Anubrata Mondal In SSKM: পাঁচ দিন ধরে SSKM-এ পড়ে, এখনও হাসপাতালে গিয়ে দলের ‘বাহুবলী’ নেতার খোঁজই নিলেন না দলের কোনও কেউ
Anubrata Mondal In SSKM: ফাঁকা চত্বর দেখে বোঝার উপায় নেই, তৃণমূলের সব চেয়ে বেশি আলোচিত চরিত্র হাসপাতালে ভর্তি । কিন্তু কেন এমন হল?
কলকাতা: পাঁচ দিন ধরে এসএসকেএম-এর উডবার্নে ভর্তি রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। গুরুতর অসুস্থ হয়ে সিবিআই-এর দফতরে হাজিরা দিতে যাননি তৃণমূলের এই প্রবল প্রতাপশালী নেতা। অথচ লক্ষণীয় এই যে তৃণমূলের শীর্ষ নেতা থেকে সাধারণ সমর্থক, কারও দেখা নেই হাসপাতাল চত্বরে । বিগত দিনে চার নেতা মন্ত্রী জেল হেফাজতে ভর্তি ছিলেন উড বার্নে । ভিজিটিং আওয়ার্সে তৃণমূল কর্মী নেতাদের ভিড় লেগেই থাকত হাসপাতাল চত্বরে । অনুব্রতর বেলায় ছবিটা একেবারেই অন্য । ফাঁকা চত্বর দেখে বোঝার উপায় নেই, তৃণমূলের সব চেয়ে বেশি আলোচিত চরিত্র হাসপাতালে ভর্তি । কিন্তু কেন এমন হল?
অনুব্রত মানেই বাক্য বোমায় বিখ্যাত। আর তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় । এহেন সেলিব্রিটি এবং বিতর্কিত জেলা সভাপতি কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি । এতটাই গুরুতর যে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সিবিআই অফিসে হাজিরা পর্যন্ত দিতে যেতে পারছেন না । এহেন অসুস্থ নেতাকে দেখতে নেতা কর্মী তো দূরস্থান , কাক পক্ষী পর্যন্ত নেই উড বার্ন চত্বরে । এ কী দাপুটে নেতাকে এড়িয়ে চলা? নাকি দলের নির্দেশেই সুচিন্তিত ভাবেই ভিড় এড়াছেন তৃণমূল নেতা কর্মীরা?
বিগত দিনে নারদ মামলায় রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বিধায়করা ভর্তি ছিলেন উড বার্নে । নেতাদের দেখতে প্রতিদিন ভিড় । তা নিয়ে বিতর্কও কিছু কম হয়নি। নেতা মন্ত্রীরা আদৌ কতটা অসুস্থ , তা নিয়েও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছিলেন । উড বার্ন করিডোরে কোনও কোনও প্রভাবশালীকে। প্রয়াত এক নেতার ঘরে অন্যান্য দের দল বেঁধে ঢুকতেও দেখা গিয়েছে। এসব নিয়ে কম হইচই হয়নি মিডিয়ায়। তাই প্রথম থেকে অনুব্রত র বিষয়ে যাবতীয় বিতর্ক এড়ানোর একটা সুচিন্তিত প্রয়াস ছিলই । তিন তলার কোণের দিকে একটা কেবিনে তাকে রাখা হয়েছে, যেখানে বাইরে থেকে ছবি পাওয়া দুষ্কর।
বিগত দিনে অসুস্থতা ঠিক কতটা তা নিয়ে ওঠা বিতর্ক এবার যাতে না ওঠে তা নিয়েও সতর্ক রয়েছে তৃণমূল । তাই অতি উৎসাহী র ভিড় কম। অনুব্রত যে জেলার সংগঠনের কর্তা , যেখানে তার বিপুল অনুগামী, সেই জেলায় রামপুরহাট কাণ্ডের পর একটা রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে । ফলে এলাকা ছেড়ে জেলার সেলিব্রিটি নেতাকে দেখতে কলকাতায় আসতে পারছেন না কেউই।
এসবের উর্ধ্বে আরও একটা গভীর কারণ আছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল । অনুব্রতর সিবিআই অফিসে না গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘটনা নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ মন্তব্য করেছিলেন ” আমাকে যখন ডাকা হয়েছিল, আমি গিয়েছিলাম। স্বয়ং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাজিরা এড়িয়ে যান নি।” এই মন্তব্য ঘিরে গুঞ্জন ওঠে তবে কি সিবিআই দফতরে না গিয়ে অনুব্রতর হাসপাতালে ভর্তির ঘটনাকে ভাল চোখে দেখছে না দলেরই একাংশ? এখানেই শেষ না। গত ৭ এপ্রিল বালিগঞ্জ উপ নির্বাচনে প্রচারের শেষে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ” কলকাতার কেস দিল্লিতে ডেকেছে । আমি ইডি দপ্তরে গেছি । তদন্তে সহযোগিতা করেছি।”
দলের সেকেন্ড ইন কমান্ডের এই বক্তব্য প্রশ্ন তুলছে , অনুব্রতর সিবিআই দফতরে না গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া প্রমাণ করে স্নায়ু যুদ্ধে যথেষ্ট চাপে আছেন দাপুটে নেতা। আর দলের অন্দরেই এসব নাপসন্দ শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের। একথা বুঝতে পেরেই কি হাসপাতাল চত্বর এড়াছেন তৃণমূলের ছোট বড় নেতা কর্মীরা? প্রশ্ন কিন্তু উঠছেই।