Allahabad High Court: ‘মনে হচ্ছে ‘কলিযুগ’ চলে এসেছে’, মামলা শুনে স্তম্ভিত খোদ বিচারপতি
Allahabad High Court: জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেলেও, তাদের মধ্যে চলছে আইনি লড়াই। লড়াইটা ভরণপোষণের অর্থের দাবি নিয়ে। মামলা শুনে স্তম্ভিত খোদ এলহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি। এই বয়সের এক দম্পতির মধ্যে এই ধরনের আইনি লড়াই উদ্বেগের বিষয় বলে জানান বিচারপতি সৌরভ শ্যাম শামশেরি।
প্রয়াগরাজ: স্বামীর বয়স ৮০ বছর, স্ত্রীর ৭৬ বছর। জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেলেও, তাদের মধ্যে চলছে আইনি লড়াই। লড়াইটা ভরণপোষণের অর্থের দাবি নিয়ে। স্ত্রীকে মাসে মাসে ভরণপোষণের জন্য অর্থ দিতে বলেছিল পারিবারিক আদালত। কিন্তু, স্বামী তা দিতে রাজি নয়। আর সেই কারণেই পারিবারিক আদালতের রায়কে তিনি চ্যালেঞ্জ করেছিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টে। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি চলাকালীন এক চমকে দেওয়া পর্যবেক্ষণ করল আদালত। এই বয়সের এক দম্পতির মধ্যে এই ধরনের আইনি লড়াই উদ্বেগের বিষয় বলে জানান বিচারপতি সৌরভ শ্যাম শামশেরি। দম্পতিকে তিনি বিবাদ মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শও দেন। সেই সঙ্গে বলেন, “মনে হচ্ছে যেন কলিযুগ চলে এসেছে। এই ধরনের আইনি লড়াই উদ্বেগের বিষয়।”
৮০ বছরের মুনেশ কুমার গুপ্তা একসময় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তা ছিলেন। বর্তমানে তিনি অবসরপ্রাপ্ত। ২০১৮ সাল থেকে স্ত্রীয়ের সঙ্গে তাঁর এক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিষয়টি পুলিশের কাছেও পৌঁছেছিল। তারা এই বৃদ্ধ দম্পতিকে একটি পারিবারিক পরামর্শ কেন্দ্রে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু, সেখানে তাদের বিরোধ মেটেনি। এর মধ্যে মুনেশ গুপ্তা এবং তাঁর স্ত্রী আলাদা থাকতে শুরু করেন। এরপর, এক পারিবারিক আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করে, স্বামীর কাছ থেকে মাসে মাসে ১৫,০০০ টাকা ভরণপোষণ দাবি করেন স্ত্রী। মুনেশ গুপ্তার মাসিক পেনশন ছিল প্রায় ৩৫,০০০ টাকা। চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক আদালত, মুনেশ গুপ্তাকে মাসে মাসে ৫,০০০ টাকা করে স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেওয়ার আদেশ দিয়েছিল।
পারিবারিক আদালতের এই আদেশকেই এলাহাবাদ হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন মুনেশ গুপ্তা। আর তার শুনানিতেই কলিযুগ মন্তব্য করেন বিচারপতি সৌরভ শ্যাম শামশেরি। তিনি বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে নিজেদের মধ্যে কথা বলে বিবাদ মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই মামলার পরবর্তী শুনানির মধ্যেই বিষয়টির মীমাংসা করে নিতে পারবেন ওই দম্পতি, এমনটাই তাঁর আশা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হিন্দুধর্মে কল্পিত চারটি যুগচক্রের চতুর্থ তথা শেষতম হল কলিযুগ। বর্তমানে সেই যুগই চলছে বলে বিশ্বাস করা হয়। এই যুগ দ্বন্দ্ব ও পাপে পরিপূর্ণ বলে মনে করা হয়। পুরাণ অনুসারে, কৃষ্ণের মৃত্যুতে দ্বাপর যুগের সমাপ্তি এবং কলিযুগের সূচনা হয়েছিল। ৩১০২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এটা ঘটেছিল বলে বিশ্বাস করা হয়। কলিযুগের শেষে পৃথিবীতে বিপর্যয় নেমে আসবে এবং তারপর ফের ধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে এবং সত্যযুগের সূচনা ঘটবে বলে মনে করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের বহু মানুষ।