Anubrata Mondal: মমতার সঙ্গে সাক্ষাতের পর কেষ্টর ‘প্রত্যাবর্তন’! নাকি সবটাই ভারসাম্যের অঙ্ক কষল তৃণমূল
Anubrata Mondal-TMC: কলকাতার যে শীর্ষ নেতৃত্ব একসময় কেষ্টর চোখ দিয়েই বীরভূম দেখত, তারাই সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, এসব করা যাবে না। একচ্ছত্র ক্ষমতা ধাক্কা খায়। তারপর এল ফোন-কাণ্ড। চূড়ান্ত নিন্দার মুখে পড়ে লিখিত ক্ষমাও চাইতে হল বীরভূমের একসময়ের বেতাজ বাদশাকে।

কলকাতা: জেলার কোর কমিটির আহবায়ক হলেন অনুব্রত মণ্ডল। নেত্রীর সঙ্গেও ১০ মিনিটের একান্ত বৈঠক হল। তিহাড়-পর্বের পর এই প্রথমবার। নিঃসন্দেহে এই কর্মসূচি কোণঠাসা অনুব্রতকে অক্সিজেন যোগাবে। তাঁর অনুগামীদের জন্যও নেতার এই গুরুত্ব ফিরে পাওয়া বাড়তি উৎসাহ যোগ করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সম্প্রতি ওসি-কে ফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার অঅভিযোগ সামনে আসার পর আরও বেশি করে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন অনুব্রত। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, তিহাড় জেল থেকে ফিরেই কেষ্ট উপলব্ধি করেছিলেন, তাঁর মাটি হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। নতুন পরিবেশ, নতুন নেতৃত্ব। তিনিও আছেন, তবে আগের মতো নয়। জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টাও করেছেন তিনি। পুরনো ঢঙে একা একা সিদ্ধান্ত নিয়ে বৈঠক ডাকতে গিয়ে ধাক্কাও খেয়েছেন।
কলকাতার যে শীর্ষ নেতৃত্ব একসময় কেষ্টর চোখ দিয়েই বীরভূম দেখত, তারাই সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, এসব করা যাবে না। একচ্ছত্র ক্ষমতা ধাক্কা খায়। তারপর এল ফোন-কাণ্ড। চূড়ান্ত নিন্দার মুখে পড়ে লিখিত ক্ষমাও চাইতে হল বীরভূমের একসময়ের বেতাজ বাদশাকে। তারপর থেকেই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন অনুব্রত।
বাড়ি থেকে বোলপুর অফিস, আবার বাড়ি। তাও আবার কয়েক ঘণ্টার জন্য। এই হয়ে দাঁড়িয়েছিল রুটিন। এমনকী ২১ জুলাইয়ের সভায় প্রবেশ পর্যন্ত করতে পারেননি অনুব্রত। ভোটের মুখে তাই এই বাড়তি দায়িত্ব অক্সিজেন দেবে কেষ্ট অনুগামীদের। অক্সিজেন পাবেন কেষ্টও। তবে আদৌ এটা প্রত্যাবর্তন? নাকি গোটাটাই ভোটের মুখে ভারসাম্যের রাজনীতি? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
ভাল করে দেখতে গেলে বোঝা যাবে, আদতে একটি আলঙ্কারিক পদ পেয়েছেন অনুব্রত। এই পদ পেলেও কোনও সিদ্ধান্ত আগের মতো একা নিতে পারবেন না তিনি। দলের কোর কমিটির অন্যান্য সদস্যদের হাতে দুটো করে বিধানসভা অঞ্চলের দায়িত্ব থাকলেও অনুব্রতর তেমন কোনও দায়িত্ব নেই। ফলে পুরো মাত্রায় প্রত্যাবর্তন হয়েছে, তা বলা যাচ্ছে না। কিন্তু অবশ্যই অনেকটা দায়িত্ব ফিরে পেলেন। বলা চলে ৫০ শতাংশ মতো। বাকিটা অধরাই রইল।
অনুব্রতকে আবারও গুরুত্ব দেওয়ার পিছনে তৃণমূলের ভারসাম্যের নীতি গুরুত্ব পাচ্ছে, এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই বীরভূমের প্রতি প্রান্তে অনুব্রতর অনুগামী আছে। তিনি একজন দক্ষ সংগঠক, এ ব্যাপারেও সন্দেহের অবকাশ নেই। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো অনুব্রত অনুগামীদের মধ্যে একটা হতাশা তৈরি করছিল। ভোটের মুখে এই হতাশা দূরত্ব তৈরি করতে পারে, দূরত্ব থেকে তৈরি হতে পারে বিভাজনও। আর এই বিভাজনের সুফল পেতে পারে বিজেপি। এইসব অঙ্ক কষেই অনুব্রতকে গুরুত্ব দিয়ে জেলা সংগঠনে ভারসাম্য মজবুত করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনটাই পর্যবেক্ষণ রাজনৈতিক মহলের।
