The role of a Guru: মানুষের জীবনে গুরুর ভূমিকা কী? দিশা দেখালেন সদগুরু
The role of a Guru: শিবকে আদিযোগী ও আদিগুরু কেন বলা হয়, সেই প্রসঙ্গে সদগুরু বলেন, "যোগের ক্ষেত্রে আমরা শিবকে আদিযোগী এবং আদিগুরু হিসেবে দেখি। এর অর্থ শিব হলেন প্রথম যোগী। একইসঙ্গে তিনি প্রথম গুরু।"
নয়াদিল্লি: আজকের দিনে একজন গুরুর ভূমিকা কী? গুরুপূর্ণিমার দিন মানুষের জীবনে গুরুর ভূমিকা তুলে ধরলেন সদগুরু জগ্গী বাসুদেব। ইশা ফাউন্ডেশনের (Isha Foundation) প্রতিষ্ঠাতা সদগুরু বলেন, “আমার কাজ শুধু লোককে সান্ত্বনা দেওয়া নয়। মানুষকে তাঁর সর্বোচ্চ ক্ষমতার দিশা দেখানোই আমার কাজ। যাতে যে কেউ শারীরিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক ভাবে পূর্ণ জীবন অতিবাহিত করতে পারেন। একজন পূর্ণ মানুষ হতে পারেন। কারণ, আমাদের আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য হল জীবনকে তার সম্পূর্ণ গভীরে গিয়ে উপলব্ধি করা।”
এরপরই তিনি বলেন, “কিন্তু, এখন আধ্যাত্মিকতার নামে মানুষকে বোঝানো হচ্ছে, জীবনকে কীভাবে এড়িয়ে চলতে হবে। সান্ত্বনার কথা বলে। সন্তুষ্টির কথা বলে। জীবন থেকে পালিয়ে যাওয়ার কথা বলে।” সদগুরু বলেন, “জীবনকে যদি অনুভব করতে চান, তবে এতে সামিল হোন। জীবনে যত বেশি সামিল হবেন, তত বেশি জীবনকে জানতে পারবেন। তাই, জীবন থেকে সরে যাবেন না। তবে মানুষের মধ্যে জীবনে সামিল হওয়ার ভয় কাজ করে, কারণ জড়িয়ে যাওয়ার ভয়। মানুষ ভয় পান কারণ তাঁদের মধ্যে জড়িয়ে যাওয়ার বৈষম্য কাজ করেন।”
সদগুরু আরও বলেন, “যদি আমি কেবল আপনার সঙ্গেই জুড়ে থাকি আর আমার আশপাশে কিছু না থাকে, তাহলে আমি নিশ্চিত আপনার সঙ্গে জড়িয়ে যাব। কিন্তু, আপনি যদি সবার সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন, যেমন যে বাতাসে আপনি শ্বাস নেন, যে পৃথিবীতে আপনি হাঁটাচলা করেন। আপনি যা দেখতে পান, যা শুনতে পান, যা স্পর্শ করেন, এই সবের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে আপনি আনন্দিত হবেন। আর এর ফলে সবকিছুর থেকে মুক্ত হবেন। তখন কোনও কিছুতে জড়িয়ে পড়ার ভয় থাকবে না।”
‘ভয়কে জিইয়ে রাখার দরকার নেই’
সদগুরু বলেন, “ভয় কোনও স্বাভাবিক অবস্থা নয়। ভয় এমন একটা জিনিস যা নিজের সীমিত ধারণার কারণে বিকশিত হয়। তাই, জীবনকে যদি বাস্তবিত রূপে দেখার ক্ষমতা আপনার বাড়ে, জীবনকে যদি আপনি আরও স্পষ্টভাবে দেখতে পান, তবে আপনার জীবনে ভয় কমে যাবে। ভয় এমন কোনও জিনিস নয় যাকে জিইয়ে রাখতে হবে। জীবনে স্পষ্টতা আনা দরকার। এই দিকেই ফোকাস করে যোগ। যাতে আপনার ধারণা তার সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছায়।”
‘প্রথম গুরু এবং প্রথম যোগী হলেন শিব’
শিবকে আদিযোগী ও আদিগুরু কেন বলা হয়, সেই প্রসঙ্গে সদগুরু বলেন, “যোগের ক্ষেত্রে আমরা শিবকে আদিযোগী এবং আদিগুরু হিসেবে দেখি। এর অর্থ শিব হলেন প্রথম যোগী। একইসঙ্গে তিনি প্রথম গুরু। এই জন্য তাঁর তৃতীয় নয়ন রয়েছে। এর অর্থ এই নয় যে কপালে ছিদ্র থাকা কোনও খামখেয়ালি ব্যক্তি হন। এর অর্থ তাঁর উপলব্ধি উচ্চতম শিখরে পৌঁছে গিয়েছে। ফলে আপনার ধারণা যত স্পষ্ট হবে, আপনার জীবন থেকে ভয় তত দ্রুত চলে যাবে।”
ভারতের পঞ্চাশ জন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের মধ্যে রয়েছেন সদগুরু। ১৯৫৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর, কর্ণাটকের মাইসোরে একটি ধনী তেলুগু পরিবারে তাঁর জন্ম। তিনি একদিকে যোগী, ভবিষ্যদ্রষ্ট্রা। আবার লেখক। তাঁর একাধিক বই নিউইয়র্ক টাইমসের বেস্ট সেলারের তালিকায় জায়গা পেয়েছে। ২০১৭ সালে পদ্মবিভূষণ সম্মান পান তিনি। বিশ্বব্যাপী মাটি বাঁচাও আন্দোলনের সূচনা করেন তিনি। ৪০০ কোটি মানুষ এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন।