জয়পুর: ফের একবার রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেত্রী বসুন্ধরা রাজের পাশে দাঁড়ালেন, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর), বিজেপিকে চরম কটাক্ষ করে তিনি জানান, তাঁর জন্য যেন বসুন্ধরা রাজেকে তাঁর দল ‘শাস্তি’ না দেয়। চলতি বছরের মে মাসের শুরুতেই, গেহলট জানিয়েছিলেন, ২০২০ সালে তাঁর নিজের দলেরই একাংশের বিধায়করা তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল। অর্থ ব্যবহার করে তার সরকারকে ফেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। সেই সময় বসুন্ধরা রাজে এবং কৈলাশ মেঘওয়ালের মতো বিজেপি নেতারা তাঁর সরকারকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন। অর্থের জোরে তাঁর সরকারকে ফেলে দেওয়ার প্রস্তাব সমর্থন করেননি তাঁরা।
২৫ নভেম্বরই রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। তার আগে বিজেপির পক্ষ থেকে ৪১ জন প্রার্থীর প্রথম তালিকা প্রকাশ করেছে। তালিকায় বসুন্ধরা রাজের নাম তো নেইই, নাম নেই তাঁর ঘনিষ্ঠ অন্যান্য নেতাদেরও। এই নিয়ে রাজস্থানের বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করা শুরু করেছেন। প্রকাশ্যেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকে, রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। বস্তুত, দলের মধ্য়েই এখন বসুন্ধরা শিবির কোনঠাসা হয়ে পড়েছে।
এই নিয়েই প্রশ্ন করা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে। গেহলট বলেন, “এটি রাজ্যের বিরোধী দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু, আমি বিজেপিকে বলতে চাই, আমার কারণে তাঁকে (বসুন্ধরা রাজে) শাস্তি দেওয়া উচিত নয়। এটি তাঁর প্রতি অবিচার করা হবে। আমি যখন রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি ছিলাম, সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ভৈরঁ সিং শেখাওয়াত। তিনি বাইপাস সার্জারির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর নিজের লোকেরাই তাঁর সরকার ফেলে দিতে চেয়েছিল। রাজ্য কংগ্রেস প্রধান হিসাবে আমি তার বিরোধিতা করেছিলাম। বলেছিলাম, এটি সঠিক কাজ নয়।” গেহলট আরও জানান, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসীমা রাও এবং তৎকালীন রাজ্যপাল বালিরাম ভগতকেও তিনি জানিয়েছিলেন, ভৈরঁ সিং শেখাওয়াতের সরকার ফেলে দেওয়া ঠিক হবে না।
বসুন্ধরা রাজে এবং কৈলাস মেঘওয়াল এই ঘটনার কথা জানতেন এবং তাঁর সরকার সঙ্কটে থাকার সময়, তাঁর দেখানো পথেই হেঁটেছিলেন বিজেপি নেতারা। দাবি করেছেন অশোক গেহলট। তিনি বলেন, “কৈলাশ মেঘওয়াল এই ঘটনা জানতেন। আমাদের সরকারের উপর যখন সঙ্কট তৈরি হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন, এই ভাবে সরকার ফেলে দেওয়া আমাদের ঐতিহ্য নয়। আমি বসুন্ধরা রাজের অনুগামী বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তিনি কী মন্তব্য করেছেন, আমি জানতাম। এক জনসভায় আমার মুখ থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল যে, কৈলাশ মেঘওয়ালের সঙ্গে সহমত বসুন্ধরাজি।” মে মাসে গেহলটের ওই মন্তব্যের পর, বসুন্ধরা রাজে বলেছিলেন, গেহলটের প্রশংসা আসলে বিদ্বেষ মিশ্রিত। নির্বাচনের মুখে বিজেপির এই অস্বস্তিকর জায়গায় ফের কোঁচা মারলেন গেহলট।