Kanpur: সকলকে বিবস্ত্র দেখার ‘জাদু আয়না’! কিনতে চেয়ে তিন বাঙালির প্রতারণার ফাঁদে কানপুরের বৃদ্ধ

Kanpur: আয়নাটিতে সকলকে নগ্ন অবস্থায় দেখা যায়। 'নাসা'র বিজ্ঞানীরাও নাকি এই ধরনের আয়না ব্যবহার করেন বলে দাবি করেছিল অভিযুক্তরা। আরও বলা হয়েছিল, আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজের ভবিষ্যতও দেখতে পাবেন অবিনাশ।

Kanpur: সকলকে বিবস্ত্র দেখার 'জাদু আয়না'! কিনতে চেয়ে তিন বাঙালির প্রতারণার ফাঁদে কানপুরের বৃদ্ধ
প্রতীকী ছবি Image Credit source: Wikipedia
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2023 | 2:54 PM

লখনউ: ‘বাদশা’ ফিল্মে শাহরুখ খানের একটি ‘এক্সরে ভিশন’ চশমা ছিল। যা পরলে সকলকে পোশাকহীন অবস্থায় দেখা যেত। সিনেমার সেই কল্প কাহিনিই যেন বাস্তবের এই ঘটনার অনুপ্রেরণা। উত্তর প্রদেশের কানপুরের বাসিন্দা এক ৭২ বছরের বৃদ্ধকে একটি ‘জাদু আয়না’ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছিলেন কলকাতার তিন ব্যক্তি। সেই ম্যাজিক আয়নায় নাকি সকলকে নগ্ন অবস্থায় দেখা যায়। অদ্ভুত আয়নাটি কেনার জন্য প্রলুব্ধ হয়েছিলেন সেই ব্যক্তি। এই বাবদ ৯ লক্ষ টাকাও দিয়েছিলেন। তবে, এরপরই বুঝতে পেরেছিলেন, তাঁকে ঠকানো হয়েছে। অবশেষে বুধবার (১৬ অগস্ট), ভুবনেশ্বরের নয়াপল্লি থানার পুলিশ বাংলার বাসিন্দা ওই তিন প্রতারককে আটক করেছে।

ওড়িশা পুলিশ জানিয়েছে, এই বিষয়ে তাঁদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন কানপুরের বাসিন্দা অবিনাশ কুমার শুক্লা। সম্প্রতি, বীরেন্দ্র দুবে নামে তাঁর এক বন্ধুর মাধ্যমে পার্থ সিংহরায় (৪৬), মলয় সরকার (৩২) এবং সুদীপ্ত সিংহ রায় (৩৮)নামে তিন ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাঁর। প্রথম দুইজন উত্তর ২৪ পরগনার সাঁতরাগাছির বাসিন্দা। তৃতীয়জনের বাড়ি কলকাতায়। সিঙ্গাপুরের এক সংস্থায় কাজ করে বলে জানিয়েছিল তারা। ওই সংস্থা বিভিন্ন অ্যান্টিক অর্থাৎ, প্রাচীন জিনিসপত্র কেনা-বেচা করে। আলাপ-পরিচয়ের পর, অবিনাশ কুমার শুক্লাকে তারা একটি ‘জাদু আয়না’ কেনার প্রস্তাব দিয়েছিল। আয়নাটিতে সকলকে নগ্ন অবস্থায় দেখা যায়। ‘নাসা’র বিজ্ঞানীরাও নাকি এই ধরনের আয়না ব্যবহার করেন বলে দাবি করেছিল অভিযুক্তরা। আরও বলা হয়েছিল, আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজের ভবিষ্যতও দেখতে পাবেন অবিনাশ। আয়নার দাম ২ কোটি টাকা বলে জানিয়েছিল প্রতারকরা।

জাদু আয়নাটির জন্য ওই দাম দিতে রাজিও হয়েছিলেন কানপুরের ওই বৃদ্ধ। তাঁর আস্থা অর্জনের জন্য, অভিযুক্তরা তাঁদের আগের ক্রেতা হিসেবে আরও কিছু লোকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। সিঙ্গাপুরের ওই ফার্মের জাদু আয়না-সহ বেশ কিছু প্রাচীন জিনিসপত্র কিনেছেন তাঁরা বলে জানিয়েছিলেন ওই ব্যক্তিরা। এরপরই অগ্রিম বাবদ অভিযুক্তদের ৯ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন অবিনাশ শুক্লা। এরপর, জাদু আয়না কেনার জন্য অবিনাশকে ভুবনেশ্বরে আসতে বলা হয়েছিল। দিন কয়েক আগে জয়দেব বিহারের কাছে এক হোটেলে দেখা হয় দুই পক্ষের। নয়াপল্লি থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই হোটেলে সাক্ষাতের সময়ই অবিনাশ শুক্লা বুঝতে পারেন, তাঁকে ঠকানো হচ্ছে। সিঙ্গাপুরে ওই ধরনের কোনও সংস্থা নেই। আর জাদু আয়নারও কোনও অস্তিত্ব নেই।

এরপরই পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত তিনজনের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন একটি গাড়ি, নগদ ২৮,০০০ টাকা এবং কিছু চুক্তি সংক্রান্ত নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মোবাইল ফোনগুলির একটিতে ওই জাদু আয়নার একটি ভিডিয়ো রয়েছে। ওই ভিডিয়োটি দেখিয়েই অবিনাশ শুক্লাকে তারা সেটি কিনতে প্রলুব্ধ করেছিল বলে অভিযোগ। পুলিশি তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, এই প্রতারণা চক্রের সদস্যরা শুধু অ্যান্টিক বিক্রেতা নয়, ক্রেতার ভান করেও প্রতারণা করত। তারা মূলতঃ নিশানা করত ধনী বৃদ্ধদের। প্রাচীন জিনিসপত্র পছন্দ করেন, এমন ব্যক্তিদের। এর আগে আরও বেশ কয়েকজন তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের।