বেঙ্গালুরু: গত সপ্তাহেই অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্ধানার একটি অশ্লীল ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা গিয়েছিল, এআই-জেনারেটেড ডিপফেক সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে ওই ভুয়ো ভিডিয়ো তৈরি করা হয়েছিল। ভুয়ো ভিডিয়ো হলেও, তা দেখে বোঝার উপায় নেই। তারপর থেকে গোটা দেশে চর্চা চলছে ডিপফেক সফ্টওয়্যার নিয়ে। এরই মধ্যে, প্রেমে প্রত্যাখ্যানের জ্বালা মেটাতে ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহারের অভিযোগ উঠল কর্নাটকের বেলাগাভি জেলার এক ২২ বছর বয়সী যুবকের বিরুদ্ধে। ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এক যুবতী এবং তাঁর মেয়ে বন্ধুদের নগ্ন ছবি তৈরি করে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে রবিবার ওই যুবকরে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবক বেঙ্গালুরুর এক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে। সম্প্রতি ওই যুবতীর প্রেমে পড়েছিল সে। প্রেম প্রকাশও করেছিল। কিন্তু, মেয়েটি তাতে সাড়া দেয়নি। এই প্রত্যাখ্যান সহ্য করতে পারেনি অভিযুক্ত যুবক। এআই-জেনারেটেড ডিপফেক সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে সে ওই যুবতী এবং তাঁর বেশ কয়েকজন মেয়ে বন্ধুর ছবি এডিট করে। নগ্ন মহিলা দেহের ছবির সঙ্গে তাদের ছবি মর্ফ করে, তাদের ডিপফেক নগ্ন ছবি তৈরি করে। তারপর, ওই ছবিগুলি দেখিয়ে সে মেয়েটিকে হুমকিও দিয়েছিল। বলেছিল, তার প্রেমের প্রস্তাবে মেয়েটি যদি মেনে না নেয়, তবে সে সেগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেবে।
মেয়েটি আবারও তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এরপরই, অভিযুক্ত যুবক মেয়েটির নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে এবং সেই অ্যাকাউন্ট থেকে নগ্ন ছবিগুলি শেয়ার করে। ছবিগুলি শেয়ার করার পরই, ওই যুবতী, পুলিশের কাছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান এবং এই ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি মামলা দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে, সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ রবিবার রাতে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে। এই বিষয়ে আরও তদন্ত করা হচ্ছে। বেলাগাভি গ্রামীণের পুলিশ সুপার, ভীমশঙ্কর গুলেদ বলেছেন, “খানাপুরের একটি ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার করা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবক একটি মেয়ের প্রেমে পড়েছিল। মেয়েটি তার প্রেমে সাড়া না দেওয়ায় অভিযুক্ত তাঁকে হুমকি দিয়েছিল, এর জন্য তাঁকে এবং তাঁর বন্ধুদের অনেক মূল্য দিতে হবে। মেয়েটির উপর চাপ সৃষ্টি করতে, সে একটি নকল সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল থেকে মেয়েটির মর্ফ করা ছবি আপলোড করেছিল।”
ডিপফেক প্রযুক্তি হল এমন এক ডিজিটাল পদ্ধতি, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করে কোনও ব্যক্তির প্রতিরূপ তৈরি করা যায়। তার ছবি দিয়ে অন্য ছবিকে প্রতিস্থাপন করা যায়। এমনকি কেন্দ্রীয় সরকারও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিকে এই ধরনের ডিপফেকগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কঠোর সতর্কতা জারি করেছে।