নয়া দিল্লি: আদানি ইস্যুতে (Adani Issue) তদন্তের দাবিতে সোচ্চার তৃণমূল। দিল্লিতে ইডি ও সিবিআই দফতরে ধরনা প্রদর্শন করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা। আদানি কাণ্ডে তদন্তের দাবিতে অনড় তৃণমূল সহ একাধিক বিরোধী দল। প্রথম থেকেই আদানি ইস্যুতে তদন্তের দাবি তুলেছিলেন কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধীরা। বিরোধীদের এই দাবিতে সংসদের চলতি অধিবেশনে বারবার পণ্ড হয়েছে। বৃহস্পতিবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আর অধিবেশন মুলতুবি হতেই আলাদ বৈঠক করে এই বিক্ষোভ-প্রতিবাদের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করা হয়। আজ দিল্লিতে আদানি ইস্যুতে তৃণমূলের ‘একলা চলো’ অবস্থানই স্পষ্ট হল।
সকাল ১১ টায় অধিবেশন শুরুতে হতেই আদানি কাণ্ডে জেপিসির দাবি করতে থাকেন বিরোধীরা। এদিকে শাসক দলের সাংসদরাও রাহুলের ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে অনড় থাকেন। এই শাসক ও বিরোধীদের স্লোগানের মাঝেই দুপুর ২ টো পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় রাজ্যসভা ও লোকসভার অধিবেশন। এর মধ্যেই জেপিসি তদন্তের দাবি নিয়ে রাজধানীতে ইডি দফতরে ধরনা প্রদর্শন করছেন তৃণমূল সাংসদরা। রাজধানীতে ফের একবার আন্দোলনের চড়া সুর তুলল তৃণমূল। শুধু ইডি দফতরই নয়, তদন্তের দাবি নিয়ে সংসদ ভবনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের দফতরেও হাজির হয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রীর দফতরে গিয়ে ‘অ্যারেস্ট আদানি’ লেখা টুপি দিয়ে প্রতীকী প্রতিবাদ তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদদের।
সূত্রের খবর, সংসদের অধিবেশন মুলতুবি হওয়ার পরই স্ট্র্যাটেজি বৈঠকে বসেন তৃণমূলের সাংসদরা। সেই বৈঠকেই ঠিক হয় আজ রাজধানীর আবহাওয়া কীভাবে গরম রাখবেন তৃণমূল সাংসদরা। পরিকল্পনা অনুযায়ীই দুটি দলে ভাগ হয়ে যান তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের নেতৃত্বে একটি দল সংসদ ভবনে নির্মলা সীতারামনের অফিসে হাজির হয়। সেখানে ‘অ্য়ারেস্ট আদানি’ লেখা টুপি দিতে যান তাঁরা। অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদ দোলা সেনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি দল ইডির ডিরেক্টরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায়। সেখানে আদানির গ্রেফতারের দাবি জানান তাঁরা। তবে আগাম অনুমতি না থাকায় তাঁদের গেটেই আটকে দেওয়া হয়। সিআরপিএফ-র সঙ্গে বচসার পর তৃণমূল প্রতিনিধিদের হাতে লেখা একটি চিঠি ডিরেক্টরের কাছে পৌঁছে যায়। তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “আদানিকে বাঁচানোর যে প্রচেষ্টা চলছে এবং ১ লক্ষ ২০ কোটি টাকার যে দুর্নীতি তার জন্য আদানিকে গ্রেফতার করা হোক। দেশের মানুষ বাঁচুক। LIC, SBI বাঁচুক। এইটুকু দাবি ছিল আমাদের। একটি টুপিতে লেখা ছিল, গ্রেফতার আদানি। আর তাতে আমাদের সাংসদদের স্বাক্ষর করা ছিল। সেটা আর একটা আমরা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা দিতে আমাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। ৫ জন সাংসদ রাস্তায় ৪০ মিনিটের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিল। ইডি-র পক্ষ থেকে অ্যাডমিন এসে কথা বলেছে। ভিতরে ঢুকতে দেয়নি।”
এদিকে এই দুই প্রতিবাদ থেকেই একটি ছবি স্পষ্ট। তৃণমূলের ‘একলা চলো’ অবস্থান। এই অধিবেশনের প্রথম দিকেও বিভিন্ন ইস্যুতে একাই প্রতিবাদ, ধরনা দিতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। এমনকী মল্লিকার্জুন খাড়্গের নেতৃত্বে বিরোধীদের বৈঠকেও গরহাজির থেকেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এর থেকে স্পষ্ট জাতীয় রাজনীতিতে তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে আসতে চাইছে তৃণমূল। ঘাসফুল শিবির দাবি করেছে, সাংসদ সংখ্যার নিরিখে তৃতীয় বৃহত্তম দল তৃণমূল কংগ্রেস।