Supreme Court-CJI: উচ্চবর্ণের মানুষকে রান্নার কাজ আর প্রান্তিক মানুষকে সাফাই করার কাজ দিলে আর্টিকল ১৫ লঙ্ঘন হয়: প্রধান বিচারপতি
Supreme Court-CJI: প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় উল্লেখ করেন, ঔপনিবেশিক যুগের ফৌজদারি আইনগুলির প্রভাব পরবর্তী সময়েও রয়ে গিয়েছে। তবে সাংবিধানিক সমাজে আইনগুলির ক্ষেত্রে নাগরিকদের মধ্যে যাতে সমতা ও মর্যাদা বজায় থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
নয়া দিল্লি: দেশের কোনও কারাগারে বন্দিদের মধ্যে জাতিগত বৈষম্য যাতে না থাকে, তার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার একটি মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত বলেছে, জেলে কোনও জাতিভেদ করা চলবে না। এ ব্যাপারে রাজ্যগুলিকে দায়িত্ব দিল আদালত। বন্দিদের জাতি জানানোর জন্য একটি বিশেষ কলামে জায়গা করা থাকে। সেটা রাখা উচিত নয় বলে মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের। জেল ম্যানুয়াল পরিবর্তন করার জন্য আদালত তিন মাস সময় দিয়েছে রাজ্যগুলিকে। জাতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, সংবিধানের ১৫, ১৭ ও ২৩ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করা হয়।
বন্দিদের মধ্যে ব্যারাকের বিভাজন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতিগত বৈষম্য ছিল বলে একটি অভিযোগ ওঠে। রাজ্যের কারাগারগুলির ম্যানুয়ালকে চ্যালেঞ্জ করেই হয়েছিল এই মামলা।
প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় উল্লেখ করেন, ঔপনিবেশিক যুগের ফৌজদারি আইনগুলির প্রভাব পরবর্তী সময়েও রয়ে গিয়েছে। তবে সাংবিধানিক সমাজে আইনগুলির ক্ষেত্রে নাগরিকদের মধ্যে যাতে সমতা ও মর্যাদা বজায় থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই রাতারাতি জেতা যায় না। শীর্ষ আদালত সেই ক্ষেত্রে বারবার অবদান রাখছে। বৈষম্য প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ উভয়ই হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি আরও উল্লেখ করেন, বৈষম্যের বিষয়ে আদালতকে বিচার করতে হবে। তিনি বলেন, ইতিহাসে বারবার যে বর্ণ বৈষম্য দেখা গিয়েছে, তাতে মানুষের মর্যাদা এবং আত্মসম্মান লঙ্ঘন করা হয়েছে। তবে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৭ সমস্ত নাগরিকের সাংবিধানিক মর্যাদা শক্তিশালী করেছে।
শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি মনে করিয়ে দেন, সংবিধানের বন্দিদের সঙ্গে মানবিক ব্যবহারের কথা বলা আছে। তাঁদের মানসিক ও শারীরিক অবস্থার কথাও মনে রাখতে হবে। বৈষম্যের উদাহরণ হিসেবে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, প্রান্তিক মানুষকে নোংরা পরিশষ্কার করার কাজ দেওয়া ও উচ্চবর্ণের মানুষকে রান্নার কাজ দেওয়া সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫ লঙ্ঘন করে। আর প্রিজন ম্যানুয়াল সেই বৈষম্যকেই প্রতিষ্ঠা করেছে।
এসসি, এসটি ও উপজাতিগুলির বিরুদ্ধে বৈষম্যের ঘটনা বারবার ঘটছে বলে উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, আদালতের উচিত প্রান্তিক মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। শুধুমাত্র তফশিলি জাতি-উপজাতি নয়, পিছিয়ে পড়া মানুষ যাতে অসুবিধায় না পড়ে, সেদিকেও তৎপর থাকা প্রয়োজন বলে মনে করে শীর্ষ আদালত।