একই চকোলেট বারবার খেতে চাইছে শিশু, মাদক মেশানো নেই তো?
Mangaluru ganja-laced chocolates: ওই চকোলেট খাওয়া যেন শিশুদের নেশায় দাঁডিয়ে গিয়েছিল। বাবা-মা বারণ করলে হিংস্র হয়ে উঠছিল তারা। শিশুদের এই অস্বাভাবিক আচরণ দেখে সন্দেহ হয় অভিভাবকদের।

বেঙ্গালুরু: সুস্বাদু চকোলেট, বাইরে থেকে দেখে কিচ্ছুটি বোঝার উপায় নেই। দামও মোটে ২০ টাকা। বাচ্চাদের কিনেও দিতেন বাবা-মায়েরা। কিন্তু, ওই চকোলেট খাওয়া যেন শিশুদের নেশায় দাঁডিয়ে গিয়েছিল। বাবা-মা বারণ করলে হিংস্র হয়ে উঠছিল তারা। শিশুদের এই অস্বাভাবিক আচরণ দেখে সন্দেহ হয় অভিভাবকদের। একই চকলেটের জন্য বাচ্চারা বারবার আবদার করার পর, কয়েকজন অভিভাবক বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছলেন। পুলিশ হানা দিতেই ফাঁস হল চকোলেটের আসল রহস্য। বাইরে থেকে যে চকোলেটগুলি দেখে মনে হয় একেবারে নির্দোষ, তার ভিতরে কী মেশানো ছিল জানেন? গাঁজা! আর চকোলেট খেতে গিয়েই শিশুরা ক্রমশ সেই গাঁজায় আসক্ত হয়ে পড়ছিল। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে কর্নাটকের মেঙ্গালুরুতে। বৃহস্পতিবার (১০ অগস্ট), দুটি দোকানে অভিযান চালিয়ে মোট ১২০ কেজি মাদক-যুক্ত চকলেট বাজেয়াপ্ত করেছে মেঙ্গালুরু পুলিশ।
পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, একটি দোকান থেকে ৮৫ কেজি এবং অন্য দোকান থেকে ৩৫ কেজি গাঁজা মেশানো চকোলেট উদ্ধার করা হয়। দোকানে পুলিশ হানা দিতেই পালিয়েছিল দোকান মালিকরা। পরে একজনকে মেঙ্গালুরু উত্তর থানার সীমান্ত থেকে এবং অপরজনকে মেঙ্গালুরু দক্ষিণ থানার সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। দুজনকেই বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ কমিশনার কুলদীপ জৈন বলেছেন, “ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির রিপোর্টে নিশ্চিত করা গিয়েছে, চকোলেটগুলিতে গাঁজা মেশানো ছিল। চকলেটগুলি উত্তর ভারত থেকে, বিশেষ করে উত্তর প্রদেশ থেকে আনা হচ্ছিল। দোকানের মালিকরা ছাড়াও, আরও বেশ কয়েকজন এই অবৈধ কাজে জড়িত বলে আমরা সন্দেহ করছি। এই বিষয়ে আরও তদন্ত করা হচ্ছে।”
তবে শুধু মেঙ্গালুরু এলাকাতেই নয়, সম্প্রতি, রায়চুর শহরেও পুলিশি অভিযানে একই প্রকারের মাদকযুক্ত চকোলেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই ঘটনার ক্ষেত্রেও দুই দোকানদারকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশের সন্দেহ, এই মাদক মেশানো চকোলেটের পিছনে কোনও একটি বড় চক্র কাজ করছে। কারা এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড এবং এর সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত, সেই বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। তবে, এই দুই ঘটনা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে অভিভাবকদের। তাঁরা জানিয়েছেন, এই ধরনের চকলেট বিক্রির প্রবণতা অত্যন্ত উদ্বেগের এবং বিপজ্জনক। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শিশুরা একবার মাদকাসক্ত হয়ে গেলে, তাদের তার প্রভাব থেকে মুক্ত করা অত্যন্ত কঠিন। কারণ শিশু বয়সে রুচি নিয়ন্ত্রণ করে স্বাদেন্দ্রিয়।
