Sitai BSF Firing: ‘ভারতীয়দের ওপরেই জুলুমবাজি করে বিএসএফ’, সিতাইকাণ্ডে কড়া প্রতিক্রিয়া উদয়নের
Sitai BSF Firing: "আমরা যারা সীমান্ত এলাকায় ঘোরাঘুরি করি, আমরা জানি। আমাদের পর্যন্তও ছাড়ে না ওরা। গাড়ি আটকে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করে। সাধারণ মানুষও ওপরেও ওদের অত্যাচার বাড়বে।"
সিতাইয়ের ঘটনায় বিধায়ক উদয়ন গুহ বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “ভারতীয় সীমান্তের ১৫০ গজ ভিতরে কাঁটা তারের বেডা়। ভারত তার নিজের জায়গা ছেড়ে কাঁটা তারের বেড়া দিচ্ছে। যত জুলুম ভারতীয়দের ওপর। বিএসএফের কী জুলুম আমরা জানি। আমরা যারা সীমান্ত এলাকায় ঘোরাঘুরি করি, আমরা জানি। আমাদের পর্যন্তও ছাড়ে না ওরা। গাড়ি আটকে নানা প্রশ্ন করে বিব্রত করে। সাধারণ মানুষও ওপরেও ওদের অত্যাচার বাড়বে।” সিতাইয়ের ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জবাবদিহি করা প্রয়োজন বলে দাবি তুলেছেন তিনি।
এদিকে, সিতাইয়ের ঘটনার নেপথ্যে কারণ কী, তা জানাচ্ছেন এলাকারই বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার রাত ১ টা নাগাদ আচমকাই শুরু হয়েছিল গুলিবর্ষণ। বাংলাদেশের ওপার থেকেই নাকি কয়েকজন এপারে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁদেরই মধ্যে কয়েকজন হামলা চালিয়েছিলেন বিএসএফের ওপর। বিএসএফ জওয়ানদের দিকে ইটবৃষ্টি হচ্ছিল। লাঠি ও বাঁশ নিয়েও চলে হামলা। এরপর পাল্টা গুলি চালায় বিএসএফও। সিতাই-এ বিএসএফের গুলি চালনায় মৃত্যুর ঘটনার নেপথ্যে আসল কারণ ব্যাখ্যা করেন গ্রামবাসীরাই। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, আগে হামলা হয়েছে ওপার থেকে। বিএসএফের ওপর হামলা হয়েছে আগে। প্রতিরোধ গড়তেই ‘গুলি’।
সিতাইয়ের এক বাসিন্দার কথায়, “রাত ১ টা নাগাদ বাংলাদেশের থেকে আসা দুষ্কৃতীরা বিএসএফ র ওপর আক্রমণ করে । প্রচুর মানুষ বাংলাদেশের দিক থেকে আসার চেষ্টা করে। ওই এলাকা দিয়ে গরু পাচার চলছিল । হটাৎ খুব চিৎকার হয়। চিৎকার শুনে এপারের লোকেরা বেরিয়ে দেখেন, বিএসএফকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হচ্ছে। ও বাঁশ ও লাঠি নিয়ে আক্রমণ করছে এরপর গুলির শব্দ শোনা যায়।”
সিতাই (Sitai) সীমান্তে বিএসএফ (BSF) -এর গুলি চালানোর ঘটনায় ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। কোচবিহার সীমান্ত গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের আওতায় পড়ে। তাই সিতাই সীমান্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএসএফ কর্তার রিপোর্ট তলব গুয়াহাটির বিএসএফ-এর আইজির। কী ঘটনা ঘটেছিল? কতজন জড়ো হয়েছিল? গুলি চালানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কিনা? সহ ৬টি বিষয়ে জানতে চেয়ে রিপোর্ট চাইলেন গুয়াহাটির আইজি। গুলি চালানোর কারণ উল্লেখ করে দ্রুত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কোচবিহারের সিতাই সীমান্তে বিএসএফের-এর গুলি। প্রথমে ২ বাংলাদেশি ও ১ ভারতীয়র মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। পরে আরও এক জনের দেহ উদ্ধার হয়। গরু পাচারের অভিযোগে গুলি, দাবি বিএসএফেরর। সাতভাণ্ডারীতে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। তবে বিএসএফ বলছে, মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
অসমর্থিত সূত্রে মোট চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। এক জনের দেহ পড়ে রয়েছে সীমান্তের কাঁটা তারের এপারে। অপর তিন জনের দেহ ওপারে পড়ে। গুলি চালনার ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তবে বিএসএফের বক্তব্য, চোরাপথে গরু পাচার চলছিল। পাচারকারীদের ধরতেই গুলি। এখনও পর্যন্ত তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। বিএসএফের বক্তব্যও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিএসএফ এখনও তাদের বক্তব্য অফিসিয়ালি জানায়নি। বিএসএফের অফিসিয়ালি বক্তব্য পাওয়ার পরই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। পুলিশের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হবে। সমান্তরাল ভাবে তদন্ত হবে পুলিশের তরফেও।
বৃহস্পতিবার সীমান্তে গুলি চালনার অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সীমান্তবর্তী গ্রাম। জানা যায়, গুলিতে মৃত্যু হয়েছে চার জনের। তাঁদের মধ্যে এক জন ভারতীয় রয়েছে বলেও খবর মেলে। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
তবে বিএসএফ গুলি চালনার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে গরু পাচারকারী তত্ত্বই খাঁড়া করেছে। কেন গুলি চালাতে হল? কেন তাঁদের ধাওয়া করে ধরা গেল না? আদৌ নিহতরা কি গরু পাচারকারী? এসব একাধিক প্রশ্ন উঠছে। বিএসএফের ওপরেও কি হামলা হয়েছিল? প্রতিরোধ গড়তেই কি গুলি? প্রশ্ন উঠছে সেসবও। তবে বিএসএফের সরকারি বক্তব্যের পরই আসল বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: তৃণমূলে একজনই পুরুষ রয়েছে, বাকি সব মহিলা: দিলীপ
আরও পড়়ুন: Bally Municipality: সাধারণের স্বার্থেই হাওড়া থেকে বিযুক্তিকরণের পথে বালি, বিধানসভায় প্রস্তাব আনল সরকার