নয়া দিল্লি: বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলার ১১ জন আসামীর সাজা মকুবের সিদ্ধান্ত বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট। এর জন্য একটি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। ২০০২ সালের গুজরাট হিংসার সময় গণধর্ষণ করা হয়েছিল বিলকিস বানোকে। সেই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত ১১ জন আসামীকে গত বছর মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার। সরকারের সেই সিদ্ধান্তকে শীর্ষ আদালতে চ্যালেঞ্জ করেছেন বিলকিস বানো। বুধবার (২২ মার্চ), বিলকিস বানোর আইনজীবী অবিলম্বে এই মামলার শুনানির জন্য একটি নতুন বেঞ্চ গঠনের আবেদন করেন। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসিমহা এবং বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাঁর সেই আবেদন মেনে নেয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, “আজ সন্ধ্যাবেলাতেই আমি একটি বেঞ্চ গঠন করব।”
২৪ জানুয়ারি বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় ১১ জন দোষীর সাজা মকুবের সিন্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করেছিলেন বিলকিস বানো। কিন্তু, ওই দিন সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়নি। সংশ্লিষ্ট বিচারকরা পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চের অংশ হিসেবে অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। বিলকিস বানো তাঁর আবেদনে দোষীদের মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ করার পাশাপাশি, ২০২২ সালের ১৩ মে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ পুনর্বিবেচনা করার জন্যও একটি পৃথক আবেদন দাখিল করেছিলেন। ওই আদেশেই, শীর্ষ আদালত গুজরাট সরকারকে বিলকিস বানো মামলার দোষীদের মেয়াদপূর্তির আগে সাজামুক্তির আবেদন বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর আগেও এই আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছিলেন বিলকিস বানো। গত ডিসেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। এবার আবার নতুন করে সেই আবেদন করা হল।
২০০২ সালের গুজরাট হিংসার সময় বিলকিস বানোর বয়স ছিল মাত্র ২১। সাড়ে তিন বছরের মেয়ে এবং পরিবারের অন্য ১৫ সদস্যের সঙ্গে তিনি তাদের গ্রাম থেকে পালিয়ে ছাপারবাদ জেলায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। ৩ মার্চ কাস্তে, তলোয়ার ও লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রায় ৩০ জন বিলকিস এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালিয়েছিল। হামলাকারীদের মধ্যে মুক্তিপ্রাপ্ত ১১ জন আসামীও ছিল। বিলকিস, তাঁর মা এবং আরও পরিবারের আরও তিন মহিলাকে গণধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ন করা হয়। শুধুমাত্র বিলকিস, তাঁর পরিবারের এক পুরুষ সদস্য এবং এক তিন বছর বয়সী শিশু প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। ঘটনার তিন ঘন্টা পরে বিলকিসের জ্ঞান ফিরেছিল। আদিবাসী মহিলাদের কাছ থেকে কাপড় ধার করে এক হোম গার্ডের সাহায্যে লিমখেদা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বিলকিসকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল।