Jadavpur University VIDEO: আচমকা স্যরকে গাঁদা ফুলের মালা পরাতে ছুটল পড়ুয়া, ‘রেগে লাল’ অধ্যাপক! হচ্ছেটা কী যাদবপুরে?

সুমন মহাপাত্র | Edited By: জয়দীপ দাস

Sep 23, 2024 | 10:56 PM

Jadavpur University: কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতিম রায়। খানিক ক্ষোভ খানিক হুঁশিয়ারির সুরেই বলেন, “এটা শিক্ষাক্ষেত্রে থ্রেট কালচারের সমান। শিক্ষককে এভাবে হেনস্থা কোনওভাবেই মানা যায় না।”

Jadavpur University VIDEO: আচমকা স্যরকে গাঁদা ফুলের মালা পরাতে ছুটল পড়ুয়া, ‘রেগে লাল’ অধ্যাপক! হচ্ছেটা কী যাদবপুরে?
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিয়ো
Image Credit source: Facebook

Follow Us

কলকাতা: ‘ওয়েলকাম স্যর! এটা আপনার জন্য।’ হাতে গাঁদা ফুলের মালা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এক ছাত্র। সামনে তখন প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান। ছাত্রের রূপ দেখে তো তিনি হতবাক! মুখে বিস্ময়! শুধু একবার বললেন, ‘এ আবার কী!’ এদিন দুপুরে এই ছবিই দেখা গেল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডাল্ট কন্টিনিউয়িং এডুকেশন অ্য়ান্ড এক্সটেনশন বিভাগে। এখানেই চলে দু’বছরের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপনের স্নাতকোত্তরের কোর্স। অভিযোগ, যত গণ্ডগোল নাকি এখানেই। ইতিমধ্যেই ঘটনার ভিডিয়ো শোরগোল ফেলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর সিংহভাগ অভিযোগের তির নম্বরের মূল্যায়ন নিয়ে। বাদ যাচ্ছেন না অন্যান্য অধ্যাপকেরাও। উঠেছে নম্বর কারচুপি থেকে অতিথি অধ্যাপক নিয়োগে অনিয়ম-সহ একগুচ্ছ অভিযোগ। তা নিয়েই বেশ কিছুদিন ধরে চাপানউতোর চলছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে। আন্দোলনেও নামতে দেখা গিয়েছে বিভাগের অনেক পড়ুয়াকেই। অবস্থান-অনশনের ছবিও দেখা যায়। যদিও ছাত্রদের লাগাতার অভিযোগ নিশানায় যে অধ্যাপক তাঁর পাশেই দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটাকে। কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতিম রায়। খানিক ক্ষোভ খানিক হুঁশিয়ারির সুরেই বলেন, “এটা শিক্ষাক্ষেত্রে থ্রেট কালচারের সমান। শিক্ষককে এভাবে হেনস্থা কোনওভাবেই মানা যায় না। এরকম চলতে থাকলে নিজেদের আমরা মূল্যায়ন পদ্ধতি থেকে সরিয়ে নেব।” 

অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের তরফে বিভাগেরই আন্দোলনকারী শ্রে বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “সান্ত্বন স্য়র তো আমাদের ঠিক মতো ক্লাসই নেন না। এই বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে একাধিকবার মিটিং হয়েছে। কখনও আসেননি। আজ অনেকদিন পর এসেছেন। তাই ওনাকে আমরা মালা দিয়ে স্বাগত জানানোর চেষ্টা করেছি। অন্যান্য শিক্ষকদের থেকে ওনার সঙ্গে তো আমাদের তো আলাদা একটা টার্মস আছে। তাই এই ব্যবস্থা।” যদিও ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সান্ত্বন বাবু। স্পষ্টই বলছেন, “আমার কোনও ব্যক্তি ছাত্রের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। অধ্যাপক হিসাবে এটা রুচি বিরুদ্ধ লেগেছে।” 

মূলত কোন অভিযোগ তুলছে পড়ুয়ারা? 

এই খবরটিও পড়ুন

কয়েকদিন আগে বিভাগেই সমস্যা সমাধানের দাবিতে বিভাগীয় প্রধানের সামনেই অবস্থান বসে পড়ুয়ারা। সেখান থেকেই এক আন্দোলনকারী বলেন, “এই বিভাগে নম্বরের দুর্নীতি নিয়ে আমরা একাধিকবার অধ্যাপকদের জানিয়েছি। কিন্তু ওনারা শুধু দেখব দেখছি বলে কাটিয়ে দিয়েছি। আমাদের চতুর্থ সেমিস্টারের নম্বরেও অনেক অস্বচ্ছতা দেখা গিয়েছে। কিছু শিক্ষকদের পছন্দের পড়ুয়ারা শুধু বেশি নম্বর পাচ্ছে, বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। অতিথি অধ্যাপক নিয়োগের ক্ষেত্রেও অনেক দুর্নীতি দেখা গিয়েছে।” পাশে বসেই আর এক পড়ুয়া শুভম গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এই পক্ষপাতিত্ব শুধু তাঁদের সঙ্গে হয় যাঁরা ওনার রাজনৈতিক বদন্যতা মানতে চান না, যাঁরা ওনার দল করবে না, যাঁরা ওনার কাস্তে-হাতুড়ির পতাকা নিয়ে হাঁটবে না, শুধু তাঁদের সঙ্গে বেছে বেছে এরকম করা হচ্ছে।” 

যদিও আন্দোলনের আবহে সামগ্রিক ঘটনা নিয়ে বৈঠকেও বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারপরই অতিথি অধ্য়াপক নিয়োগের নতুন একটি বিজ্ঞপ্তিও সামনে আসে। আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, বৈঠকের পরেই নম্বর রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিভাগ। একজন অধ্যাপককেও শোকজ করা হয়েছে। শ্রে বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “অনেক কিছুই দেখার কথা বলা হয়েছিল। প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সব কিছু বাস্তবায়ন এখনও হয়নি।” 

শুভম বলছেন, “সান্ত্বন চট্টোপাধ্যায় আসলে একটা সিন্ডিকেট চালাচ্ছেন। দীর্ঘদিন থেকে তিনি এটা করছেন। উনি আসলে জুটার ক্ষমতা বলেই এটা করছেন। নিজের পছন্দের লোকেদের অতিথি অধ্যাপক হিসাবে নিয়োগ করছেন। এই জুটার কাজ-কারবার কিছুদিন আগেই সামনে এসেছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে পিএইচডি কেলেঙ্কারির কথা জানা গিয়েছে। এখন মাস কমিউনিকেশনে এসব হচ্ছে। কিন্তু আর কতদিন? এরপর কী?” যদিও বিবৃতি দিয়ে জুটা বলছে, ‘এই ধরনের ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী -শিক্ষক সম্পর্কের ঐতিহ্যের পরিপন্থী।মুষ্টিমেয় ছাত্রছাত্রী সামাজিক মাধ্যমে কুৎসা,ভয় প্রদর্শন সহ যে ধরনের  অপরাধমূলক ভাষা ব্যবহার করছেন তা  ‘থ্রেট কালচার’কেই প্রমোট করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশকে ব্যাহত করে।’ একইসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অধ্যাপকদের মতে, নম্বর নিয়ে ক্ষোভ থাকলে তা রিভিউ করাই যায়। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ অতিথি অধ্যাপকের দিকে। ইতিমধ্যেই বিভাগ ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে অনেক পদক্ষেপ করেছে। 

Next Article