাবার অপার মহিমা! বাবার পায়ের ধুলো কুড়োতে গিয়েই পদপিষ্ট, দমবন্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন কমপক্ষে ১২১ জন। হাথরসের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। একদিকে যেখানে মৃত্য়ুমিছিল দীর্ঘ হচ্ছে, সেখানেই স্বঘোষিত ধর্মগুরু পগারপার। দায় ঝাড়তে তিনি শুধু জানিয়েছেন, তাঁর অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এই ভোলেবাবা আসলে কে জানেন? তাঁর কীর্তি শুনলে চোখ কপালে উঠবে।
হাথরসে যে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, তা স্বঘোষিত ধর্মগুরু সূরজ পাল ওরফে নারায়ণ সাকার হরির ধর্মীয় সভায় যোগ দিতে গিয়েই ঘটেছে। তবে এই প্রথম নয়, ১২ বছর আগেও ভোলেবাবার ধর্মীয়সভাতে যোগ দিতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। করোনাকালেও ৫০ জনকে নিয়ে সৎসঙ্গ করার নামে ৫০ হাজার মানুষের ভিড় জমিয়েছিলেন এই ভোলেবাবা।
তবে এখানেই শেষ নয়, ভোলেবাবার আসল কীর্তি হল মরা মানুষকে জীবন্ত করে তোলা। যার জন্য় জেলেও যেতে হয়েছে তাঁকে। কী করেছিলেন তিনি? ২৩ বছর আগে আগ্রা থেকে পুলিশ নারায়ণ সাকার হরিকে গ্রেফতার করে মিথ্যা দাবি করে ভক্তদের সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগে। কবরস্থানে অশান্তি, বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে ভোলেবাবা ও তাঁর ৬ সহকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
ভোলেবাবার দাবি ছিল, তাঁর কাছে ঐশ্বরিক শক্তি রয়েছে, যার ক্ষমতায় তিনি তাঁর দত্তক নেওয়া কন্যা, যে আদতে তাঁর ভাইঝি, তাঁকে মৃত্যুর পরও ফের বাঁচিয়ে তুলেছিলেন। ওই ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ভোলেবাবার দত্তক কন্যার ক্যানসার হয়েছিল। একদিন সৎসঙ্গ চলাকালীন ওই কিশোরী অজ্ঞান হয়ে যায়। বাবার চ্যালারা দাবি করে, বাবা নিজের কন্যাকে বাঁচিয়ে তুলবেন জাদুবলে। কিছুক্ষণ পর ওই কিশোরীর জ্ঞান ফিরলেও, ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তাঁর মৃত্যু হয়।
দেহ সৎকারের জন্য নিয়ে গেলে, সেখানে গিয়ে অশান্তি শুরু করে ভোলেবাবার ভক্ত ও সাঙ্গপাঙ্গরা। তারা কিছুতেই দেহ সৎকার করতে দিচ্ছিল না এই দাবি করে যে বাবা তাঁর মেয়ের প্রাণ ফিরিয়ে আনবেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে, পুলিশ লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়। এরপর ভোলেবাবা ও তাঁর ৬ সঙ্গীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু আদালতে প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায় ভোলেবাবা। স্বঘোষিত ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগও রয়েছে।