Kunal Ghosh: ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানের বিরোধিতা, কুণাল ঘোষের জেরা শুরু করল ত্রিপুরা পুলিশ
Tripura, Kunal Ghosh, তৃতীয় বারের জন্য বাংলার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সাফ জানিয়েছিলেন, 'এবার লক্ষ্য দিল্লি'। সেইমত তৃণমূলের (TMC) আগামি দিনের প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে ত্রিপুরার নাম চূড়ান্ত করেন মমতা অভিষেকরা।
আগরতলা: কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) জেরা শুরু করল ত্রিপুরা পুলিশ (Tripura Police)। উত্তর পূর্বের এই বাঙালি রাজ্য নিয়ে তৃণমূল বিজেপি দ্বৈরথে আগেই সরগরম হয়েছিল জাতীয় রাজনীতি। তারমধ্যেই কুণাল ঘোষের জেরাকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কাল ত্রিপুরার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কুণাল বলেছিলেন, “বিজেপি একেবারে কোণঠাসা। ওরা ভয় পেয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের নেতাদের হামলা-মামলা এসব দিয়ে ব্যতিব্যস্ত করার চক্রান্ত করছে ওরা। আবার তিনটে মামলা দিয়েছে তাই। ওরা রাম রাজ্য বলতে পারে। আমি সীতার অগ্নিপরীক্ষা, সীতার পাতালপ্রবেশ বলতে পারব না। ওরা মামলা দিচ্ছে। ত্রিপুরার বিভিন্ন থানায় ঘুরে ঘুরে মামলা দিচ্ছে। আমারই ভালো। ত্রিপুরা অত্যন্ত সুন্দর রাজ্য। ওখানকার অনেক জায়গায় আমার ঘোরা হয়নি। এবার ঘুরব।”
জানা গিয়েছে, এদিন একসঙ্গে কুণালকে জেরা করছে চার থানার পুলিশ। আগরতলা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে উদয়পুরের কাছে বাগমা ফাঁড়িতে পুলিশের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা চলছে। রয়েছেন ওমপি, বীরনগর, আর কে পুর ও কাঁকড়াবন থানার তদন্তকারী অফিসাররা। তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদের জেরা উপলক্ষে ফাঁড়ি ঘিরে বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ত্রিপুরা পুলিশের জেরা মুখে কুণাল ঘোষ। আগেরবার পুলিশের জেরা শেষ হওয়ার পরই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন কুণাল। সূত্রের খবর, তদন্তকারী আধিকারিকরা কুণালের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন কেন তিনি ভাষণে সীতার পাতালপ্রবেশ টেনেছেন? এটা ধর্মের বিষয়। জবাাবে কুণাল বলেন, বিজেপি কেন ‘জয় শ্রী রাম’ বলে তৃণমূলের উপর হামলা করছে ? কেন রামরাজ্য বলছে? ওরা রাম বললে আমি কেন মা সীতার অপমান ও পাতালপ্রবেশ বলতে পারব না?
তদন্তকারী আধিকারিকদের কাছে কুণালের দাবি, “হয় রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহার বন্ধ হোক। অথবা পুলিশ বলে দিক রামায়ণের কোন কোন অংশ ব্যবহার করা যাবে কিংবা যাবে না।” জানা গিয়েছে, কুণাল এদিন বাল্মীকি রামায়ণসহ, রামায়ণ গবেষণার ছটি বই এবং আন্তর্জাতিক গবেষণার নথি নিয়ে যান। তিনি বলেন, “আমি বিশেষজ্ঞদের লেখার বাইরে কোনো কথা বলিনি। তাই মহাকাব্যের উপর ভিত্তি করে কোনো অভিযোগ হতে পারে না। এটা বিজেপির রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা।” জানা গিয়েছে, রামায়ণের সংশ্লিষ্ট অংশ নিয়ে একটি নোটও পুলিশ অফিসারদের দেন কুণাল।
উল্লেখ্য, তৃতীয় বারের জন্য বাংলার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সাফ জানিয়েছিলেন, ‘এবার লক্ষ্য দিল্লি’। সেইমত তৃণমূলের (TMC) আগামি দিনের প্রাথমিক লক্ষ্য হিসেবে ত্রিপুরার নাম চূড়ান্ত করেন মমতা অভিষেকরা। ত্রিপুরায় তৃণমূলের প্রবেশের পর থেকেই লাগাতার বিজেপির সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন দলের নেতা কর্মীরা। মমতার দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ত্রিপুরা বিজেপির (BJP) অনেক বিধায়ক নেতা তৃণমূলে আসার জন্য পা বাড়িয়ে রয়েছেন। বিজেপি তৃণমূল এই চাপান উতরের মধ্যেই, গতকাল পুরসভা নির্বাচন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রায়ে মুখ পুড়েছে বিপ্লব দেব (Biplab Deb) প্রশাসনের। বিরোধী দলের সব প্রার্থীকেই নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। মনে করা হচ্ছে সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের পর কিছুটা ব্যাকফুটে রয়েছে ত্রিপুরা বিজেপি। সেই দিক থেকে কুণাল ঘোষের এই জেরা ঘিরে নানা রকমের জল্পনা শুরু হয়েছে। কুণাল জেরা পর্ব আগামী দিনে কোন দিকে মোড় নেয় সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।
আরও পড়ুন Sitai BSF Firing: ‘ভারতীয়দের ওপরেই জুলুমবাজি করে বিএসএফ’, সিতাইকাণ্ডে কড়া প্রতিক্রিয়া উদয়নের